কক্সবাজার প্রতিনিধি: অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘মিয়ানমারে দীর্ঘদিন ধরে গৃহযুদ্ধ ও দাঙ্গা চলছে। সর্বশেষ ৮ ডিসেম্বর মংডু টাউনশীপ দখল করার পর, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ২৭১ কিলোমিটার এলাকা এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ কারণে সীমান্তের ওপারে মাঝে মধ্যে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। কিছু গোলা এপারে এসে পতিত হয়। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় মিয়ানমার সরকার এবং আরাকান আর্মির সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত পরিদর্শন শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, মিয়ানমার সীমান্তের বাংলাদেশের অংশের বিভিন্ন বিওপিতে জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং অন্য বাহিনীর সদস্যদেরও বাড়ানো হয়েছে। নাফ নদীসহ সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে টহল তৎপরতা ও গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার ও পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনী সীমান্তে সার্বক্ষণিক নজরদারি চালাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, মিয়ানমারের সীমান্ত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার সর্বোচ্চ প্রস্তুত রয়েছে। সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশের হাতে রয়েছে। দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, সীমান্তে কোনো ধরনের ভয়ের কারণ নেই। আমাদের বাহিনী ২৪ ঘণ্টা সার্বক্ষণিক টহল দিচ্ছে এবং যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত।
রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয়ের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘২০১৭ সালে বাংলাদেশ ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছিল। এর পরবর্তী সময়ে ২০২৪ সাল পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারি এড়িয়ে প্রায় ৫০-৬০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। কিছু রোহিঙ্গা দেশীয় দালাল চক্রের সহায়তায় অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তাদের প্রতিরোধ করতে স্থানীয়দের সাহায্য প্রয়োজন। এছাড়া, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ৮৭৬ সদস্য বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণ করেছে এবং বিজিবি তাদের আটক করে ফেরত পাঠিয়েছে।
তিনি বলেন, বিজিবি এবং অন্যান্য বাহিনী সীমান্তে সুষ্ঠু নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাদের দায়িত্ব পালন করছে। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং সীমান্ত নিরাপত্তা বজায় রাখতে আমরা প্রতিটি পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রয়েছি। কোনো রোহিঙ্গা কিংবা মিয়ানমারের নাগরিককে অবৈধভাবে এ দেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
পরিদর্শনের সময় বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীসহ কোস্টগার্ড, পুলিশ এবং অন্যান্য বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।