ঢাকা ০৩:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মৌলভীবাজার মুক্তদিবস পালিত

  • আপডেট সময় : ১২:৪৪:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২২
  • ১০৭ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজার সংবাদদাতা : মৌলভীবাজারের একটি ঐতিহাসিক দিন ৮ ডিসেম্বর। একাত্তরের এই দিনে পাক হানাদারবাহিনীকে হটিয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা মৌলভীবাজারকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করেন। মৌলভীবাজার শহর তথা জেলার সর্বত্র স্বাধীন বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা এই জেলার আকাশে উড়তে থাকে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় মৌলভীবাজার মুক্ত দিবসে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে পতাকা উত্তোলন ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে বিজয় মিছিল বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে এম সাইফুর রহমান অডিটরিয়ামে গিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ নেছার আহমদ, জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসান মোহাম্মদ নাসের রিকাবদার (অর্থ ও প্রশাসন), সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জামাল উদ্দিন সহ অন্যরা। বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন জানান, প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আজিজুর রহমান ছিলেন মুক্তিযুদ্ধে ৪ নম্বর সেক্টরের রাজনৈতিক সমন্বয়কারী। ডিসেম্বরের শুরুতে জেড ফোর্সের মুক্তিযোদ্ধারা মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় এই এলাকায় আক্রমণ আরও তীব্র করে। ৪ ডিসেম্বর জেলার কমলগঞ্জ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। ৫ ডিসেম্বর জেলার সর্বত্র শুরু হয় তীব্র আক্রমণ। জেলার চারদিক দিকে মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণে একের পর এক এলাকা শত্রুমুক্ত হতে থাকে। ৫ ও ৬ ডিসেম্বর দুই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা রাজনগর, শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া ও মুন্সীবাজার এলাকামুক্ত মহকুমা শহর অভিমুখে আসার জন্য অভিযান শুরু করে। ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর মিত্র ও মুক্তিবাহিনী শহর ঘেরাও করে। এখানে মহকুমা হেড কোয়ার্টার থাকার কারণে পাকবাহিনীর ব্রিগেড হেড কোয়ার্টার ছিল। জানা যায়, জেড ফোর্সের ১৭টি ইউনিটের মধ্যে আব্দুল জব্বার (কুলাউড়ার সাবেক এমপি) ও মুহিবের নেতৃত্বে ২টি ইউনিট কুলাউড়ার দিকে গেলেও বাকি ১৫ টি ইউনিট নিয়ে তারা মৌলভীবাজার শহরে ঢোকার চেষ্টা শুরু করেন। তুমুল যুদ্ধ আর অনেক হতাহতের পর ৭ ডিসেম্বরই মৌলভীবাজার পুরো মহকুমা এলাকা থেকে পাকবাহিনীকে হটিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা শহরে ঢুকে পড়েন। কিন্তু শহরের বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনী প্রচুর মাইনসহ অস্ত্র পুঁতে রাখায় রাস্তা থেকে এগুলো অপসারণ ও নিষ্ক্রিয় করার পর ৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার মুক্ত এলাকা ঘোষণা করা হয়। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, তৎকালীন মহকুমা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান ৮ ডিসেম্বর সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০টায় তৎকালীন মৌলভীবাজার মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান। তার সঙ্গে ছিলেন- মির্জা আজিজ আহমদ বেগ, সৈয়দ মহসীন আলীসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধারা।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মৌলভীবাজার মুক্তদিবস পালিত

আপডেট সময় : ১২:৪৪:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২২

মৌলভীবাজার সংবাদদাতা : মৌলভীবাজারের একটি ঐতিহাসিক দিন ৮ ডিসেম্বর। একাত্তরের এই দিনে পাক হানাদারবাহিনীকে হটিয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা মৌলভীবাজারকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করেন। মৌলভীবাজার শহর তথা জেলার সর্বত্র স্বাধীন বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা এই জেলার আকাশে উড়তে থাকে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় মৌলভীবাজার মুক্ত দিবসে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে পতাকা উত্তোলন ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে বিজয় মিছিল বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে এম সাইফুর রহমান অডিটরিয়ামে গিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ নেছার আহমদ, জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসান মোহাম্মদ নাসের রিকাবদার (অর্থ ও প্রশাসন), সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জামাল উদ্দিন সহ অন্যরা। বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন জানান, প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আজিজুর রহমান ছিলেন মুক্তিযুদ্ধে ৪ নম্বর সেক্টরের রাজনৈতিক সমন্বয়কারী। ডিসেম্বরের শুরুতে জেড ফোর্সের মুক্তিযোদ্ধারা মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় এই এলাকায় আক্রমণ আরও তীব্র করে। ৪ ডিসেম্বর জেলার কমলগঞ্জ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। ৫ ডিসেম্বর জেলার সর্বত্র শুরু হয় তীব্র আক্রমণ। জেলার চারদিক দিকে মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণে একের পর এক এলাকা শত্রুমুক্ত হতে থাকে। ৫ ও ৬ ডিসেম্বর দুই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা রাজনগর, শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া ও মুন্সীবাজার এলাকামুক্ত মহকুমা শহর অভিমুখে আসার জন্য অভিযান শুরু করে। ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর মিত্র ও মুক্তিবাহিনী শহর ঘেরাও করে। এখানে মহকুমা হেড কোয়ার্টার থাকার কারণে পাকবাহিনীর ব্রিগেড হেড কোয়ার্টার ছিল। জানা যায়, জেড ফোর্সের ১৭টি ইউনিটের মধ্যে আব্দুল জব্বার (কুলাউড়ার সাবেক এমপি) ও মুহিবের নেতৃত্বে ২টি ইউনিট কুলাউড়ার দিকে গেলেও বাকি ১৫ টি ইউনিট নিয়ে তারা মৌলভীবাজার শহরে ঢোকার চেষ্টা শুরু করেন। তুমুল যুদ্ধ আর অনেক হতাহতের পর ৭ ডিসেম্বরই মৌলভীবাজার পুরো মহকুমা এলাকা থেকে পাকবাহিনীকে হটিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা শহরে ঢুকে পড়েন। কিন্তু শহরের বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনী প্রচুর মাইনসহ অস্ত্র পুঁতে রাখায় রাস্তা থেকে এগুলো অপসারণ ও নিষ্ক্রিয় করার পর ৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার মুক্ত এলাকা ঘোষণা করা হয়। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, তৎকালীন মহকুমা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান ৮ ডিসেম্বর সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০টায় তৎকালীন মৌলভীবাজার মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান। তার সঙ্গে ছিলেন- মির্জা আজিজ আহমদ বেগ, সৈয়দ মহসীন আলীসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধারা।