আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জাতিসংঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে হত্যা অথবা আহত করার পরিকল্পনার অভিযোগে দেশটির দুই নাগরিককে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নির কার্যালয়ের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, রাষ্ট্রদূত খিও মো তানকে পদত্যাগে বাধ্য করতে তার ওপর হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন গ্রেপ্তার মিয়ানমারের নাগরিক ফায়ো হাইন তুত (২০) এবং ইয়ে হাইন জ (২৮)।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি অড্রে স্ট্রাউস বলেন, ‘ফায়ো হাইন তুত এবং ইয়ে হাইন জ আমেরিকার ভূখ-ে কোনো বিদেশি কর্মকর্তার ওপর হামলার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জাতিসংঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে মারাত্মকভাবে আহত কিংবা হত্যার ছক কষছিলেন।’
রাষ্ট্রদূত খিও জাতিসংঘে মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্ব করলেও গত ফেব্রুয়ারিতে গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করা সামরিক বাহিনীর সমালোচক হিসেবে পরিচিত। সামরিক শাসক রাষ্ট্রদূত খিওকে বরখাস্ত করলেও বিশ্ব সংস্থায় এখনও তিনি বেসরকারি সরকারের প্রতিনিধিত্ব করছেন।
রয়টার্স বলছে, রাষ্ট্রদূতের হামলা চালাতে থাইল্যান্ডের এক অস্ত্র ব্যবসায়ীর ষড়যন্ত্রে যুক্ত হয়েছিলেন গ্রেপ্তার মিয়ানমারের দুই নাগরিক। থ্যাইল্যান্ডের ওই ব্যবসায়ী মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কাছেও অস্ত্র বিক্রি করেন।
অভিযোগকারীর তথ্য অনুযায়ী, ফায়ো হাইন তুত এফবিআইকে জানিয়েছেন, থাই অস্ত্র ব্যবসায়ী অনলাইনে তার যোগাযোগ করে রাষ্ট্রদূতের ওপর হামলা এবং তাকে পদত্যাগে বাধ্য করার লোকজন ভাড়া করতে অর্থ দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন। রাষ্ট্রদূত পদত্যাগ না করলে হামলাকারীরা তাকে মেরে ফেলতে পারবে, এমনটাও বলেছিলেন ওই অস্ত্র ব্যবসায়ী।
রাষ্ট্রদূতের গাড়ি যেন দুর্ঘটনায় পড়ে, সেজন্য সেটি নষ্ট করতে অস্ত্র ব্যবসায়ী ও ফায়ো হাইন তুত একটি পরিকল্পনাও করেছিলেন।
হামলার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ফায়ো হাইন তুতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ইয়ে হাইন জ এবং এজন্য জুলাইতে তাকে দুই দফায় চার হাজার ডলার দেওয়া হয়েছিল। ফায়ো হাইন তুত এফবিআইকে জানিয়েছেন, হামলার পর তাকে আরও এক হাজার ডলার দেওয়ার কথা ছিল।
জাতিসংঘে মিয়ানমার মিশনের এক নিরাপত্তারক্ষী এফবিআইকে জানিয়েছেন, রাষ্ট্রদূতের ওপর হামলা চালানো অথবা তাকে হত্যার জন্য একজন হামলাকারী ভাড়া করার পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছেন ফায়ো হাইন তুত।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ফায়ো হাইন তুতের সঙ্গে অর্থ লেনদেনের কথা ইয়ে হাইন জ স্বীকারও করেছেন। ওই অস্ত্র ব্যবসায়ীর হয়ে অন্যদের কাছে অর্থ পাঠাতেন ইয়ে হাইন। থাই অস্ত্র ব্যবসায়ীর অনুরোধে সম্প্রতি দুইজনের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের ব্যবস্থাও করেছিলেন তিনি।
নিউ ইয়র্কের পুলিশ কমিশনার ডারমট শিয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে একজন বিদেশি কর্মকর্তার ওপর সহিংস হামলার চালানোর পরিকল্পনা নিয়ে এসব অপরাধীরা সাগর ও সীমান্ত পাড়িয়ে দিয়েছে ঢুকেছে।’
এদিকে রাষ্ট্রদূতকে হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগ এবং দুইজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে এখনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
মিয়ানমারের দূতকে হত্যার পরিকল্পনা, যুক্তরাষ্ট্রে দুইজন গ্রেপ্তার
ট্যাগস :
মিয়ানমারের দূতকে হত্যার পরিকল্পনা
জনপ্রিয় সংবাদ