ঢাকা ০৪:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোটরসাইকেল, ফ্রিজ, এসি শিল্পে আয়কর দ্বিগুণ

  • আপডেট সময় : ০৫:৩৮:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

সংগৃহীত কোলাজ ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্ধ শতাধিক পণ্য ও সেবায় মূল্য সংযোজন কর-ভ্যাট ও শুল্ক-কর বাড়ানোর উদ্যোগের পর এবার মোটরসাইকেল, রেফ্রিজারেটর, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ও কম্প্রেসর শিল্পের আয়কর বাড়িয়ে দিগুণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) এক প্রজ্ঞাপনে এ ধরনের শিল্পের আয়ের ওপর ২০ শতাংশ কর নির্ধারণ করেছে; এতদিন যা ১০ শতাংশ ছিল।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আগামী ২০২৫-২৬ করবর্ষ থেকে নতুন হারে আয়কর ধার্য হবে; অর্থাৎ চলতি অর্থবছরে এ ধরনের শিল্পের যে আয় হবে, তার ওপর এই বাড়তি কর দিতে হবে।

এসব শিল্প কারখানা যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও উপকরণ আমদানিতে ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি) দিয়ে আসছে। এই করও বাড়ানোর কথা রয়েছে বলে এনবিআর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন; সেটি বাড়ালে যেদিন থেকে বাড়াবে সেদিন থেকেই কার্যকর হয়ে যাবে।

এসব শিল্প ২০২১ সাল থেকে যন্ত্রপাতি আমদানিতে ২ শতাংশ এআইটি এবং আয়ের ওপর ১০ শতাংশ কর দেওয়ার সুবিধা পেয়ে আসছিল, যা ২০৩২ সাল পর্যন্ত বলবৎ থাকার কথা ছিল। সেই আদেশে বাতিল করে এখন নতুন করহার ধার্য করা হল।

মোটরসাইকেল, এসি, রেফ্রিজারেটর ও কম্প্রেসর উৎপাদনকারী কোম্পানির ক্ষেত্রে বর্তমানে ২৫ শতাংশ ও সাড়ে ২৭ শতাংশ হারে সাধারণ করপোরেট কর প্রযোজ্য।

এ চার ধরনের পণ্যের আয়কর বাড়ানোর ফলে বাড়তি ১ হাজার কোটি টাকা আদায় হবে বলে এনবিআর কর্মকর্তাদের ভাষ্য।

৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তির শর্ত হিসেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাড়তি ১২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে বলেছে।

তারপরই এনবিআর অর্থবছরের মাঝপথে এসে হঠাৎ ভ্যাটের বোঝা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। তার সঙ্গে এখন আয়কর বাড়ানোর এই আদেশ হল।

যদিও আয়করের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক রাজস্ব আদায় হবে না, পরের অর্থবছরে এর ফল মিলবে; তবুও পরবর্তীতে যে আদায় বাড়বে, আইএমএফকে সে বার্তা দিতে এনবিআর অর্থবছরের মাঝপথে কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল।

রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্য প্রাথমিকভাবে ৪৩ ধরনের পণ্য ও সেবার ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে এনবিআর।

ওষুধ, গুঁড়ো দুধ, বিস্কুট, জুস, ফলমূল, সাবান, মিষ্টি, মোবাইলে কথা বলা, ইন্টারনেট ব্যবহার, হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাওয়া, বিমানের টিকেটসহ সিগারেট এবং তামাকপণ্য রয়েছে বাড়তি ভ্যাট ও শুল্ক-করের তালিকায়।

এসব পণ্যে মোট ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা এতদিন ৫ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ ছিল।

এছাড়াও বিভিন্ন পণ্য ও সেবায় আবগারি শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সিগারেটে দেড় শতাংশ এবং মোবাইলের টক টাইমে ৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়তে পারে।

গত শনিবার এনবিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনস্বার্থে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির শুল্ক করহারে ব্যাপক ছাড় দেওয়ার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি, এসডিজি বাস্তবায়নে ভ্যাটের আওতা বৃদ্ধি ও হার যৌক্তিকীকরণে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

এনবিআর বলছে, ভ্যাটের আওতা বাড়ানোর পাশাপাশি ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক এবং আবগারি শুল্কের হার ও পরিমাণ ‘যৌক্তিকীকরণের মাধ্যমে’ রাজস্ব আহরণ বাড়াতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে।

মূল্য সংযোজন করের পাশাপাশি আয়করের ক্ষেত্রেও করের আওতা বৃদ্ধির নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। আয়কর অব্যাহতির সংস্কৃতি থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসার ধারাবাহিকতায় আয়কর অব্যাহতির বিধান বাতিল ও সংশোধনের কার্যক্রম ও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মোটরসাইকেল, ফ্রিজ, এসি শিল্পে আয়কর দ্বিগুণ

আপডেট সময় : ০৫:৩৮:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্ধ শতাধিক পণ্য ও সেবায় মূল্য সংযোজন কর-ভ্যাট ও শুল্ক-কর বাড়ানোর উদ্যোগের পর এবার মোটরসাইকেল, রেফ্রিজারেটর, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ও কম্প্রেসর শিল্পের আয়কর বাড়িয়ে দিগুণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) এক প্রজ্ঞাপনে এ ধরনের শিল্পের আয়ের ওপর ২০ শতাংশ কর নির্ধারণ করেছে; এতদিন যা ১০ শতাংশ ছিল।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আগামী ২০২৫-২৬ করবর্ষ থেকে নতুন হারে আয়কর ধার্য হবে; অর্থাৎ চলতি অর্থবছরে এ ধরনের শিল্পের যে আয় হবে, তার ওপর এই বাড়তি কর দিতে হবে।

এসব শিল্প কারখানা যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও উপকরণ আমদানিতে ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি) দিয়ে আসছে। এই করও বাড়ানোর কথা রয়েছে বলে এনবিআর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন; সেটি বাড়ালে যেদিন থেকে বাড়াবে সেদিন থেকেই কার্যকর হয়ে যাবে।

এসব শিল্প ২০২১ সাল থেকে যন্ত্রপাতি আমদানিতে ২ শতাংশ এআইটি এবং আয়ের ওপর ১০ শতাংশ কর দেওয়ার সুবিধা পেয়ে আসছিল, যা ২০৩২ সাল পর্যন্ত বলবৎ থাকার কথা ছিল। সেই আদেশে বাতিল করে এখন নতুন করহার ধার্য করা হল।

মোটরসাইকেল, এসি, রেফ্রিজারেটর ও কম্প্রেসর উৎপাদনকারী কোম্পানির ক্ষেত্রে বর্তমানে ২৫ শতাংশ ও সাড়ে ২৭ শতাংশ হারে সাধারণ করপোরেট কর প্রযোজ্য।

এ চার ধরনের পণ্যের আয়কর বাড়ানোর ফলে বাড়তি ১ হাজার কোটি টাকা আদায় হবে বলে এনবিআর কর্মকর্তাদের ভাষ্য।

৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তির শর্ত হিসেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাড়তি ১২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে বলেছে।

তারপরই এনবিআর অর্থবছরের মাঝপথে এসে হঠাৎ ভ্যাটের বোঝা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। তার সঙ্গে এখন আয়কর বাড়ানোর এই আদেশ হল।

যদিও আয়করের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক রাজস্ব আদায় হবে না, পরের অর্থবছরে এর ফল মিলবে; তবুও পরবর্তীতে যে আদায় বাড়বে, আইএমএফকে সে বার্তা দিতে এনবিআর অর্থবছরের মাঝপথে কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল।

রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্য প্রাথমিকভাবে ৪৩ ধরনের পণ্য ও সেবার ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে এনবিআর।

ওষুধ, গুঁড়ো দুধ, বিস্কুট, জুস, ফলমূল, সাবান, মিষ্টি, মোবাইলে কথা বলা, ইন্টারনেট ব্যবহার, হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাওয়া, বিমানের টিকেটসহ সিগারেট এবং তামাকপণ্য রয়েছে বাড়তি ভ্যাট ও শুল্ক-করের তালিকায়।

এসব পণ্যে মোট ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা এতদিন ৫ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ ছিল।

এছাড়াও বিভিন্ন পণ্য ও সেবায় আবগারি শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সিগারেটে দেড় শতাংশ এবং মোবাইলের টক টাইমে ৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়তে পারে।

গত শনিবার এনবিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনস্বার্থে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির শুল্ক করহারে ব্যাপক ছাড় দেওয়ার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি, এসডিজি বাস্তবায়নে ভ্যাটের আওতা বৃদ্ধি ও হার যৌক্তিকীকরণে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

এনবিআর বলছে, ভ্যাটের আওতা বাড়ানোর পাশাপাশি ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক এবং আবগারি শুল্কের হার ও পরিমাণ ‘যৌক্তিকীকরণের মাধ্যমে’ রাজস্ব আহরণ বাড়াতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে।

মূল্য সংযোজন করের পাশাপাশি আয়করের ক্ষেত্রেও করের আওতা বৃদ্ধির নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। আয়কর অব্যাহতির সংস্কৃতি থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসার ধারাবাহিকতায় আয়কর অব্যাহতির বিধান বাতিল ও সংশোধনের কার্যক্রম ও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।