মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি: মুন্সিগঞ্জ সদরের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে এক পক্ষের ৮ জন গুলিবিদ্ধসহ ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে ইউনিয়নটির মুন্সিকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উজির আহমেদ এবং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ওয়াহিদ রায়হানের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়।
গুলিবিদ্ধরা সবাই উজির আহমেদ পক্ষের। আহত ব্যক্তিরা হলেন সাইদুল মাদবর (৪৫), মজনু সরকার (৫৫), শামীম সরকার (২৭), জাহাঙ্গীর সরকার (৩৫), নজরুল সরকার (৬৫), শরীফ মাদবর (৬৫), সোহেল (৩৫) ও লিটন (২৫)। এর মধ্যে সোহেল ও লিটনকে ঢাকায় পাঠানো করা হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের সবার বাড়ি মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উজির আহমেদের সঙ্গে ওয়াহিদ রায়হানের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। সেই দ্বন্দ্ব দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পক্ষ দুটির মধ্যে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা চলছিল। সম্প্রতি মুন্সিকান্দি এলাকায় উজির আহমেদ পক্ষ ড্রেজারের পাইপলাইন টানে। দুই দিন আগে রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা পাইগুলো ভেঙে দেয়। এ নিয়ে গত দুই পক্ষের মধ্যে আবারও উত্তেজনা চলছিল। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাত আটটার দিকে মুন্সিকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। সে সময় ওয়াহিদ পক্ষের ১০-১৫ জনের একটি দল উজির আহমেদ পক্ষের লোকজনের ওপর গুলি চালায় বলে অভিযোগ। এতে আটজন গুলিবিদ্ধ হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকা থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আহমেদ কবির জানান, রাত ৯টার দিকে আহত অবস্থায় সাতজনকে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের শরীরে ছররা গুলিজাতীয় কিছুর চিহ্ন রয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুজন মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্যরা নিজেদের ইচ্ছায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে চলে গেছেন বলে শুনেছেন। এ বিষয়ে উজির আহমেদ বলেন, ওয়াহিদ আওয়ামী লীগ নিয়ে দল বানাচ্ছেন। বিনা উসকানিতে ওয়াহিদ পক্ষের লোকজন তাঁর লোকজনের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এতে ৮ জন গুলিবিদ্ধসহ ১০ থেকে ১২ জন আহত হয়েছেন। বেশ কয়েকজনকে ইতিমধ্যে গুরুতর অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ওয়াহিদ রায়হানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম শুক্রবার রাত পৌনে ১২টার দিকে বলেন, ‘ঘটনার খবর পাওয়ামাত্র আমরা ঘটনাস্থলে যাই। বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এলাকায় বিশেষ অভিযান চলছে।’
সানা/আপ্র/০৬/০৯/২০২৫