ক্রীড়া প্রতিবেদক : রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র মতিঝিল। সেই মতিঝিলে গতকালের রাতটি ছিল আরও প্রাণবন্ত। ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ১৪ বছর পর ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় ক্লাব প্রাঙ্গনে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। আনন্দের এই উপলক্ষ্যে হয়ে ওঠে মোহামেডানের উৎসবের রাত। মোহামেডানের অন্যতম পরিচালক ও ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী গোলাম মো. আলমগীর আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন হলে রাতেই উৎসব হবে।’ সেই ঘোষণার পূর্ণ বাস্তবায়নই হয়েছে। কুমিল্লায় মোহামেডান যখন চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিচ্ছিল, তখন সূর্য অস্তগামী। ট্রফি নিয়েই খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা রাত ৯টার দিকে ক্লাবে পৌঁছান। খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই প্রস্তুতি সম্পন্ন হয় শিরোপা উদযাপনের। পুরো ক্লাব প্রাঙ্গন রঙিন হয়ে ওঠে আলোকসজ্জায়। পাশাপাশি বাজতে থাকতে বাদ্য, গান। খেলোয়াড়, কর্মকর্তা ও সমর্থক সবাই মিলে আনন্দ-উৎসবে কেক কাটেন। মোহামেডানে এরকম রাত এসেছে অনেকদিন পর। মোহামেডানের বর্তমান গোলরক্ষক কোচ ছাইদ হাসান কানন ক্লাবের সোনালী সময়ের তারকা খেলোয়াড়। কালকের অনুষ্ঠানে যেন তিনি ফিরে গেলেন ফেলে আসা সোনালী সময়ে, ‘অনেকদিন পর ক্লাবে দারুণ একটা সময় গেল। আমাদের সময়েও এরকম উৎসব হতো।’
২০১৪ সালের স্বাধীনতা কাপে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মোহামেডান। ফেনী সকারকে হারিয়ে সেদিন রাতে অবশ্য এরকম আয়োজন ছিল না। তবে সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে ২০০৯ সালে কোটি টাকার সুপার কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রাতটিই ছিল সবচেয়ে বর্ণিল। কুমিল্লায় মোহামেডানের খেলা দেখতে গিয়েছিলেন সাবেক তারকাদের অনেকেই। তবে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে একটি সভা থাকায় মোহামেডানের অন্যতম কিংবদন্তী কায়সার হামিদ কুমিল্লায় যেতে পারেননি। কুমিল্লায় না যেতে পারলেও, তিনি রাতের উৎসবে যোগ দিয়েছেন। তিনিও ফিরে গেছেন পুরনো দিনে, ‘আমাদের সময় চ্যাম্পিয়ন হলে বিশ-ত্রিশ হাজার সমর্থক ক্লাবের সামনে থাকত। মাঝে ক্লাব আর শিরোপা পায়নি। আজকের শিরোপা উদযাপনেও হাজার খানেক সমর্থক ছিল’।
ক্লাবের বিদেশি ফুটবলাররাও দারুণ উপভোগ করেছেন এই আয়োজন। ঘন্টা দেড়েক উদযাপনের পর দেশি ফুটবলাররা ক্যাম্পে আর বিদেশি ফুটবলাররা ফ্ল্যাট বাসায় ফিরে যান। চ্যাম্পিয়ন হলে ৪০ লাখ টাকা বোনাসের ঘোষণা আগেই দিয়েছিলেন ক্লাবের অন্যতম পরিচালক ও ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর। গতকাল রাতে উৎসবের সময় দিলেন আরও প্রায় ১০ লাখ টাকার বোনাস। মোহামেডানকে চ্যাম্পিয়ন করার তিন কারিগর ফরোয়ার্ড সুলেমান দিয়াবাতে ৫ লাখ এবং দুই গোলরক্ষক সুজন এবং বিপু দুই লাখ করে অতিরিক্ত বোনাস পাবেন। আজ-কালকের মধ্যেই অর্ধকোটি টাকার বোনাস পেয়ে যাবেন তারা এবং শিরোপা উদযাপনের জন্য দিনক্ষণও চূড়ান্ত হবে শিগগিরই।