স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক: শরীরের গুরুত্বপূর্ণ এক অঙ্গ হলো কিডনি। জীবনযাপনে অনিয়ম ও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন রোগের কাণে কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ে। অন্যান্য ‘নীরব ঘাতক’ রোগের মতো প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি রোগেরও কোনো উপসর্গ সেভাবে দেখা দেয় না। এ কারণে নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ করা জরুরি। জানলে অবাক হবেন, কিডনির সমস্যায় বিশ্বব্যাপী প্রায় ২ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ভুগছেন। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা কিডনির বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ সবচেয়ে গুরুতর কিডনি সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। যখন কিডনি ক্রমাগত ক্ষতির সম্মুখীন হয় তখন এই অঙ্গ রক্ত থেকে বর্জ্য ও তরল ফিল্টার করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
কিডনির বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মধ্যে আছে-
১. ফ্যাব্রি রোগ
২. সিস্টিনোসিস
৩. আইজিএ নেফ্রোপ্যাথি
৪. লুপাস নেফ্রাইটিস
৫. পলিসিস্টিক কিডনি রোগ
মুখের কোন লক্ষণ কিডনির সমস্যার ইঙ্গিত দেয়?
এক্সপ্রেস.কো.ইউকে’র এক প্রতিবেদনে ডা. পলা অলিভেরা বলেছেন, মুখের দুর্গন্ধ কিডনি সমস্যার একটি স্পষ্ট লক্ষণ হতে পারে। শরীরে অতিরিক্ত ইউরিয়া জমা হওয়ার কারণে এমনটি ঘটে। ইউরিয়া হলো একটি যৌগ, যা শরীরের কোষ দ্বারা ব্যবহৃত প্রোটিনের প্রাথমিক নাইট্রোজেনাস প্রস্রাবের সঙ্গে নির্গত হয়। এই বিশেষজ্ঞের মতে, কিডনির সমস্যার কারণে শরীরে ইউরিয়া জমা হয়। অতিরিক্ত ইউরিয়া মুখের শ্বাস ও স্বাদ প্রভাব ফেলে। কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে বিভিন্ন খনিজ জমতে শুরু করে। সেগুলো রক্তের প্রবাহে বেড়ে যায় পরবর্তী সময়ে। এক্ষেত্রে মুখে একটি ধাতব স্বাদ ও নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। মায়ো ক্লিনিকের মতে, উচ্চ (ব্লাড ইউরিয়া নাইট্রোজেন) বিউেইএন লেভেল মানে আপনার কিডনি ভালোভাবে কাজ করছে না। বিউইএন’র মাত্রা ডিহাইড্রেশনের কারণেও হতে পারে।
কীভাবে শরীরে ইউরিয়ার মাত্রা কমাবেন?
শরীরে ইউরিয়ার মাত্রা বেড়ে গেলে, একজনকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রোটিন গ্রহণ কমাতে হবে, উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার যেমন- লাল মাংস, মাছ, দুগ্ধজাত খাবার, মটরশুটি, বাদাম ও শস্য খাওয়া এড়াতে হবে। হাইড্রেটেড থাকা ও প্রচুর পরিমাণে পানি পান করাও শরীরে বিইউএন’র মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। বেশি পানি পান করলে বারবার প্রস্রাবের চাপ বাড়বে ও শরীর থেকে আরও ইউরিয়া ও ক্রিয়েটিনিন বেড়িয়ে যাবে।
কিডনি সমস্যার অন্যান্য লক্ষণ
মায়ো ক্লিনিকের মতে, বমি বমি ভাব ও বমি, পেশিতে খিঁচুনি, ক্ষুধা কমে যাওয়া, পা ও গোড়ালি ফুলে যাওয়া, শুষ্ক ও চুলকানি ত্বক, শ্বাসকষ্ট, ঘুমের সমস্যা, খুব বেশি বা খুব কম প্রস্রাব করা কিডনির কিছু সাধারণ লক্ষণ। প্রাথমিক অবস্থায় কিডনির রোগ শনাক্ত করা গেলে কিডনি ফেইলিওর প্রতিরোধ করা যায়। এর সঙ্গে সঙ্গে কিডনির স্বাস্থ্যের প্রতি সবার আরও যত্নবান হতে হবে।
মুখের দুর্গন্ধও হতে পারে কিডনির সমস্যার লক্ষণ
জনপ্রিয় সংবাদ