ঢাকা ০৮:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

মিরসরাই হয়নি বিদ্যুৎ সরবরাহ, পানিহীন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

  • আপডেট সময় : ০১:১৩:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪
  • ৮২ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা : চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ ও পানি সংকট চরমে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের। কালবৈশাখী ঝড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে যাওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ মে দুপুরে কালবৈশাখী ঝড়ে সব লন্ডভন্ড হয়ে যায়। তিনদিন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। এতে চরম কষ্ট করতে হয় রোগী ও স্বজনদের। মাঝে মাঝে জেনারেটর চালিয়ে চিকিৎসা চললেও ফুয়েল সংকটে তাও সারাক্ষণ চালানো সম্ভব হয় না। ৮ মে সকালে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হলেও ১০ মে সকাল ১০টায় আবারো বিদ্যুৎ চলে যায়। রাত ১০টায় ফের চালু হয়। গতকাল শনিবার সকাল থেকে আবারো বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে হাসপাতাল। উপজেলার জনাদ্দনপুর এলাকার বাসিন্দা মেহেদী হাসান ইমন বলেন, মানুষের প্রাথমিক চিকিৎসার আশ্রয়কেন্দ্র হল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। গতকাল রাতে বন্ধুর বাবাকে দেখতে হাসপাতালে গেলাম। মহিলা ওয়ার্ড এবং শিশু ওয়ার্ডে বিদ্যুৎ নেই। মানুষের কষ্ট দেখে খুব খারাপ লাগছে। শিশু সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা দুর্গাপুর এলাকার গৃহবধূ শারমিন আক্তার বলেন, আমার দুই বছরের ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। হাসপাতালে আসার পর দেখি কারেন্ট নেই, পানি নেই। এখন আমি নিজেও অনেকটা অসুস্থ হয়ে পড়েছি। এদিকে উপজেলার অনেক গ্রামে টানা পাঁচদিন বিদ্যুৎ নেই। উপজেলার মহামায়া এলাকায় শনিবারও ঝড়ে পড়ে যাওয়া বিদ্যুতের কয়েকটি খুঁটি রাস্তায় তারসহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। বিদ্যুৎ না থাকায় পশ্চিম কিছমত জাফরাবাদের আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকায় বিপাকে পড়েছে প্রকল্পের প্রায় ১১০ পরিবার। আশ্রয়ণের মানুষদের পাশাপাশি এলাকার আরও অনেক ঘরে বিদ্যুৎ নেই। পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে আরো ২-৩ দিন লাগতে পারে বলে জানিয়েছে পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তারা। বিদ্যুৎ না থাকায় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, পোল্ট্রি ও গরুর খামার, বাসাবাড়ির বাসিন্দারা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। জানা গেছে, গত সোমবার (৬ মে) দুপুরে হঠাৎ শুরু হওয়া কালবৈশাখী ঝড় প্রায় দেড় ঘণ্টা তাণ্ডব চালিয়েছে। প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়ায় উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার বিভিন্ন জায়গায় গাছ পড়ে ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে ১৭৫টি, ১৫৪০ স্পটে তার ছিড়েছে, ক্রসআর্ম ভেঙেছে ১৫৯টি। মিরসরাই পৌরসদর, বারইয়ারহাট পৌরসভাসহ মহাসড়কের পাশের বড় কয়েকটি বাজারে বিদ্যুৎ দেওয়া হলেও পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে আর ২-৩ দিন লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তারা। মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মিনহাজ উদ্দিন জানান, ৬ মে দুপুর থেকে হাসপাতালে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। আমরা জেনারেটর চালিয়ে রোগীদের সেবা দিয়েছি। ৮ মে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার পর ১০ মে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আবারো সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। জেনারেটর দিয়ে তো পানি তোলা যায় না। আমি পল্লী বিদ্যুতের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করেছি। তারা লোকবল সংকটের কারণে লাইন মেরামত করতে সময় লাগছে বলে জানান। বারইয়ারহাট জোনাল অফিসের জিডিএম মো. হেদায়েত উল্লাহ বলেন, ঝড়ে আমাদের ৬৫টি খুঁটি ভেঙেছে, ১১০০ স্পটে তার ছিঁড়েছে, ১৫০টি ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে, ক্রসআর্ম ভেঙে ১৫০টি। অফিসের ৮ জন লেবারসহ লাইনম্যানরা লাইন মেরামতের জন্য সাধ্যমত কাজ করে যাচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বার বার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন স্থানে লাইন ও খুঁটির কাজ করার কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হচ্ছে। আশা করছি দুই একদিনের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মিরসরাই হয়নি বিদ্যুৎ সরবরাহ, পানিহীন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

আপডেট সময় : ০১:১৩:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা : চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ ও পানি সংকট চরমে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের। কালবৈশাখী ঝড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে যাওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ মে দুপুরে কালবৈশাখী ঝড়ে সব লন্ডভন্ড হয়ে যায়। তিনদিন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। এতে চরম কষ্ট করতে হয় রোগী ও স্বজনদের। মাঝে মাঝে জেনারেটর চালিয়ে চিকিৎসা চললেও ফুয়েল সংকটে তাও সারাক্ষণ চালানো সম্ভব হয় না। ৮ মে সকালে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হলেও ১০ মে সকাল ১০টায় আবারো বিদ্যুৎ চলে যায়। রাত ১০টায় ফের চালু হয়। গতকাল শনিবার সকাল থেকে আবারো বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে হাসপাতাল। উপজেলার জনাদ্দনপুর এলাকার বাসিন্দা মেহেদী হাসান ইমন বলেন, মানুষের প্রাথমিক চিকিৎসার আশ্রয়কেন্দ্র হল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। গতকাল রাতে বন্ধুর বাবাকে দেখতে হাসপাতালে গেলাম। মহিলা ওয়ার্ড এবং শিশু ওয়ার্ডে বিদ্যুৎ নেই। মানুষের কষ্ট দেখে খুব খারাপ লাগছে। শিশু সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা দুর্গাপুর এলাকার গৃহবধূ শারমিন আক্তার বলেন, আমার দুই বছরের ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। হাসপাতালে আসার পর দেখি কারেন্ট নেই, পানি নেই। এখন আমি নিজেও অনেকটা অসুস্থ হয়ে পড়েছি। এদিকে উপজেলার অনেক গ্রামে টানা পাঁচদিন বিদ্যুৎ নেই। উপজেলার মহামায়া এলাকায় শনিবারও ঝড়ে পড়ে যাওয়া বিদ্যুতের কয়েকটি খুঁটি রাস্তায় তারসহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। বিদ্যুৎ না থাকায় পশ্চিম কিছমত জাফরাবাদের আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকায় বিপাকে পড়েছে প্রকল্পের প্রায় ১১০ পরিবার। আশ্রয়ণের মানুষদের পাশাপাশি এলাকার আরও অনেক ঘরে বিদ্যুৎ নেই। পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে আরো ২-৩ দিন লাগতে পারে বলে জানিয়েছে পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তারা। বিদ্যুৎ না থাকায় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, পোল্ট্রি ও গরুর খামার, বাসাবাড়ির বাসিন্দারা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। জানা গেছে, গত সোমবার (৬ মে) দুপুরে হঠাৎ শুরু হওয়া কালবৈশাখী ঝড় প্রায় দেড় ঘণ্টা তাণ্ডব চালিয়েছে। প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়ায় উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার বিভিন্ন জায়গায় গাছ পড়ে ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে ১৭৫টি, ১৫৪০ স্পটে তার ছিড়েছে, ক্রসআর্ম ভেঙেছে ১৫৯টি। মিরসরাই পৌরসদর, বারইয়ারহাট পৌরসভাসহ মহাসড়কের পাশের বড় কয়েকটি বাজারে বিদ্যুৎ দেওয়া হলেও পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে আর ২-৩ দিন লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তারা। মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মিনহাজ উদ্দিন জানান, ৬ মে দুপুর থেকে হাসপাতালে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। আমরা জেনারেটর চালিয়ে রোগীদের সেবা দিয়েছি। ৮ মে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার পর ১০ মে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আবারো সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। জেনারেটর দিয়ে তো পানি তোলা যায় না। আমি পল্লী বিদ্যুতের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করেছি। তারা লোকবল সংকটের কারণে লাইন মেরামত করতে সময় লাগছে বলে জানান। বারইয়ারহাট জোনাল অফিসের জিডিএম মো. হেদায়েত উল্লাহ বলেন, ঝড়ে আমাদের ৬৫টি খুঁটি ভেঙেছে, ১১০০ স্পটে তার ছিঁড়েছে, ১৫০টি ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে, ক্রসআর্ম ভেঙে ১৫০টি। অফিসের ৮ জন লেবারসহ লাইনম্যানরা লাইন মেরামতের জন্য সাধ্যমত কাজ করে যাচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বার বার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন স্থানে লাইন ও খুঁটির কাজ করার কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হচ্ছে। আশা করছি দুই একদিনের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে।