ঢাকা ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

মিয়ানমারে লড়াই : পিছু হটেছে অভ্যুত্থানবিরোধী যোদ্ধারা

  • আপডেট সময় : ১১:২১:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মে ২০২১
  • ১১২ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের চিন রাজ্যের মিনদাত শহরের জান্তাবিরোধী মিলিশিয়া বাহিনীর যোদ্ধারা সেনাবাহিনীর কয়েকদিনের টানা আক্রমণের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। গতকাল রোববার মিনদাতের অভ্যুত্থানবিরোধী ওই সশস্ত্র গোষ্ঠীটির এক সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মিয়ানমারের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চির অনুসারীদের গঠন করা ছায়া ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট বা জাতীয় ঐক্য সরকার সামরিক জান্তাকে হটাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চেয়েছে। অভ্যুত্থানের পর থেকেই সু চি সামরিক জান্তার হাতে বন্দি। তার বিরুদ্ধে দেওয়া বেশ কয়েকটি মামলার বিচারও চলছে।
মিনদাতে লড়াই নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে জান্তার মুখপাত্রকে ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। চিন রাজ্যের পাহাড়ি শহর মিনদাত থেকে ভারত সীমান্ত প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে। ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের পর টালমাটাল মিয়ানমারে যত তীব্র লড়াই হয়েছে তার মধ্যে মিনদাতেরটা অন্যতম। টানা বিক্ষোভ, ধর্মঘট ও নিত্যনতুন মিলিশিয়া বাহিনীর উদ্ভবও দেশটিকে অস্থির করে রেখেছে।
‘মুখোমুখি লড়াই এড়াতে, শহরের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে উদ্বেগ থেকে আমরা পিছু হটেছি,’ বলেছেন অভ্যুত্থানবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীটির এক সদস্য। তিনি জানান, ৪০ হাজারেরও বেশি বাসিন্দার শহরটিতে এখন কেবল নারী ও শিশুরাই আছেন, শহরের বেশিরভাগ অংশই এখন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে।
‘সব বালক ও পুরুষরা লড়াইয়ে নেমেছিল, তারা সবাই এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে,’ বলেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত আরএফএ ওয়েবসাইটে অভ্যুত্থানবিরোধী গোষ্ঠীটির এক সদস্য মিনদাতের লড়াইয়ে তাদের পাঁচ যোদ্ধা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন। ‘তাতমাদাও’ নামে পরিচিত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অনেক সদস্যও এ লড়াইয়ে নিহত হয়েছে বলে দাবি তার। শনিবার সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত একটি টেলিভিশন ‘নীতিজ্ঞানবিবর্জিত লোকেদের’ হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত ও আরও কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছে এবং শৃঙ্খলা ফেরাতে নিরাপত্তা বাহিনী দিনরাত কাজ করছে বলে জানিয়েছিল। মিনদাতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে এ সংঘর্ষের মধ্যে দিয়ে চিনল্যান্ড প্রতিরক্ষা বাহিনীর নাম সামনে এল; সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই চাঙ্গা করতে দেশটিতে নতুন যে কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর জন্ম হয়েছে এটি তার একটি। বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে মিয়ানমারে আগে থেকেই দুই ডজন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয় লড়াই চালিয়ে আসছে। চিনল্যান্ড প্রতিরক্ষা বাহিনীর যোদ্ধারা জানিয়েছেন, তারা ছায়া জাতীয় ঐক্য সরকারের পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেরও অংশ।
‘তাতমাদাওয়ের সহিংসতা বন্ধ করতে এবং মিনদাতের অসহায় জনগণকে রক্ষায় দ্রত ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আমরা,’ এক বিবৃতিতে বলেছে জাতীয় ঐক্য সরকার। যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন চিন রাজ্যের এ শহরটিতে বেসামরিক হতাহত এড়িয়ে চলতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। মিয়ানমারে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ দূতাবাস মিনদাতের বেসামরিক নাগরিকদের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ‘আমরা বেসামরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধে সামরিক বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি,’ বলা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের বিবৃতিতে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মিয়ানমারে লড়াই : পিছু হটেছে অভ্যুত্থানবিরোধী যোদ্ধারা

আপডেট সময় : ১১:২১:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মে ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের চিন রাজ্যের মিনদাত শহরের জান্তাবিরোধী মিলিশিয়া বাহিনীর যোদ্ধারা সেনাবাহিনীর কয়েকদিনের টানা আক্রমণের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। গতকাল রোববার মিনদাতের অভ্যুত্থানবিরোধী ওই সশস্ত্র গোষ্ঠীটির এক সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মিয়ানমারের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চির অনুসারীদের গঠন করা ছায়া ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট বা জাতীয় ঐক্য সরকার সামরিক জান্তাকে হটাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চেয়েছে। অভ্যুত্থানের পর থেকেই সু চি সামরিক জান্তার হাতে বন্দি। তার বিরুদ্ধে দেওয়া বেশ কয়েকটি মামলার বিচারও চলছে।
মিনদাতে লড়াই নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে জান্তার মুখপাত্রকে ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। চিন রাজ্যের পাহাড়ি শহর মিনদাত থেকে ভারত সীমান্ত প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে। ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের পর টালমাটাল মিয়ানমারে যত তীব্র লড়াই হয়েছে তার মধ্যে মিনদাতেরটা অন্যতম। টানা বিক্ষোভ, ধর্মঘট ও নিত্যনতুন মিলিশিয়া বাহিনীর উদ্ভবও দেশটিকে অস্থির করে রেখেছে।
‘মুখোমুখি লড়াই এড়াতে, শহরের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে উদ্বেগ থেকে আমরা পিছু হটেছি,’ বলেছেন অভ্যুত্থানবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীটির এক সদস্য। তিনি জানান, ৪০ হাজারেরও বেশি বাসিন্দার শহরটিতে এখন কেবল নারী ও শিশুরাই আছেন, শহরের বেশিরভাগ অংশই এখন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে।
‘সব বালক ও পুরুষরা লড়াইয়ে নেমেছিল, তারা সবাই এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে,’ বলেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত আরএফএ ওয়েবসাইটে অভ্যুত্থানবিরোধী গোষ্ঠীটির এক সদস্য মিনদাতের লড়াইয়ে তাদের পাঁচ যোদ্ধা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন। ‘তাতমাদাও’ নামে পরিচিত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অনেক সদস্যও এ লড়াইয়ে নিহত হয়েছে বলে দাবি তার। শনিবার সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত একটি টেলিভিশন ‘নীতিজ্ঞানবিবর্জিত লোকেদের’ হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত ও আরও কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছে এবং শৃঙ্খলা ফেরাতে নিরাপত্তা বাহিনী দিনরাত কাজ করছে বলে জানিয়েছিল। মিনদাতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে এ সংঘর্ষের মধ্যে দিয়ে চিনল্যান্ড প্রতিরক্ষা বাহিনীর নাম সামনে এল; সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই চাঙ্গা করতে দেশটিতে নতুন যে কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর জন্ম হয়েছে এটি তার একটি। বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে মিয়ানমারে আগে থেকেই দুই ডজন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয় লড়াই চালিয়ে আসছে। চিনল্যান্ড প্রতিরক্ষা বাহিনীর যোদ্ধারা জানিয়েছেন, তারা ছায়া জাতীয় ঐক্য সরকারের পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেরও অংশ।
‘তাতমাদাওয়ের সহিংসতা বন্ধ করতে এবং মিনদাতের অসহায় জনগণকে রক্ষায় দ্রত ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আমরা,’ এক বিবৃতিতে বলেছে জাতীয় ঐক্য সরকার। যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন চিন রাজ্যের এ শহরটিতে বেসামরিক হতাহত এড়িয়ে চলতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। মিয়ানমারে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ দূতাবাস মিনদাতের বেসামরিক নাগরিকদের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ‘আমরা বেসামরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধে সামরিক বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি,’ বলা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের বিবৃতিতে।