ঢাকা ০১:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

মেয়র আব্বাসের দুই মার্কেট ভেঙে দিলো প্রশাসন

  • আপডেট সময় : ০২:১৫:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২১
  • ৯৮ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীর কাটাখালিতে খালের ওপর নির্মাণাধীন মার্কেট ভেঙে ফেলে স্থানীয় প্রশাসন রাজশাহীর কাটাখালিতে সরকারি খালের ওপর নির্মাণাধীন দুটি মার্কেট ভেঙে ফেলেছে স্থানীয় প্রশাসন। মার্কেট দুটি নির্মাণ করছিলেন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করা রাজশাহীর কাটাখালি পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী।
গতকাল শনিবার সকাল ৯টায় মার্কেট ভাঙার কাজ শুরু হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট পবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ এহসান উদ্দীন। তিনি জানিয়েছেন, সরকারি খালের ওপর নির্মাণাধীন মেয়র আব্বাসের মার্কেট উচ্ছেদে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে গত ১০ অক্টোবর চিঠি দেওয়া হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর থেকে বিষয়টি তদন্ত করে মতামতসহ জরুরি ভিত্তিতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। মেয়র আব্বাসকে এক মাস আগে উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হয়। তার পরও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এ কারণে মার্কেট দুটি ভাঙা হচ্ছে।
শনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মেয়র আব্বাসের মার্কেট ভাঙার সময় সেখানে স্থানীয় লোকজন ভিড় করছিলেন। মার্কেট দুটি এমন সময়ে ভাঙা শুরু হলো, যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় মেয়র আব্বাস আলী রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্তরীণ। একই অভিযোগে আব্বাস আলীকে কাটাখালি পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাকে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আব্বাসকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটিতে সুপারিশ পাঠিয়েছে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ। জলাবদ্ধতা নিরসনে বছরখানেক আগে কাটাখালি পৌরসভার ওপর দিয়ে যাওয়া খালটি ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে পুনঃখনন করে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। গত এপ্রিলে মেয়র আব্বাস সরকারি এই খালের ওপর মার্কেট নির্মাণ শুরু করেন। ১৯ জুলাই একতলার ছাদ ঢালাই সম্পন্ন হয়। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে সরকারি খালের ব্রিজের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে খালের ওপর প্রায় ১ হাজার ১৪৪ বর্গফুট জায়গাজুড়ে এ তিনতলা মার্কেট নির্মাণ শুরু করেন আব্বাস। সেখানে ইতোমধ্যে দুইতলা ভবন হয়েছে। এই মার্কেটটি তিন তলা করার পরিকল্পনা ছিল মেয়র আব্বাসের। মার্কেটে ২১টি দোকান হতো।
অন্যদিকে, ব্রিজের উত্তর পাশে খালের ওপর আরেকটি দুই তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এই মার্কেটে দোকান হবে ছয়টি। ইতোমধ্যে এসব দোকান স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বরাদ্দ দিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আব্বাস আলী। সরকারি খালের ওপর মার্কেট নির্মাণ শুরু হলে এ বিষয়ে অভিযোগ জানান কাটাখালি পৌরসভার কয়েকজন কাউন্সিলর। এ অভিযোগের ভিত্তিতে আগস্ট মাসে পবা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। কয়েক দিন কাজ বন্ধ থাকলেও পরে আবার নির্মাণকাজ শুরু করেন আব্বাস। তখন অদৃশ্য কারণে মার্কেটটি ভাঙেনি স্থানীয় প্রশাসন। এ বিষয়ে পবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ এহসান উদ্দীন বলেন, ‘এক মাস আগে মেয়র আব্বাসকে মার্কেট দুটি ভেঙে ফেলার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। তিনি সরকারি নির্দেশনা অমান্য করেছেন। এ কারণে এখন মার্কেট দুটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মেয়র আব্বাসের দুই মার্কেট ভেঙে দিলো প্রশাসন

আপডেট সময় : ০২:১৫:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২১

রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীর কাটাখালিতে খালের ওপর নির্মাণাধীন মার্কেট ভেঙে ফেলে স্থানীয় প্রশাসন রাজশাহীর কাটাখালিতে সরকারি খালের ওপর নির্মাণাধীন দুটি মার্কেট ভেঙে ফেলেছে স্থানীয় প্রশাসন। মার্কেট দুটি নির্মাণ করছিলেন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করা রাজশাহীর কাটাখালি পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী।
গতকাল শনিবার সকাল ৯টায় মার্কেট ভাঙার কাজ শুরু হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট পবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ এহসান উদ্দীন। তিনি জানিয়েছেন, সরকারি খালের ওপর নির্মাণাধীন মেয়র আব্বাসের মার্কেট উচ্ছেদে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে গত ১০ অক্টোবর চিঠি দেওয়া হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর থেকে বিষয়টি তদন্ত করে মতামতসহ জরুরি ভিত্তিতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। মেয়র আব্বাসকে এক মাস আগে উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হয়। তার পরও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এ কারণে মার্কেট দুটি ভাঙা হচ্ছে।
শনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মেয়র আব্বাসের মার্কেট ভাঙার সময় সেখানে স্থানীয় লোকজন ভিড় করছিলেন। মার্কেট দুটি এমন সময়ে ভাঙা শুরু হলো, যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় মেয়র আব্বাস আলী রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্তরীণ। একই অভিযোগে আব্বাস আলীকে কাটাখালি পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাকে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আব্বাসকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটিতে সুপারিশ পাঠিয়েছে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ। জলাবদ্ধতা নিরসনে বছরখানেক আগে কাটাখালি পৌরসভার ওপর দিয়ে যাওয়া খালটি ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে পুনঃখনন করে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। গত এপ্রিলে মেয়র আব্বাস সরকারি এই খালের ওপর মার্কেট নির্মাণ শুরু করেন। ১৯ জুলাই একতলার ছাদ ঢালাই সম্পন্ন হয়। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে সরকারি খালের ব্রিজের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে খালের ওপর প্রায় ১ হাজার ১৪৪ বর্গফুট জায়গাজুড়ে এ তিনতলা মার্কেট নির্মাণ শুরু করেন আব্বাস। সেখানে ইতোমধ্যে দুইতলা ভবন হয়েছে। এই মার্কেটটি তিন তলা করার পরিকল্পনা ছিল মেয়র আব্বাসের। মার্কেটে ২১টি দোকান হতো।
অন্যদিকে, ব্রিজের উত্তর পাশে খালের ওপর আরেকটি দুই তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এই মার্কেটে দোকান হবে ছয়টি। ইতোমধ্যে এসব দোকান স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বরাদ্দ দিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আব্বাস আলী। সরকারি খালের ওপর মার্কেট নির্মাণ শুরু হলে এ বিষয়ে অভিযোগ জানান কাটাখালি পৌরসভার কয়েকজন কাউন্সিলর। এ অভিযোগের ভিত্তিতে আগস্ট মাসে পবা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। কয়েক দিন কাজ বন্ধ থাকলেও পরে আবার নির্মাণকাজ শুরু করেন আব্বাস। তখন অদৃশ্য কারণে মার্কেটটি ভাঙেনি স্থানীয় প্রশাসন। এ বিষয়ে পবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ এহসান উদ্দীন বলেন, ‘এক মাস আগে মেয়র আব্বাসকে মার্কেট দুটি ভেঙে ফেলার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। তিনি সরকারি নির্দেশনা অমান্য করেছেন। এ কারণে এখন মার্কেট দুটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে।’