ঢাকা ০৩:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

মুদি দোকানি রনির অর্থ-অস্ত্র সহায়তায় খুন শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন

  • আপডেট সময় : ০৩:৪২:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
  • ২৩ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর পুরান ঢাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুন (৫৫) হত্যায় অংশ নেওয়া দুই শুটারসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেফতার দুই শুটার হলেন- ফারুক ওরফে কুত্তা ফারুক ও রবিন। গ্রেফতার বাকি তিনজন হলেন- ইউসুফ, রুবেল ও শামীম।

পুলিশ বলছে, গ্রেফতার ফারুক ও রবিন ছিলেন পেশাদার শুটার। গ্রেফতারের সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি পিস্তল, হত্যাকাণ্ডের পারিশ্রমিক হিসেবে নগদ টাকা ও হত্যার কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

ডিবি পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী রনি। হত্যাকাণ্ডের পর দুই শুটারকে ১ লাখ করে টাকা দেন রনি। রনি ছিলেন একসময়ের মুদি দোকানি, বর্তমানে কাফরুলের বাসিন্দা এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী। আন্ডারওয়ার্ল্ডের আলোচিত জুটি ইমন-মামুনের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য এবং প্রকট। হত্যাকাণ্ডের জন্য রনি নিজে দুই লাখ টাকা দেন এবং অস্ত্রও সরবরাহ করেন। মূলত আন্ডারওয়ার্ল্ডের আধিপত্য বিস্তার নিয়েই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে রনি পলাতক। তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মো. শফিকুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত ১০ নভেম্বর ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রবেশপথে দুজন অস্ত্রধারী গুলি ছোড়ার ঘটনায় তারিক সাইফ মামুন গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হলে তাকে প্রথমে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঢামেকের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হত্যাকাণ্ডের পর গোয়েন্দা পুলিশ ছায়া তদন্ত শুরু করে জানিয়ে ডিবিপ্রধান বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হয়। গোয়েন্দা তথ্য ও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে প্রাথমিকভাবে অপরাধীদের শনাক্ত করা হয়। পরে তাদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে সিলেট সদর, নরসিংদী ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে জড়িতদের গ্রেফতার ও আলামত উদ্ধার করা হয়।

অভিযানকালে আসামি ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে নরসিংদী সদর থানার ভেলানগর থেকে মঙ্গলবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের তল্লাশি করে ফারুক ও রবিনের কাছ থেকে নগদ ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪০ টাকা উদ্ধার করা হয়; যা ফারুক ও রবিনকে মূল পরিকল্পনাকারী রনি হত্যাকাণ্ডের পারিশ্রমিক হিসেবে প্রদান করেন।

ডিবির এই কর্মকর্তা আরো জানান, হত্যাকাণ্ডের পর ফারুক ও রবিন তাদের ব্যবহৃত অস্ত্র ও অব্যবহৃত গুলি রনির নির্দেশে রেন্ট-এ কারের গাড়িচালক রুবেলের কাছে দেন। রুবেল অস্ত্র ও গুলি পাওয়ার পর তা রনিকে মোবাইল ফোনে অবগত করেন। রুবেলকে নিয়ে মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপর আসামি ইউসুফের (পেশায় দর্জি) বাসা থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, ৬ রাউন্ড গুলি ও ২টি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার ইউসুফ এবং রুবেল জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দিন রুবেল অস্ত্র-গুলি ভর্তি একটি ব্যাগ ইউসুফকে তার কাছে রাখার জন্য বুঝিয়ে দিয়ে যান।

ডিবি জানায়, একসময়ের আন্ডারওয়ার্ল্ডের আলোচিত জুটি ইমন-মামুনের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য এবং প্রকট। গত কয়েকদিনে এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের ঘনিষ্ঠ সন্ত্রাসী রনি ফারুকের সহায়তায় একাধিকবার মামুনকে হত্যার পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তখন তারা নতুন পরিকল্পনা করে ১০ নভেম্বরকে হত্যাকাণ্ডের জন্য বেছে নেয়। যেহেতু নিহত মামুনের মামলায় হাজিরার দিন ধার্য ছিল ১০ নভেম্বর। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ঘটনার আগের দিন সন্ধ্যার দিকে মূল পরিকল্পনাকারী রনি তার নিজের বাসায় আরেক সন্ত্রাসী রবিনকে ডেকে নেন।

ডিবিপ্রধান শফিকুল ইসলাম আরো বলেন, ১০ নভেম্বর রনি সকাল ৯টার দিকে রবিনকে ফোন দিয়ে জজ কোর্ট এলাকায় যেতে বলেন এবং সে অনুযায়ী সকাল ১০টার দিকে রবিন তার বন্ধু শামীমের ড্রাইভিংয়ে জজ কোর্ট এলাকায় যান হত্যার মিশনে অংশগ্রহণের জন্য। অন্যদিকে রনির নির্দেশে ফারুকসহ সুমন কামাল ও আরও ১/২ জন জজ কোর্ট এলাকায় উপস্থিত হন। রনির নির্দেশে ফারুক অটোরিকশাযোগে জজ কোর্ট এলাকায় যান।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথমে সুমন ও ফারুককে শুটিংয়ের জন্য রনি নির্দেশ দেন। এক পর্যায়ে সুমন ও রনির মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। রনি তখন সুমনের কাছ থেকে দুটি পিস্তল নিয়ে একটি ফারুক ও অপরটি রবিনকে দিয়ে হত্যার মিশনে পাঠান।

অপর পলাতক কামালের ওপর নির্দেশনা থাকে মামুনকে অনুসরণ করে তার গতিবিধি তাদেরকে জানানো। সে মোতাবেক কামাল মামুনের সঙ্গেই থাকেন এবং তার সংকেত পেয়েই ফারুক ও রবিনকে দেন। এরপর মামুনকে লক্ষ্য করে উপর্যুপরি গুলি ছুড়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন ফারুক ও রবিন। এরপর ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তারা বেড়িবাঁধ হয়ে রায়েরবাজারে যান এবং রনির নির্দেশে রুবেল, ফারুক ও রবিনের কাছ থেকে অস্ত্র-গুলিগুলো গ্রহণ করে তা রুবেলের বন্ধু ইউসুফের কাছে জমা রাখেন। পরে রনির দেওয়া ২ লাখ টাকা রুবেল শুটার ফারুক ও রবিনের প্রত্যেককে ১ লাখ করে টাকা দেন।

পরে রনির পরিকল্পনা ও নির্দেশে রুবেলের মাধ্যমে ফারুক, রবিন ও শামীমকে ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়। রুবেল নিজেও তাদের সফরসঙ্গী হন। ঘটনার পরপরই ফারুক, রবিন, রুবেল ও শামীমের ব্যবহৃত মোবাইলগুলো তাৎক্ষণিকভাবে হাতিয়ে নেন রনি; যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কোনোভাবেই তাদের চিহ্নিত ও অনুসরণ না করতে পারেন।

তারা প্রথমে সিলেটে যান এবং রবিন ও রুবেলের প্রচেষ্টায় ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। সেখানে ভারতে প্রবেশের কোনো সুবিধা না করতে পেরে তারা সাতক্ষীরা সীমান্ত পার হয়ে ভারতে প্রবেশের লক্ষ্যে সিলেট ত্যাগ করেন। এরপর ঢাকার দিকে আসার পথে ডিবি তাদের গ্রেফতার করে।

এসি/আপ্র/১২/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

মুদি দোকানি রনির অর্থ-অস্ত্র সহায়তায় খুন শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন

আপডেট সময় : ০৩:৪২:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর পুরান ঢাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুন (৫৫) হত্যায় অংশ নেওয়া দুই শুটারসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেফতার দুই শুটার হলেন- ফারুক ওরফে কুত্তা ফারুক ও রবিন। গ্রেফতার বাকি তিনজন হলেন- ইউসুফ, রুবেল ও শামীম।

পুলিশ বলছে, গ্রেফতার ফারুক ও রবিন ছিলেন পেশাদার শুটার। গ্রেফতারের সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি পিস্তল, হত্যাকাণ্ডের পারিশ্রমিক হিসেবে নগদ টাকা ও হত্যার কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

ডিবি পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী রনি। হত্যাকাণ্ডের পর দুই শুটারকে ১ লাখ করে টাকা দেন রনি। রনি ছিলেন একসময়ের মুদি দোকানি, বর্তমানে কাফরুলের বাসিন্দা এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী। আন্ডারওয়ার্ল্ডের আলোচিত জুটি ইমন-মামুনের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য এবং প্রকট। হত্যাকাণ্ডের জন্য রনি নিজে দুই লাখ টাকা দেন এবং অস্ত্রও সরবরাহ করেন। মূলত আন্ডারওয়ার্ল্ডের আধিপত্য বিস্তার নিয়েই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে রনি পলাতক। তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মো. শফিকুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত ১০ নভেম্বর ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রবেশপথে দুজন অস্ত্রধারী গুলি ছোড়ার ঘটনায় তারিক সাইফ মামুন গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হলে তাকে প্রথমে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঢামেকের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হত্যাকাণ্ডের পর গোয়েন্দা পুলিশ ছায়া তদন্ত শুরু করে জানিয়ে ডিবিপ্রধান বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হয়। গোয়েন্দা তথ্য ও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে প্রাথমিকভাবে অপরাধীদের শনাক্ত করা হয়। পরে তাদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে সিলেট সদর, নরসিংদী ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে জড়িতদের গ্রেফতার ও আলামত উদ্ধার করা হয়।

অভিযানকালে আসামি ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে নরসিংদী সদর থানার ভেলানগর থেকে মঙ্গলবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের তল্লাশি করে ফারুক ও রবিনের কাছ থেকে নগদ ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪০ টাকা উদ্ধার করা হয়; যা ফারুক ও রবিনকে মূল পরিকল্পনাকারী রনি হত্যাকাণ্ডের পারিশ্রমিক হিসেবে প্রদান করেন।

ডিবির এই কর্মকর্তা আরো জানান, হত্যাকাণ্ডের পর ফারুক ও রবিন তাদের ব্যবহৃত অস্ত্র ও অব্যবহৃত গুলি রনির নির্দেশে রেন্ট-এ কারের গাড়িচালক রুবেলের কাছে দেন। রুবেল অস্ত্র ও গুলি পাওয়ার পর তা রনিকে মোবাইল ফোনে অবগত করেন। রুবেলকে নিয়ে মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপর আসামি ইউসুফের (পেশায় দর্জি) বাসা থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, ৬ রাউন্ড গুলি ও ২টি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার ইউসুফ এবং রুবেল জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দিন রুবেল অস্ত্র-গুলি ভর্তি একটি ব্যাগ ইউসুফকে তার কাছে রাখার জন্য বুঝিয়ে দিয়ে যান।

ডিবি জানায়, একসময়ের আন্ডারওয়ার্ল্ডের আলোচিত জুটি ইমন-মামুনের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য এবং প্রকট। গত কয়েকদিনে এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের ঘনিষ্ঠ সন্ত্রাসী রনি ফারুকের সহায়তায় একাধিকবার মামুনকে হত্যার পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তখন তারা নতুন পরিকল্পনা করে ১০ নভেম্বরকে হত্যাকাণ্ডের জন্য বেছে নেয়। যেহেতু নিহত মামুনের মামলায় হাজিরার দিন ধার্য ছিল ১০ নভেম্বর। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ঘটনার আগের দিন সন্ধ্যার দিকে মূল পরিকল্পনাকারী রনি তার নিজের বাসায় আরেক সন্ত্রাসী রবিনকে ডেকে নেন।

ডিবিপ্রধান শফিকুল ইসলাম আরো বলেন, ১০ নভেম্বর রনি সকাল ৯টার দিকে রবিনকে ফোন দিয়ে জজ কোর্ট এলাকায় যেতে বলেন এবং সে অনুযায়ী সকাল ১০টার দিকে রবিন তার বন্ধু শামীমের ড্রাইভিংয়ে জজ কোর্ট এলাকায় যান হত্যার মিশনে অংশগ্রহণের জন্য। অন্যদিকে রনির নির্দেশে ফারুকসহ সুমন কামাল ও আরও ১/২ জন জজ কোর্ট এলাকায় উপস্থিত হন। রনির নির্দেশে ফারুক অটোরিকশাযোগে জজ কোর্ট এলাকায় যান।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথমে সুমন ও ফারুককে শুটিংয়ের জন্য রনি নির্দেশ দেন। এক পর্যায়ে সুমন ও রনির মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। রনি তখন সুমনের কাছ থেকে দুটি পিস্তল নিয়ে একটি ফারুক ও অপরটি রবিনকে দিয়ে হত্যার মিশনে পাঠান।

অপর পলাতক কামালের ওপর নির্দেশনা থাকে মামুনকে অনুসরণ করে তার গতিবিধি তাদেরকে জানানো। সে মোতাবেক কামাল মামুনের সঙ্গেই থাকেন এবং তার সংকেত পেয়েই ফারুক ও রবিনকে দেন। এরপর মামুনকে লক্ষ্য করে উপর্যুপরি গুলি ছুড়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন ফারুক ও রবিন। এরপর ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তারা বেড়িবাঁধ হয়ে রায়েরবাজারে যান এবং রনির নির্দেশে রুবেল, ফারুক ও রবিনের কাছ থেকে অস্ত্র-গুলিগুলো গ্রহণ করে তা রুবেলের বন্ধু ইউসুফের কাছে জমা রাখেন। পরে রনির দেওয়া ২ লাখ টাকা রুবেল শুটার ফারুক ও রবিনের প্রত্যেককে ১ লাখ করে টাকা দেন।

পরে রনির পরিকল্পনা ও নির্দেশে রুবেলের মাধ্যমে ফারুক, রবিন ও শামীমকে ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়। রুবেল নিজেও তাদের সফরসঙ্গী হন। ঘটনার পরপরই ফারুক, রবিন, রুবেল ও শামীমের ব্যবহৃত মোবাইলগুলো তাৎক্ষণিকভাবে হাতিয়ে নেন রনি; যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কোনোভাবেই তাদের চিহ্নিত ও অনুসরণ না করতে পারেন।

তারা প্রথমে সিলেটে যান এবং রবিন ও রুবেলের প্রচেষ্টায় ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। সেখানে ভারতে প্রবেশের কোনো সুবিধা না করতে পেরে তারা সাতক্ষীরা সীমান্ত পার হয়ে ভারতে প্রবেশের লক্ষ্যে সিলেট ত্যাগ করেন। এরপর ঢাকার দিকে আসার পথে ডিবি তাদের গ্রেফতার করে।

এসি/আপ্র/১২/১১/২০২৫