ঢাকা ০৯:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোবাইল-ইন্টারনেটে কর প্রত্যাহার না হলে এনবিআর ঘেরাও হবে

  • আপডেট সময় : ০৬:৫৭:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৩০ বার পড়া হয়েছে

‘টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবায় কর বৃদ্ধির হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের’ দাবিতে রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের মানববন্ধন। ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের মোবাইল ফোনে এবং ইন্টারনেট সেবার ওপর নতুন করে সম্পূরক কর আরোপ করা সরকারের হঠকারী সিদ্ধান্ত। এটি ন্যায়বিচার ও জনকল্যাণের নীতির পরিপন্থি। যদি শিগগিরই এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে এনবিআর ঘেরাও করা হবে।

রোববার (১২ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এমন ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, সরকারের এই পদক্ষেপ জনগণের ইন্টারনেট সেবার ওপর নির্ভরতা বাড়ানোর পরিবর্তে তাদের সেবার বাইরে রাখার শামিল। ইন্টারনেটের কর কমিয়ে জনগণকে সেবার আওতায় আনলে সরকার ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় করতে পারত। এছাড়া, কর কমালে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ত। সরকার যদি জনগণের দাবিকে অগ্রাধিকার না দেয়, তবে এ সিদ্ধান্ত দেশের সামগ্রিক উন্নয়নকে পিছিয়ে দেবে এবং জনগণের জীবনযাত্রায় আরও বৈষম্য সৃষ্টি করবে।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম ও আইআইজির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, শতভাগ দেশীয় উদ্যোক্তার মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দেওয়া হয়। এই সেবা খাত ধ্বংস করার অপচেষ্টা আগেও করা হয়েছে, এখন আবার নতুন করে ১০ শতাংশ এসডি ও সঙ্গে ভ্যাট যুক্ত করায় গ্রাহকে ভোগান্তি যেমন বাড়বে একইভাবে এই সেবাখাত ধ্বংস হয়ে যাবে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে যদি এই ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হয় তাহলে আমরা গ্রাহক এবং সেবা খাতের সবাইকে নিয়ে এনবিআর কার্যালয় ঘেরাও করব।

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, এমন উদ্যোগের ফলে ছোট উদ্যোক্তা যেমন হুমকির মুখে পড়বে ঠিক একইভাবে গ্রাহকদের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝার চাপ বাড়বে। ফোনে ইন্টারনেট সেবা বিমুখ হবে জনগণ, যা নতুন করে বৈষম্য তৈরি করবে।

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালিদ আবু নাসের বলেন, নতুন করে করের বোঝা জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলবে না, সরকারকে ১০ নম্বর সংকেতে ফেলবে। হঠকারীমূলক সিদ্ধান্ত দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে।

প্রযুক্তিবিদ এবং বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর বলেন, কারো সঙ্গে আলোচনা না করে নতুন করে ইন্টারনেট সেবায় কর আরোপ করা এক ধরনের স্বৈরাচারী আচরণ। নতুন করে কর বৃদ্ধি করলে টেলিযোগাযোগ ইন্টারনেট সেবা খাত হুমকির মুখে পড়বে। নতুন উদ্যোক্তা তৈরি তো দূরে থাক গ্রাহকরা এই সেবা গ্রহণ করতে পারবে। না হলে নতুন করে কর আদায় করার যে সিদ্ধান্ত তা হোঁচট খাবে।

সভাপতির বক্তব্যে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দুর্নীতিবাজ রাজস্ব কর্মকর্তাদের খুশি করতেই তাদের পরামর্শে এই ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আমরা ভেবেছিলাম ৫ আগস্টের পর আর রাজপথে দাঁড়াতে হবে না। কিন্তু আজ দুঃখের সঙ্গে আমাদের রাজপথে দাঁড়াতে হলো। গ্রাহক স্বার্থ বিবেচনা না করে কারো সঙ্গে আলোচনা না করে রাতের আঁধারে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা জনগণের সঙ্গে নতুন করে বৈষম্য সৃষ্টি করল।

তিনি বলেন, ১ সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে আমরা এনবিআর কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করাসহ কঠোর কর্মসূচিতে দিতে বাধ্য হবো।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, প্রযুক্তিবিদ ফিদা হক, ফ্রিল্যান্সারদের প্রতিনিধি আনিস, পাঠাও এর সিইও ফাহিমসহ খাত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিরা।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মোবাইল-ইন্টারনেটে কর প্রত্যাহার না হলে এনবিআর ঘেরাও হবে

আপডেট সময় : ০৬:৫৭:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের মোবাইল ফোনে এবং ইন্টারনেট সেবার ওপর নতুন করে সম্পূরক কর আরোপ করা সরকারের হঠকারী সিদ্ধান্ত। এটি ন্যায়বিচার ও জনকল্যাণের নীতির পরিপন্থি। যদি শিগগিরই এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে এনবিআর ঘেরাও করা হবে।

রোববার (১২ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এমন ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, সরকারের এই পদক্ষেপ জনগণের ইন্টারনেট সেবার ওপর নির্ভরতা বাড়ানোর পরিবর্তে তাদের সেবার বাইরে রাখার শামিল। ইন্টারনেটের কর কমিয়ে জনগণকে সেবার আওতায় আনলে সরকার ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় করতে পারত। এছাড়া, কর কমালে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ত। সরকার যদি জনগণের দাবিকে অগ্রাধিকার না দেয়, তবে এ সিদ্ধান্ত দেশের সামগ্রিক উন্নয়নকে পিছিয়ে দেবে এবং জনগণের জীবনযাত্রায় আরও বৈষম্য সৃষ্টি করবে।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম ও আইআইজির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, শতভাগ দেশীয় উদ্যোক্তার মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দেওয়া হয়। এই সেবা খাত ধ্বংস করার অপচেষ্টা আগেও করা হয়েছে, এখন আবার নতুন করে ১০ শতাংশ এসডি ও সঙ্গে ভ্যাট যুক্ত করায় গ্রাহকে ভোগান্তি যেমন বাড়বে একইভাবে এই সেবাখাত ধ্বংস হয়ে যাবে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে যদি এই ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হয় তাহলে আমরা গ্রাহক এবং সেবা খাতের সবাইকে নিয়ে এনবিআর কার্যালয় ঘেরাও করব।

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, এমন উদ্যোগের ফলে ছোট উদ্যোক্তা যেমন হুমকির মুখে পড়বে ঠিক একইভাবে গ্রাহকদের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝার চাপ বাড়বে। ফোনে ইন্টারনেট সেবা বিমুখ হবে জনগণ, যা নতুন করে বৈষম্য তৈরি করবে।

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালিদ আবু নাসের বলেন, নতুন করে করের বোঝা জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলবে না, সরকারকে ১০ নম্বর সংকেতে ফেলবে। হঠকারীমূলক সিদ্ধান্ত দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে।

প্রযুক্তিবিদ এবং বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর বলেন, কারো সঙ্গে আলোচনা না করে নতুন করে ইন্টারনেট সেবায় কর আরোপ করা এক ধরনের স্বৈরাচারী আচরণ। নতুন করে কর বৃদ্ধি করলে টেলিযোগাযোগ ইন্টারনেট সেবা খাত হুমকির মুখে পড়বে। নতুন উদ্যোক্তা তৈরি তো দূরে থাক গ্রাহকরা এই সেবা গ্রহণ করতে পারবে। না হলে নতুন করে কর আদায় করার যে সিদ্ধান্ত তা হোঁচট খাবে।

সভাপতির বক্তব্যে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দুর্নীতিবাজ রাজস্ব কর্মকর্তাদের খুশি করতেই তাদের পরামর্শে এই ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আমরা ভেবেছিলাম ৫ আগস্টের পর আর রাজপথে দাঁড়াতে হবে না। কিন্তু আজ দুঃখের সঙ্গে আমাদের রাজপথে দাঁড়াতে হলো। গ্রাহক স্বার্থ বিবেচনা না করে কারো সঙ্গে আলোচনা না করে রাতের আঁধারে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা জনগণের সঙ্গে নতুন করে বৈষম্য সৃষ্টি করল।

তিনি বলেন, ১ সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে আমরা এনবিআর কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করাসহ কঠোর কর্মসূচিতে দিতে বাধ্য হবো।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, প্রযুক্তিবিদ ফিদা হক, ফ্রিল্যান্সারদের প্রতিনিধি আনিস, পাঠাও এর সিইও ফাহিমসহ খাত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিরা।