কক্সবাজার সংবাদদাতা : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু থেকে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাতভর গোলা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তবর্তী শাহপরীর দ্বীপ এলাকায়। দেশটির সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘাত চলছে। বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর বুধবার ভোর পর্যন্ত ওপারের গোলার বিকট শব্দে এপারে সীমান্তের বাসিন্দাদের নির্ঘুম রাত কেটেছে। সীমান্তের বাসিন্দারা জানান, টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এবং সাবরাংয়ের পূর্বে নাফ নদের ওপারে মিয়ানমারের মংডু শহরের অবস্থান। নাফ নদ দিয়ে শহরটির প্রবেশপথ খায়েনখালী খালের কাছাকাছি ব্যাপক গোলাবারুদের শব্দ পাওয়া গেছে রাতভর। এলাকাবাসীর ধারণা, রাখাইনে আরাকান আর্মির দখল করা এলাকা পুনরুদ্ধারে জান্তা বাহিনী সারারাত এই হামলা চালিয়েছে। শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা জসিম মাহমুদ বলেন, ‘মিয়ানমারের গোলাবারুদের শব্দের ভয়ে নির্ঘুম রাত কেটেছে। এমন গোলাবারুদের শব্দ আগে পাওয়া যায়নি। মনে হচ্ছিল, মাথার উপরে পাহাড় ভেঙে পড়ছে। বিকট শব্দে নারী ও শিশুরা বেশি ভয়ে ছিল।’ টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানান, মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘাত এখনও চলমান থাকায় সীমান্তবর্তী এলাকায় গোলাবারুদের শব্দ এপারে আসছে। তবে সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকানোর পাশাপাশি বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার রয়েছে। এদিকে, টেকনাফ নাইট্যংপাড়া, পৌরসভার জালিয়াপাড়া, নাজিরপাড়া, সাবরাং, নাফ নদের মোহনায়ও সীমান্ত থেকে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। সীমান্তের লোকজন বলছেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারও বড় ধরনের মর্টারশেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কাঁপছে টেকনাফ। উল্লেখ্য, মংডু শহরে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির জান্তা সরকারের আট মাস ধরে যুদ্ধ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার সীমান্তে নাফ নদে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা দিনরাত টহল দিচ্ছেন। সীমান্তবর্তী সড়কেও টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। সীমান্তে যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি ও কোস্টগার্ড সব সময় প্রস্তুত রয়েছে। সীমান্তে আগের তুলনায় রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের চেষ্টা অনেকটা কমেছে উল্লেখ করে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, মিয়ানমারের সংঘাতপূর্ণ এলাকা বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি হওয়ায় এমন বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে।
জনপ্রিয় সংবাদ