ঢাকা ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অর্থ আত্মসাতে অভিনব প্রতারণা

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অর্থ আত্মসাতে অভিনব প্রতারণা

  • আপডেট সময় : ০৩:০০:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর ২০২৩
  • ১৬৬ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : মোবাইলে আর্থিক সেবাদানকারী একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সেজে অর্থ আত্মসাতের একটি চক্রের সন্ধান পাওয়ার কথা জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিন জনকে।
গত সোমবার রাতে চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকা থেকে কামরুল ইসলাম বিল্লাল হোসেন ও ফিরোজ শেখকে গ্রেপ্তার করে সাতটি মোবাইল সেট ও বিভিন্ন কোম্পানির ৩৪টি সিম জব্দের কথা জানানো হয়েছে। এদের মধ্যে কামরুলের বাড়ির মাগুরার শ্রীপুরে আর অন্য দুই জনের বাড়ি ফরিদপুরের মধুখালী। চক্রটি শুধু সেপ্টেম্বর মাসে এভাবে চার লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। পুলিশ বলছে, মাসের ৫ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে চক্রটি মাগুরা, ফরিদপুর থেকে চট্টগ্রামে আসে। বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতনের টাকা পরিবারের কাছে পাঠানোর নম্বরটি ধরে কাজ করে তারা। নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর-দক্ষিণ) নিহাদ আদনান তাইয়ান বলেন, “পোশাক শ্রমিকদের মধ্যে ইপিজেডের কারখানার শ্রমিকদের বেতন বেশি, সেটিকে টার্গেট করে এ চক্রের সদস্যরা চট্টগ্রামে আসে এবং ইপিজেড এলাকায় অবস্থান নেয়। “তাদের চক্রের সদস্যরা ইপিজেড এলাকায় বিভিন্ন বিকাশ এজেন্টদের দোকানের সামনে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে কেউ টাকা পাঠালে যে নম্বরটিতে টাকা পাঠানো হয়েছে সেটি কৌশলে সংগ্রহ করে। এরপর পরে বিকাশ এজেন্ট ও কাস্টমার কেয়ার ম্যানেজার সেজে ওই নম্বরে ফোন করে। বিভিন্নভাবে কথা বলে ওটিপি জেনে নেয়। এর মাধ্যমে টাকা তুলে ফেলে।”
গ্রেপ্তার হওয়াদের মধ্যে কামরুল চক্রটির হোতা বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, “বিকাশ কাস্টমার কেয়ার ম্যানেজার সেজে তিনি ফোনে কথা বলে কৌশলে গ্রাহকের মোবাইলে যাওয়া ওটিপি জেনে নেন।”
যে কৌশলে প্রতারণা: গ্রেপ্তার তিনজনের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, কোনো নম্বরে টাকা পাঠানো হলে প্রথমে সে টাকার পরিমাণটি জেনে নিত চক্রটি।
এরপর বিল্লাল ও ফিরোজ সেই নম্বরে কল করে নিজেকে বিকাশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বলতেন, ভুল করে টাকা গেছে এবং টাকা প্রদানকারী ব্যক্তি অভিযোগ জানিয়েছে। এ বিষয়ে বিকাশ কাস্টমার কেয়ার থেকে টেলিফোন করে কিছু তথ্য চাইবে, যাতে সেগুলো জানানো হয়। গোয়েন্দা কর্মকর্তা তাইয়ান বলেন, “কামরুল বিকাশ কাস্টমার কেয়ার ম্যানেজার সেজে ফোন করে গ্রাহককে বলেন পিন কোড দিতে হবে না। সর্বশেষ যে টাকা লেনদেন করেছেন তার সঙ্গে বিকাশের হেল্পলাইনের সঙ্গে আপনার পিন কোড যোগ করেন বা গুণ করেন। এভাবে সমীকরণ করে তিনি গ্রাহকের পিন কোড বের করতে পারেন।”
যে নম্বর থেকে তারা কল করতেন, সেটি একবারই ব্যবহার করতেন। পরে টেলিফোন সেটসহ তা পাল্টে ফেলেন। এভাবে প্রতিমাসে তারা বেশকিছু সিম ব্যবহার করেন। প্রতারক চক্রের সদস্যরা পুলিশকে জানায়, সাত/আট মাস আগে তারা ঢাকার লক্ষ্মীবাজার এলাকার একটি মোবাইল মেলা থেকে বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির বিক্রয় কর্মীদের কাছ থেকে বেশকিছু নিবন্ধিত সিম সংগ্রহ করে। সেগুলো প্রতারণা কাজে ব্যবহার করেছে। কয়েক জন সিম বিক্রয়কর্মীর নামও পেয়েছে পুলিশ। তাদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন উপ-কমিশনার তাইয়ান।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অর্থ আত্মসাতে অভিনব প্রতারণা

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অর্থ আত্মসাতে অভিনব প্রতারণা

আপডেট সময় : ০৩:০০:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর ২০২৩

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : মোবাইলে আর্থিক সেবাদানকারী একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সেজে অর্থ আত্মসাতের একটি চক্রের সন্ধান পাওয়ার কথা জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিন জনকে।
গত সোমবার রাতে চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকা থেকে কামরুল ইসলাম বিল্লাল হোসেন ও ফিরোজ শেখকে গ্রেপ্তার করে সাতটি মোবাইল সেট ও বিভিন্ন কোম্পানির ৩৪টি সিম জব্দের কথা জানানো হয়েছে। এদের মধ্যে কামরুলের বাড়ির মাগুরার শ্রীপুরে আর অন্য দুই জনের বাড়ি ফরিদপুরের মধুখালী। চক্রটি শুধু সেপ্টেম্বর মাসে এভাবে চার লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। পুলিশ বলছে, মাসের ৫ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে চক্রটি মাগুরা, ফরিদপুর থেকে চট্টগ্রামে আসে। বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতনের টাকা পরিবারের কাছে পাঠানোর নম্বরটি ধরে কাজ করে তারা। নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর-দক্ষিণ) নিহাদ আদনান তাইয়ান বলেন, “পোশাক শ্রমিকদের মধ্যে ইপিজেডের কারখানার শ্রমিকদের বেতন বেশি, সেটিকে টার্গেট করে এ চক্রের সদস্যরা চট্টগ্রামে আসে এবং ইপিজেড এলাকায় অবস্থান নেয়। “তাদের চক্রের সদস্যরা ইপিজেড এলাকায় বিভিন্ন বিকাশ এজেন্টদের দোকানের সামনে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে কেউ টাকা পাঠালে যে নম্বরটিতে টাকা পাঠানো হয়েছে সেটি কৌশলে সংগ্রহ করে। এরপর পরে বিকাশ এজেন্ট ও কাস্টমার কেয়ার ম্যানেজার সেজে ওই নম্বরে ফোন করে। বিভিন্নভাবে কথা বলে ওটিপি জেনে নেয়। এর মাধ্যমে টাকা তুলে ফেলে।”
গ্রেপ্তার হওয়াদের মধ্যে কামরুল চক্রটির হোতা বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, “বিকাশ কাস্টমার কেয়ার ম্যানেজার সেজে তিনি ফোনে কথা বলে কৌশলে গ্রাহকের মোবাইলে যাওয়া ওটিপি জেনে নেন।”
যে কৌশলে প্রতারণা: গ্রেপ্তার তিনজনের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, কোনো নম্বরে টাকা পাঠানো হলে প্রথমে সে টাকার পরিমাণটি জেনে নিত চক্রটি।
এরপর বিল্লাল ও ফিরোজ সেই নম্বরে কল করে নিজেকে বিকাশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বলতেন, ভুল করে টাকা গেছে এবং টাকা প্রদানকারী ব্যক্তি অভিযোগ জানিয়েছে। এ বিষয়ে বিকাশ কাস্টমার কেয়ার থেকে টেলিফোন করে কিছু তথ্য চাইবে, যাতে সেগুলো জানানো হয়। গোয়েন্দা কর্মকর্তা তাইয়ান বলেন, “কামরুল বিকাশ কাস্টমার কেয়ার ম্যানেজার সেজে ফোন করে গ্রাহককে বলেন পিন কোড দিতে হবে না। সর্বশেষ যে টাকা লেনদেন করেছেন তার সঙ্গে বিকাশের হেল্পলাইনের সঙ্গে আপনার পিন কোড যোগ করেন বা গুণ করেন। এভাবে সমীকরণ করে তিনি গ্রাহকের পিন কোড বের করতে পারেন।”
যে নম্বর থেকে তারা কল করতেন, সেটি একবারই ব্যবহার করতেন। পরে টেলিফোন সেটসহ তা পাল্টে ফেলেন। এভাবে প্রতিমাসে তারা বেশকিছু সিম ব্যবহার করেন। প্রতারক চক্রের সদস্যরা পুলিশকে জানায়, সাত/আট মাস আগে তারা ঢাকার লক্ষ্মীবাজার এলাকার একটি মোবাইল মেলা থেকে বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির বিক্রয় কর্মীদের কাছ থেকে বেশকিছু নিবন্ধিত সিম সংগ্রহ করে। সেগুলো প্রতারণা কাজে ব্যবহার করেছে। কয়েক জন সিম বিক্রয়কর্মীর নামও পেয়েছে পুলিশ। তাদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন উপ-কমিশনার তাইয়ান।