বিনোদন ডেস্ক: কয়েক দিন ধরে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা ধর্মেন্দ্র। গতকাল সকালে সর্বত্র তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়েছিল। ধর্মেন্দ্রর মেয়ে এষা দেওল ও স্ত্রী হেমা মালিনী এক পোস্টের মাধ্যমে কিংবদন্তি এই অভিনেতার মৃত্যুর গুজবের ইতি টেনেছিলেন। তাঁরা জানিয়েছিলেন যে ধর্মেন্দ্রর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। আজ সকালে তাঁকে ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ধর্মেন্দ্রকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তিনি জুহুতে তাঁর বাংলোয় ফিরে এসেছেন। বর্তমানে বাড়িতে তাঁর চিকিৎসা চলবে বলে রিপোর্টে জানা গেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘ধর্মেন্দ্রজি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন এবং এখন বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসা ও বিশ্রাম চলবে। আমরা বিনীতভাবে অনুরোধ করছি, এ সময়ে মিডিয়া ও জনসাধারণ যেন কোনো রকম অনুমান বা গুজব না ছড়ান এবং তাঁর ও পরিবারের গোপনীয়তা রক্ষা করেন’।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘ধর্মেন্দ্রজির প্রতি আপনাদের ভালোবাসা, প্রার্থনা ও শুভকামনার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। তাঁর দ্রুত আরোগ্য, ভালো স্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবনের জন্য আপনারা যেভাবে পাশে থেকেছেন, তা অত্যন্ত অনুপ্রেরণাদায়ক। দয়া করে তাঁকে শ্রদ্ধা করুন। কারণ, তিনিও আপনাদের ভালোবাসেন।’
গত মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সকাল থেকেই ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়েছিল সর্বত্র। আজ তক, ইন্ডিয়া টুডে, ইকোনমিকস টাইমসসহ একাধিক গণমাধ্যম তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিল। এমনকি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিং, লেখক-চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতার, কে কে মেনন, চিরঞ্জীবীসহ অনেক চলচ্চিত্র তারকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন। তবে ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনীর মেয়ে এষা দেওল এক্স হ্যান্ডলে এক পোস্টের মাধ্যমে জানান যে অভিনেতার মৃত্যুর খবরটি গুজব। আর ধর্মেন্দ্রর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। এষার এই পোস্টের পর অনেকে তাঁদের লেখা মুছে ফেলেছেন।
বর্ষীয়ান বলিউড অভিনেতা ধর্মেন্দ্রকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ভুয়া খবর ছড়ানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁর স্ত্রী, অভিনেত্রী ও সংসদ সদস্য হেমা মালিনী। তিনি নিজের এক্স অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করে এই গুজবের তীব্র নিন্দা জানিয়ে লিখেছেন, ‘যা ঘটছে তা ক্ষমার অযোগ্য! একজন মানুষ যিনি চিকিৎসাধীন এবং ধীরে ধীরে সেরে উঠছেন, তাঁকে নিয়ে কীভাবে দায়িত্বশীল সংবাদমাধ্যম এমন ভুয়া খবর ছড়াতে পারে? এটা অত্যন্ত অসম্মানজনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ। পরিবারের প্রতি এবং তাদের ব্যক্তিগত পরিসরের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখান।’ ধর্মেন্দ্রকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন স্ত্রী হেমা মালিনী, দুই ছেলে সানি ও ববি দেওল, আমিশা প্যাটেল, সালমান খান, শাহরুখ খান, আমির খান, গোবিন্দসহ অনেকে।
১৯৩৫ সালে পাঞ্জাবের লুধিয়ানায় জন্ম নেওয়া ধর্মেন্দ্রর প্রকৃত নাম ধর্মসিং দেওল। দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান হয়েও ছোটবেলা থেকেই সিনেমার প্রতি ছিল তাঁর প্রবল টান। ১৯৬০ সালে ফিল্মফেয়ার ট্যালেন্ট প্রতিযোগিতায় জিতে তাঁর মুম্বাই আগমন। সেখান থেকেই শুরু ইতিহাস। ‘ফুল অউর পাথর’ (১৯৬৬) তাঁকে একঝটকায় বলিউডের অ্যাকশন নায়কে পরিণত করে। পরের দুই দশকজুড়ে তিনি হয়ে ওঠেন হিন্দি সিনেমার এক অপ্রতিরোধ্য মুখ ‘শোলে’, ‘চুপকে চুপকে’, ‘জাদুগর’, ‘ধর্ম বীর’, ‘দোস্ত’, ‘আনপড়’, ‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’-প্রতিটি চলচ্চিত্রেই তিনি যেন নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেছেন।
ধর্মেন্দ্রর জীবনের বড় অধ্যায় হেমা মালিনীকে ঘিরে। ১৯৮০ সালে এই জুটির বিয়ে হয়েছিল, যা বলিউডের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাগুলোর একটি। একসঙ্গে তাঁরা কাজ করেছেন ৩০টির বেশি ছবিতে। ‘সীতা অউর গীতা’, ‘ড্রিমগার্ল’, ‘শরীফ বদমাশ’, জুগনু, দোস্ত আজও জনপ্রিয়। প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কৌরের সংসারের ধর্মেন্দ্রর দুই পুত্র সানি ও ববি দেওল দুজনেই আজ বলিউডের পরিচিত মুখ।
সানা/ওআ/১২/১১/২০২৫
























