ঢাকা ০৫:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

মুদ্রাস্ফীতির জেরে তুরস্কে রুটির দোকানে দীর্ঘলাইন

  • আপডেট সময় : ০১:০৯:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২১
  • ১০৫ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : ইস্তাম্বুলের উস্কুদার পাড়ায় নিয়াজী টপরাক নামের একজন রৌদ্রোজ্জ্বল বিকেলে বেঞ্চে বসে পত্রিকা পড়ছিলেন। তিনি আসলে তাজা রুটির জন্য অপেক্ষা করছেন। অন্যদিকে তার কাছাকাছি কিয়স্কে কম দামের রুটির দোকানে অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়েছেন। ইস্তাম্বুল হাল্ক একমেক বা পাবলিক ব্রেড ভর্তুকি দিয়ে একটি ২৫০ গ্রামের রুটি বিক্রি করছে এক দশমিক ২৫ লিরায়। যা অন্যান্য দোকানে বিক্রি হয় দুই দশমিক ৫০ লিরায়। দামের পার্থক্য সবার কাছেই স্পষ্ট। তাই প্রতিদিন শত শত মানুষ টাকা বাঁচাতে এসব দোকানে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ায়। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ৭১ বছর বয়সী টপরাক বলেন, খাবার থেকে শুরু করে রুটি, জামা থেকে শুরু করে মোজা সব কিছুই অনেক ব্যয়বহুল। আমি কর্মস্থল থেকে পাঁচ বছর আগে অবসর নিয়েছি। সম্প্রতি অর্থের অভাবে আমি সন্তানদের নিয়ে অন্যত্র এসেছি। সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আমি মাসে আটশ লিরা পাই। বেঁচে থাকার জন্য এ অর্থ জন্য যথেষ্ট নয়। তিনি বলেন, আমাদের পরিবারের সদস্য চারজন। বাসা ভাড়া বাবদ খরচ হয় দুই হাজার লিরা। প্রত্যেক দিন দোকান থেকে চারটি পাউরুটি সংগ্রহ করেন তিনি। এমন সংকটময় সময়ে অর্থ বাঁচানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলেও জানান তিনি। এ সব সমস্যার প্রধান কারণ তুর্কি মুদ্রার দরপতন। এর প্রভাব পড়েছে দেশটির বাজার ব্যবস্থায়। বেড়ে গেছে সব পণ্যের দাম। চলতি বছরের নভেম্বরে মার্কিন ডলারের বিপরীতে তুর্কি মুদ্রার দর কমেছে ৪৮ শতাংশ। একই মাসে তুরস্কের বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতির হার এক লাফে দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক তিন শতাংশে। দেশটির সরকারি পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে। মুদ্রাস্ফীতির ফলে খাদ্য, বাসা ভাড়া ও বিদ্যুতের দাম বেড়েছে দেশটিতে। ইস্তাম্বুল পৌরসভার বর্তমান মেয়র হচ্ছেন একরেম ইমামোগ্লুর। তিনি বিরোধী রিপাবলিকান পিপলস পার্টির নেতা। পৌরসভার নিজস্ব তথ্যানুযায়ী শহরটির জীবনযাত্রার ব্যয় এক বছরের মধ্যে ৫০ শতাংশ বেড়েছে। ইস্তাম্বুল পরিসংখ্যান কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, গমের দাম ১০৯ শতাংশ, সূর্যমুখী তেলে দাম ১৩৭ শতাংশ, টয়লেট পেপারের দাম ৯০ শতাংশ, চিনির দাম ৯০ শতাংশ ও প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ১০২ শতাংশ বেড়েছে।
সম্প্রতি দেশটির রেকর্ড পরিমাণ মুদ্রাস্ফীতি রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। বিরোধীদলগুলো আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। বিরোধীরা অভিযোগ করে বলেন, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান সাধারণ মানুষের সমস্যার ব্যাপারে উদাসীন। পরিস্থিতি সামাল দিতে তুর্কি সরকার এরই মধ্যে মন্ত্রিসভায় রদবদল এনেছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মুদ্রাস্ফীতির জেরে তুরস্কে রুটির দোকানে দীর্ঘলাইন

আপডেট সময় : ০১:০৯:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২১

প্রত্যাশা ডেস্ক : ইস্তাম্বুলের উস্কুদার পাড়ায় নিয়াজী টপরাক নামের একজন রৌদ্রোজ্জ্বল বিকেলে বেঞ্চে বসে পত্রিকা পড়ছিলেন। তিনি আসলে তাজা রুটির জন্য অপেক্ষা করছেন। অন্যদিকে তার কাছাকাছি কিয়স্কে কম দামের রুটির দোকানে অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়েছেন। ইস্তাম্বুল হাল্ক একমেক বা পাবলিক ব্রেড ভর্তুকি দিয়ে একটি ২৫০ গ্রামের রুটি বিক্রি করছে এক দশমিক ২৫ লিরায়। যা অন্যান্য দোকানে বিক্রি হয় দুই দশমিক ৫০ লিরায়। দামের পার্থক্য সবার কাছেই স্পষ্ট। তাই প্রতিদিন শত শত মানুষ টাকা বাঁচাতে এসব দোকানে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ায়। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ৭১ বছর বয়সী টপরাক বলেন, খাবার থেকে শুরু করে রুটি, জামা থেকে শুরু করে মোজা সব কিছুই অনেক ব্যয়বহুল। আমি কর্মস্থল থেকে পাঁচ বছর আগে অবসর নিয়েছি। সম্প্রতি অর্থের অভাবে আমি সন্তানদের নিয়ে অন্যত্র এসেছি। সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আমি মাসে আটশ লিরা পাই। বেঁচে থাকার জন্য এ অর্থ জন্য যথেষ্ট নয়। তিনি বলেন, আমাদের পরিবারের সদস্য চারজন। বাসা ভাড়া বাবদ খরচ হয় দুই হাজার লিরা। প্রত্যেক দিন দোকান থেকে চারটি পাউরুটি সংগ্রহ করেন তিনি। এমন সংকটময় সময়ে অর্থ বাঁচানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলেও জানান তিনি। এ সব সমস্যার প্রধান কারণ তুর্কি মুদ্রার দরপতন। এর প্রভাব পড়েছে দেশটির বাজার ব্যবস্থায়। বেড়ে গেছে সব পণ্যের দাম। চলতি বছরের নভেম্বরে মার্কিন ডলারের বিপরীতে তুর্কি মুদ্রার দর কমেছে ৪৮ শতাংশ। একই মাসে তুরস্কের বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতির হার এক লাফে দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক তিন শতাংশে। দেশটির সরকারি পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে। মুদ্রাস্ফীতির ফলে খাদ্য, বাসা ভাড়া ও বিদ্যুতের দাম বেড়েছে দেশটিতে। ইস্তাম্বুল পৌরসভার বর্তমান মেয়র হচ্ছেন একরেম ইমামোগ্লুর। তিনি বিরোধী রিপাবলিকান পিপলস পার্টির নেতা। পৌরসভার নিজস্ব তথ্যানুযায়ী শহরটির জীবনযাত্রার ব্যয় এক বছরের মধ্যে ৫০ শতাংশ বেড়েছে। ইস্তাম্বুল পরিসংখ্যান কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, গমের দাম ১০৯ শতাংশ, সূর্যমুখী তেলে দাম ১৩৭ শতাংশ, টয়লেট পেপারের দাম ৯০ শতাংশ, চিনির দাম ৯০ শতাংশ ও প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ১০২ শতাংশ বেড়েছে।
সম্প্রতি দেশটির রেকর্ড পরিমাণ মুদ্রাস্ফীতি রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। বিরোধীদলগুলো আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। বিরোধীরা অভিযোগ করে বলেন, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান সাধারণ মানুষের সমস্যার ব্যাপারে উদাসীন। পরিস্থিতি সামাল দিতে তুর্কি সরকার এরই মধ্যে মন্ত্রিসভায় রদবদল এনেছে।