ঢাকা ০৯:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫

যমুনায় বিলীন দেড় হাজার বসতভিটা

  • আপডেট সময় : ১২:৩৬:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ জুলাই ২০২২
  • ১৪০ বার পড়া হয়েছে


টাঙ্গাইল সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরে যমুনা নদীতে আবারও পানি বাড়ায় ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে একে একে ভাঙছে বসতভিটা, ঘরবাড়িসহ ফসলি জমি। নিঃস্ব হচ্ছে নদী তীরবর্তী অসংখ্য পরিবার। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় ভাঙনরোধ সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এসব ভাঙনকবলিত মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে গোবিন্দাসী, নিকরাইল, অর্জুনা ও গাবসারায় যমুনার করালগ্রাসে প্রায় এক মাসের ব্যবধানে ১৫০০ ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। তার মধ্যে গোবিন্দাসীতে সাড়ে ৫০০, নিকরাইলে ২৫০, অর্জুনায় ৪০০ এবং গাবসারায় ৩০০ শতাধিক পরিবার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরেজমিনে গতকাল সোমবার সকালে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চিতুলাপাড়া এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, পানির তীব্র স্রোতে বসতভিটা ব্যাপকভাবে ভাঙছে। ভাঙনের মুখে পড়া লোকজন তাদের থাকার ঘরগুলো অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। আবার অনেকের ঘরবাড়িগুলো নিমিষেই বিলীন হচ্ছে। বসতভিটা হারানো মানুষগুলো আহাজারি করছে। ভাঙনের শিকার জহুরা বেগম বলেন, আমাদের গ্রামে প্রায় হাজারের ওপরে বাড়িঘর নদী গর্ভে চলে গেছে। আমরা এখন নিঃস্ব। আমাদের এখন থাকার মতো কোনো জায়গা-জমি নেই। ঘরে নেই খাওন। এ অবস্থায় সরকারিভাবে কোনো ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা পাইনি। ইনছান আলী বলেন, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে শত শত বাড়িঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এসব দেখার কেউ নেই। জনপ্রতিনিধিরা শুধু নৌকা দিয়ে দূর থেকে দেখে চলে যায়। ভাঙনরোধে তাদের কোনো উদ্যোগ নেই। ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। এদিকে অসংখ্য পরিবার বসতভিটা হারিয়ে আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। গোবিন্দাসী ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল হোসেন চকদার জানান, ইউনিয়নের কষ্টাপাড়া, খানুরবাড়ি, চিতুলিয়াপাড়া ও ভালকুটিয়ায় ভাঙনরোধে এমপি মহোদয়ের উদ্যোগে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। অর্জুনা ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল আলম খান মাহবুব জানান, চরাঞ্চলের বাসুদেবকোল ও তালতলাসহ বেশ কয়েকটি এলাকার প্রায় ৪শ ঘরবাড়ি নদী গর্ভে চলে গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ইশরাত জাহান জানান, ভাঙনের ব্যাপারে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। ভাঙনরোধে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ভুঞাপুরে ব্যাপকভাবে ভাঙন দেখা দেওয়ায় ভাঙনরোধে ৩০০ মিটারের মধ্যে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ভাঙনকবলিত এলাকাগুলোতে পর্যায়ক্রমে আরও জিও ব্যাগ ফেলা হবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

যমুনায় বিলীন দেড় হাজার বসতভিটা

আপডেট সময় : ১২:৩৬:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ জুলাই ২০২২


টাঙ্গাইল সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরে যমুনা নদীতে আবারও পানি বাড়ায় ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে একে একে ভাঙছে বসতভিটা, ঘরবাড়িসহ ফসলি জমি। নিঃস্ব হচ্ছে নদী তীরবর্তী অসংখ্য পরিবার। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় ভাঙনরোধ সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এসব ভাঙনকবলিত মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে গোবিন্দাসী, নিকরাইল, অর্জুনা ও গাবসারায় যমুনার করালগ্রাসে প্রায় এক মাসের ব্যবধানে ১৫০০ ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। তার মধ্যে গোবিন্দাসীতে সাড়ে ৫০০, নিকরাইলে ২৫০, অর্জুনায় ৪০০ এবং গাবসারায় ৩০০ শতাধিক পরিবার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরেজমিনে গতকাল সোমবার সকালে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চিতুলাপাড়া এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, পানির তীব্র স্রোতে বসতভিটা ব্যাপকভাবে ভাঙছে। ভাঙনের মুখে পড়া লোকজন তাদের থাকার ঘরগুলো অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। আবার অনেকের ঘরবাড়িগুলো নিমিষেই বিলীন হচ্ছে। বসতভিটা হারানো মানুষগুলো আহাজারি করছে। ভাঙনের শিকার জহুরা বেগম বলেন, আমাদের গ্রামে প্রায় হাজারের ওপরে বাড়িঘর নদী গর্ভে চলে গেছে। আমরা এখন নিঃস্ব। আমাদের এখন থাকার মতো কোনো জায়গা-জমি নেই। ঘরে নেই খাওন। এ অবস্থায় সরকারিভাবে কোনো ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা পাইনি। ইনছান আলী বলেন, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে শত শত বাড়িঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এসব দেখার কেউ নেই। জনপ্রতিনিধিরা শুধু নৌকা দিয়ে দূর থেকে দেখে চলে যায়। ভাঙনরোধে তাদের কোনো উদ্যোগ নেই। ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। এদিকে অসংখ্য পরিবার বসতভিটা হারিয়ে আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। গোবিন্দাসী ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল হোসেন চকদার জানান, ইউনিয়নের কষ্টাপাড়া, খানুরবাড়ি, চিতুলিয়াপাড়া ও ভালকুটিয়ায় ভাঙনরোধে এমপি মহোদয়ের উদ্যোগে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। অর্জুনা ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল আলম খান মাহবুব জানান, চরাঞ্চলের বাসুদেবকোল ও তালতলাসহ বেশ কয়েকটি এলাকার প্রায় ৪শ ঘরবাড়ি নদী গর্ভে চলে গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ইশরাত জাহান জানান, ভাঙনের ব্যাপারে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। ভাঙনরোধে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ভুঞাপুরে ব্যাপকভাবে ভাঙন দেখা দেওয়ায় ভাঙনরোধে ৩০০ মিটারের মধ্যে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ভাঙনকবলিত এলাকাগুলোতে পর্যায়ক্রমে আরও জিও ব্যাগ ফেলা হবে।