নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের তিনজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১০। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত একটি একনলা বন্দুক, তিনটি গুলি, একটি সুইচ গিয়ার চাকু, দুইটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র, পাঁচটি মোবাইল ফোন ও নগদ দুই হাজার ১৮০ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- ইছা খাঁ ওরফে আব্দুর রাজ্জাক, সৈয়দ জসিম উদ্দিন ও নুর ইসলাম। বৃহস্পতিবার বিকালে র্যাব-১০ এর সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
র্যাব জানায়, বুধবার র্যাব-১০ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যাত্রাবাড়ী থানার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সামনে রায়েরবাগ এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান চালায়। অভিযানে ডাকাতির প্রস্তÍতির সময় ইছা খাঁ ওরফে আব্দুর রাজ্জাক, সৈয়দ জসিম উদ্দিন ও নুর ইসলাম নামে তিন আন্তঃজেলা ডাকাতদলের সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি একনলা বন্দুক, তিনটি গুলি, একটি সুইচ গিয়ার চাকু, দুইটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র, পাঁচটি মোবাইল ফোন ও নগদ দুই হাজার ১৮০ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, গ্রেপ্তার তিনজন আন্তঃজেলা ডাকাতদলের সক্রিয় সদস্য। তাদের মূল নেতৃত্বে রয়েছেন ইছা খাঁ ওরফে আব্দুর রাজ্জাক। তারা গত এক মাসে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, চাঁদপুর, পাটুয়াখালী ও কুড়িগ্রামে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে স্বর্ণালংকার, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ ডাকাতি করেছে।
এছাড়া তারা বড় বড় ব্যবসায়ীদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করত এবং ডাকাতির কাজে কেউ বাধা দিলে, বা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদেরকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দেওয়াসহ অস্ত্র দিয়ে হত্যা ও গুরুতর জখম করতো। এই ডাকাত দলের সদস্যরা প্রতি মাসে দুই থেকে তিনটি ডাকাতি করতো। র্যাব জানায়, এই চক্রটি ডাকাতির আগে স্থান নির্ধারণ করে বেশ কয়েকবার রেকি করতো। তারপর অস্ত্রশস্ত্র ও ডাকাতির প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নিয়ে তাদের নির্ধারিত স্থানে ডাকাতি করতো।
গ্রেপ্তার ডাকাত সর্দার আব্দুর রাজ্জাক কিশোরগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। তিনি অন্য পেশার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি চক্রের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল। তার নির্দেশে ওই ডাকাত দলের সব সদস্য একটি নির্দিষ্ট স্থানে উপস্থিত হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি নিতো। তার নেতৃত্বে এই ডাকাত চক্রটি উল্লেখিত এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বিদেশ থেকে আসা প্রবাসীদের বাড়িতে এবং বিভিন্ন মহাসড়কে গাড়ি থামিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ডাকাতি করে আসছিল। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলাসহ মোট চারটি মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তার জসিম বরগুনা জেলার বাসিন্দা। তিনি অন্য পেশার আড়ালে ডাকাত চক্রটির তথ্য সংগ্রহকারী ও দিকনির্দেশক হিসেবে কাজ করতেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলাসহ মোট পাঁচটি মামলা রয়েছে। এছাড়াও তিনি ২০১৩ সালের মগবাজারের চাঞ্চল্যকর বিদেশির বাড়িতে ডাকাতির সময় কেয়ারটেকার হত্যা মামলার আসামি। গ্রেপ্তার নুর ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার বাসিন্দা। তিনি অন্য পেশার আড়ালে আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে ডাকাতি চক্রের অন্যতম সদস্য হিসেবে কাজ করে আসছিল। নুর ইসলামের আশ্রয়স্থলে ডাকাতির সমস্ত পরিকল্পনা করা হতো এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সব অস্ত্র ও সরঞ্জামাদি তার দায়িত্বে তাদের গোপন আস্তানায় রাখা হতো।
যাত্রাবাড়ীতে অস্ত্রসহ তিন ডাকাত গ্রেপ্তার
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ