নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে প্রথমে মোবাইল ফোনে চাঁদা দাবি করা হতো। দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে করা হতো অপহরণ। এরপর আটকে রেখে আদায় করা হতো মোটা অংকের মুক্তিপণ। এমন একটি অপহরণ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পল্লবী থানা পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিরপুর জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাহাতাব উদ্দিন নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। ডিসি মাহাতাব উদ্দিন বলেন, পল্লবী এলাকার বাসিন্দা পানির ফিল্টার ব্যবসায়ী রাকিব মোল্লা গত ২২ জুন ব্যবসায়িক কাজে বের হয়ে আর বাসায় ফেরেননি। রাকিবের ভাই সানিয়াত মোল্লা পল্লবী থানায় এসে অভিযোগ করেন, ২২ জুন বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে তার ছোটভাই রাকিবের ফোনে একটি কল আসে, পানির ফিল্টার কিনতে চায় একজন। এরপর রাকিব বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরে অপহরণ চক্রের সদস্যরা তার মোবাইলে ফোন করে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না পেলে তার ভাইকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়।
অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্তে নামে পল্লবী থানা পুলিশ। অপহরণের শিকার ব্যবসায়ীর মোবাইল ফোন নাম্বার তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ট্র্যাকিং করা হয়। পরে সাভার থানার ব্যাংক কলোনি এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের অন্যতম সদস্য খন্দকার ওলিউল্লাহ মেহেদী ওরফে রাজু মনিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাজু মনিরের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপহরণ চক্রের সহযোগী শফিকুল ইসলাম শিমুল, খালিকুজ্জামান জামান, সেলিম আহমেদ ও মেহেদী হাসান ওরফে আকাশ কালুকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে সাভার থানার উলাইল এলাকার কর্ণপাড়ার একটি বাসা থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী রাকিব মোল্লাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার চক্রের সদস্যরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছেন, তারা একটি অপহরণ চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর পল্লবী এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চাঁদা দাবি করতেন। ব্যবসায়ীরা মোবাইল ফোনে দাবিকৃত চাঁদা দিতে রাজি না হলে তাদের নানা কৌশলে অপহরণ করা হতো। এরপর আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করতো তারা।
চক্রের সদস্যরা আরও জানায়, ব্যবসায়ী রাকিবকে অপহরণের পর তাকে সাভার নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে বিয়ার ও জুস খাওয়ানো হয়। জুসের সঙ্গে তাকে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখে তারা। টাকা আদায়ের আগ পর্যন্ত তারা এভাবে ঘুম পড়িয়ে রাখতো। চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের সময় নেশাজাতীয় পানীয় খাবার উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার পাঁচ অপহরণকারীকে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
মোবাইল ফোনে চাঁদা দাবি, না পেলেই অপহরণ
ট্যাগস :
মোবাইল ফোনে চাঁদা দাবি
জনপ্রিয় সংবাদ