প্রযুক্তি ডেস্ক : সরকারের অর্থ মানে জনগণের টাকা, সে টাকা অবশ্যই মোবাইল অপারেটরদের পরিশোধ করতে হবে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি জানান, বিটিআরসি জনগণের অর্থ আদায়ে বদ্ধপরিকর। বিটিআরসি যত আইন-কানুন ও পলিসি প্রণয়ন করেছে, তা দেশের জনসাধারণের কল্যাণের জন্য।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ দেশের তিনটি মোবাইল অপারেটরকে বিভিন্ন ফি ও মূল্য সংযোজন কর পরিশোধের আদেশ বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। গত রোববার (১৫ জানুয়ারি) বিটিআরসির প্রধান সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মামলার আদ্যোপান্ত তুলে ধরে লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের কমিশনার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন বলেন, ‘মোবাইল অপারেটররা বিটিআরসির পাওনা বাবদ প্রকৃত টাকা প্রদান না করে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আকারে অন্তর্ভুক্ত করে (যেমন-১০০ টাকা মূল টাকা হলে বিটিআরসিকে অপারেটররা দিয়েছিল ৮৫ টাকা অর্থাৎ অবশিষ্ট ১৫ টাকা ভ্যাট হিসেবে প্রদর্শন করেছিল) প্রদান করেছিল।’
পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট অপারেটরদের কাছ থেকে প্রাপ্য আদায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত না মানলে আইনিভাবে সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বিটিআরসি।’
স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব এবং জনগণের অর্থ। অপারেটরদের এই অর্থ অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে।’
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ বলেন, ‘অপারেটরদের বিনিয়োগ এবং কস্ট ম্যানেজমেন্টের বিষয়গুলো তাদের নিজস্ব বিষয়। অপারেটরদের লাভ-ক্ষতির বিষয় নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিবেচ্য বিষয় নয় এবং বিটিআরসির প্রাপ্য তাদের পরিশোধ করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২২ নভেম্বর পর্যন্ত গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসির পাওনার পরিমাণ ১১৬৩ দশমিক ৮৫ কোটি টাকা, বাংলালিংকের কাছে বিটিআরসির পাওনা ৬২৫ দশমিক ২৭ কোটি টাকা, রবির কাছে ৫৬৫ দশমিক ৫৮ কোটি টাকা, এয়ারটেল কাছে ৫৯ দশমিক ৫ কোটি টাকা। বিটিআরসি অপারেটরগুলোর কাছ থেকে শতভাগ টাকা পাবে, এক্ষেত্রে এরমধ্যে ১৫ ভাগ ভ্যাট যুক্ত করা যাবে না।
বিটিআরসির লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের পরিচালক তারেক হাসান সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন—কমিশনার মুশফিক মান্নান চৌধুরী, লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের মহাপরিচালক আশীষ কুমার কুন্ডু, প্রশাসন বিভাগের মহাপরিচালক মো. দেলোয়ার হোসাইন, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. এহসানুল কবীর, স্পেকক্ট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েল, বিটিআরসির আইনজীবী ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা- ই-রাকিব প্রমুখ।