ঢাকা ০৬:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

মুদ্রাবাজারের অস্থিরতা কাটছে না

  • আপডেট সময় : ০২:৪১:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ জুলাই ২০২২
  • ৬৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : কাটছে না দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজারের অস্থিরতা। অস্বাভাবিক হারে আমদানি ব্যয় বাড়ায় এই অস্থিরতা চলছে মুদ্রাবাজারে। অস্থির ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রতিনিয়ত ডলারের দাম বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডলারের চাহিদা বেশি হওয়ায় ধীরে ধীরে দাম বাড়াচ্ছে। সেইসাথে রিজার্ভ থেকেও প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করছে। এভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তারপরও নিয়ন্ত্রণে আসছে না ডলারের বাজার। তাই বাজার নিয়ন্ত্রণে নতুন কৌশল নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার টাকার মান ধরে রাখার পাশাপাশি মার্জিন বাড়িয়ে আমদানিতে লাগাম দিয়ে ও আমদানি বিকল্প পণ্যের উৎপাদন বাড়িয়ে ডলারের ওপর চাপ কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদায়ী গভর্নর ফজলে কবির। গত ৩০ জুন (বৃহষ্পতিবার) ২০২২-২৩ অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মুদ্রানীতি ঘোষণায় গভর্নর ফজলে কবির বলেন, এবারের মুদ্রানীতির প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও রিজার্ভ ধরে রাখা। মুদ্রানীতির চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে তিনি বলেন, মুদ্রানীতির মূল্য চ্যালেঞ্জ হবে টাকার মান ধরে রাখা, অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি ও বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা। আমদানি বিকল্প পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে নতুন পুনঃ অর্থায়ন স্কিম চালুর ঘোষণা দিয়েছেন গভর্নর। পাশাপাশি বিলাসজাতীয় দ্রব্য, বিদেশি ফল, অশস্য খাদ্যপণ্য, টিনজাত ও প্রক্রিয়াজাত পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করতে ৭৫ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত মার্জিন আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এতে ডলারের ওপর চাপ কমবে। ফলে সুরক্ষিত থাকবে রিজার্ভ ও মুদ্রার বিনিময় হার। এদিকে, মুদ্রাবাজারের অস্থিরতা কাটাতে প্রতিনিয়ত রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সর্বশেষ মঙ্গলবার (২৮ জুন) ৯৩ টাকা ৪৫ পয়সা দামে ৪ কোটি ২০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে। গত ৭ মাসে ৭০০ কোটি ডলারের বেশি বিক্রি করা হয়েছে। ডলারের বিনিময় হারে প্রভাব ফেলতেই তারা বাজারে এই পরিমাণ ডলার ছেড়েছে। সর্বশেষ হিসাব অনুসারে, বাংলাদেশ ব্যাংকের চলমান তারল্য সহায়তার অংশ হিসেবে বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরের ১৮ আগস্টের পর থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ৭৩৪ কোটি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্প্রতি ডলার সংকট বেড়ে যাওয়ায় জুনের ১ তারিখ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ১৪৫ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। আর মে মাসে বিক্রি করে ১০০ কোটি ডলারের কিছু বেশি। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এত ডলার বাজারে ছাড়া হয়নি। এরপরও বাজারের অস্থিরতা কাটছে না। আমদানি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় এই সংকট দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, নিত্যপণ্য আমদানির জন্য বিশেষ করে জ্বালানি-তেলসহ ছয়টি অতি প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির জন্য ব্যাংকগুলিকে এই ধরনের তারল্য সহায়তা দিয়ে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাজারের প্রয়োজনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এই ধরনের বৈদেশিক মুদ্রার তারল্য সহায়তা চালিয়ে যাবে বাংলাদেশ ব্যাংক। জ¦ালানি তেল ছাড়া অন্য পণ্যগুলো হচ্ছে- এলএনজি (তরল প্রাকৃতিক গ্যাস), খাদ্যশস্য, সার, করোনভাইরাস ভ্যাকসিন এবং বিদ্যুৎ। এসব পণ্য আমদানিতে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে চাহিদা অনুযায়ী ডলার সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলমান পদক্ষেপের অংশ হিসাবে, বিদায়ী বছরের ০১ জুন থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর কাছে ১৩৯ কোটি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে মে মাসে যা ছিল ১০৩ কোটি ডলার। এদিকে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী ডলারের যোগান দিতে গিয়ে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন (৪ হাজার ২০০কোটি) ডলারের নিচে নেমে এসেছে। গত বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪১ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার।

বাজারে চাহিদার তুলনায় ডলারের সরবরাহ কম। সে কারণে প্রতিদিনই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আন্তব্যাংক দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডলারের দাম বাড়ায় রপ্তানিকারক ও প্রবাসীরা লাভবান হলেও আমদানিকারকদের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। ব্যাংকাররা বলছেন, চাহিদা বাড়ায় ডলারের দাম বাড়ছে। অনেক বিদেশি ব্যাংক ডলার ৯৫/৯৬ টাকায় কিনছে। এখন দর ঠিক রাখতে হলে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া ভালো। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারণ করা রেটে কেনাবচা করছে না অধিকাংশ ব্যাংক। ফলে মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা বাড়ছে। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই ডলারের দাম বাজারের ওপর নির্ভয় করে। আমাদেরও সেই দিকেই যাওয়া উচিত। তাদের মতে, ডলার নিয়ে দেশের মুদ্রাবাজারে এখন অস্থিরতা বিরাজ করছে। শিগগিরই এ সংকট কমার কোনো লক্ষণ নেই। এ সংকটের প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশ ব্যাংকে গচ্ছিত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। পাশাপাশি ব্যাংক ব্যবস্থায় নগদ টাকারও সংকট দেখা দিয়েছে। কারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি করে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে। এতে চলতি হিসাবে লেনদেন ভারসাম্যেও ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় বিক্রি হয়। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এই একই জায়গায় ‘স্থির’ ছিল ডলারের দর। এরপর থেকেই বাড়তে থাকে মার্কিন ডলারের দর। হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, এই ১০ মাসে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার বিপরীতে ডলারের দর বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, করোনার পর দেশে বিনিয়োগের অনুকুল পরিবেশ ফিরে আসায় শিল্পের কাঁচামাল, মূলধনি যন্ত্রপাতিসহ সব ধরনের পণ্যের আমদানি বেড়ে গিয়েছিল। এছাড়া বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল, খাদ্যপণ্যসহ সব পণের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণেও আমদানি খরচ বাড়ছিল। তিনি বলেন, আমদানি কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সরকারও কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। আশা করছি, এখন আমদানি ধীরে ধীরে কমে আসবে। মুদ্রাবাজারও স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ড. ইউনূসকে ডি-লিট ডিগ্রি দিলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

মুদ্রাবাজারের অস্থিরতা কাটছে না

আপডেট সময় : ০২:৪১:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ জুলাই ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : কাটছে না দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজারের অস্থিরতা। অস্বাভাবিক হারে আমদানি ব্যয় বাড়ায় এই অস্থিরতা চলছে মুদ্রাবাজারে। অস্থির ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রতিনিয়ত ডলারের দাম বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডলারের চাহিদা বেশি হওয়ায় ধীরে ধীরে দাম বাড়াচ্ছে। সেইসাথে রিজার্ভ থেকেও প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করছে। এভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তারপরও নিয়ন্ত্রণে আসছে না ডলারের বাজার। তাই বাজার নিয়ন্ত্রণে নতুন কৌশল নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার টাকার মান ধরে রাখার পাশাপাশি মার্জিন বাড়িয়ে আমদানিতে লাগাম দিয়ে ও আমদানি বিকল্প পণ্যের উৎপাদন বাড়িয়ে ডলারের ওপর চাপ কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদায়ী গভর্নর ফজলে কবির। গত ৩০ জুন (বৃহষ্পতিবার) ২০২২-২৩ অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মুদ্রানীতি ঘোষণায় গভর্নর ফজলে কবির বলেন, এবারের মুদ্রানীতির প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও রিজার্ভ ধরে রাখা। মুদ্রানীতির চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে তিনি বলেন, মুদ্রানীতির মূল্য চ্যালেঞ্জ হবে টাকার মান ধরে রাখা, অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি ও বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা। আমদানি বিকল্প পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে নতুন পুনঃ অর্থায়ন স্কিম চালুর ঘোষণা দিয়েছেন গভর্নর। পাশাপাশি বিলাসজাতীয় দ্রব্য, বিদেশি ফল, অশস্য খাদ্যপণ্য, টিনজাত ও প্রক্রিয়াজাত পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করতে ৭৫ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত মার্জিন আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এতে ডলারের ওপর চাপ কমবে। ফলে সুরক্ষিত থাকবে রিজার্ভ ও মুদ্রার বিনিময় হার। এদিকে, মুদ্রাবাজারের অস্থিরতা কাটাতে প্রতিনিয়ত রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সর্বশেষ মঙ্গলবার (২৮ জুন) ৯৩ টাকা ৪৫ পয়সা দামে ৪ কোটি ২০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে। গত ৭ মাসে ৭০০ কোটি ডলারের বেশি বিক্রি করা হয়েছে। ডলারের বিনিময় হারে প্রভাব ফেলতেই তারা বাজারে এই পরিমাণ ডলার ছেড়েছে। সর্বশেষ হিসাব অনুসারে, বাংলাদেশ ব্যাংকের চলমান তারল্য সহায়তার অংশ হিসেবে বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরের ১৮ আগস্টের পর থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ৭৩৪ কোটি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্প্রতি ডলার সংকট বেড়ে যাওয়ায় জুনের ১ তারিখ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ১৪৫ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। আর মে মাসে বিক্রি করে ১০০ কোটি ডলারের কিছু বেশি। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এত ডলার বাজারে ছাড়া হয়নি। এরপরও বাজারের অস্থিরতা কাটছে না। আমদানি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় এই সংকট দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, নিত্যপণ্য আমদানির জন্য বিশেষ করে জ্বালানি-তেলসহ ছয়টি অতি প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির জন্য ব্যাংকগুলিকে এই ধরনের তারল্য সহায়তা দিয়ে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাজারের প্রয়োজনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এই ধরনের বৈদেশিক মুদ্রার তারল্য সহায়তা চালিয়ে যাবে বাংলাদেশ ব্যাংক। জ¦ালানি তেল ছাড়া অন্য পণ্যগুলো হচ্ছে- এলএনজি (তরল প্রাকৃতিক গ্যাস), খাদ্যশস্য, সার, করোনভাইরাস ভ্যাকসিন এবং বিদ্যুৎ। এসব পণ্য আমদানিতে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে চাহিদা অনুযায়ী ডলার সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলমান পদক্ষেপের অংশ হিসাবে, বিদায়ী বছরের ০১ জুন থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর কাছে ১৩৯ কোটি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে মে মাসে যা ছিল ১০৩ কোটি ডলার। এদিকে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী ডলারের যোগান দিতে গিয়ে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন (৪ হাজার ২০০কোটি) ডলারের নিচে নেমে এসেছে। গত বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪১ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার।

বাজারে চাহিদার তুলনায় ডলারের সরবরাহ কম। সে কারণে প্রতিদিনই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আন্তব্যাংক দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডলারের দাম বাড়ায় রপ্তানিকারক ও প্রবাসীরা লাভবান হলেও আমদানিকারকদের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। ব্যাংকাররা বলছেন, চাহিদা বাড়ায় ডলারের দাম বাড়ছে। অনেক বিদেশি ব্যাংক ডলার ৯৫/৯৬ টাকায় কিনছে। এখন দর ঠিক রাখতে হলে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া ভালো। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারণ করা রেটে কেনাবচা করছে না অধিকাংশ ব্যাংক। ফলে মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা বাড়ছে। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই ডলারের দাম বাজারের ওপর নির্ভয় করে। আমাদেরও সেই দিকেই যাওয়া উচিত। তাদের মতে, ডলার নিয়ে দেশের মুদ্রাবাজারে এখন অস্থিরতা বিরাজ করছে। শিগগিরই এ সংকট কমার কোনো লক্ষণ নেই। এ সংকটের প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশ ব্যাংকে গচ্ছিত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। পাশাপাশি ব্যাংক ব্যবস্থায় নগদ টাকারও সংকট দেখা দিয়েছে। কারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি করে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে। এতে চলতি হিসাবে লেনদেন ভারসাম্যেও ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় বিক্রি হয়। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এই একই জায়গায় ‘স্থির’ ছিল ডলারের দর। এরপর থেকেই বাড়তে থাকে মার্কিন ডলারের দর। হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, এই ১০ মাসে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার বিপরীতে ডলারের দর বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, করোনার পর দেশে বিনিয়োগের অনুকুল পরিবেশ ফিরে আসায় শিল্পের কাঁচামাল, মূলধনি যন্ত্রপাতিসহ সব ধরনের পণ্যের আমদানি বেড়ে গিয়েছিল। এছাড়া বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল, খাদ্যপণ্যসহ সব পণের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণেও আমদানি খরচ বাড়ছিল। তিনি বলেন, আমদানি কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সরকারও কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। আশা করছি, এখন আমদানি ধীরে ধীরে কমে আসবে। মুদ্রাবাজারও স্বাভাবিক হয়ে আসবে।