ঢাকা ০২:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

মিনিকেট জমিতে চাষ হয়, এটা বাস্তবতা: কৃষিমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০১:৩৮:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৭১ বার পড়া হয়েছে

গাজীপুর প্রতিনিধি : কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, মিনিকেট ধানটা আমি নিজে দেখেছি। নওগাঁ এলাকায় অনেক জমিতে এ ধান চাষ হয়। যশোর এলাকার কিছু জমিতেও চাষ হয়। যেটা বাজারে পাওয়া যায়, এটাই মিনিকেট। মিনিকেট যে জমিতে চাষ হয়, এটা বাস্তবতা। সেটা কিন্তু অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু ডিলাররা অন্য চালকেও নানা কৌশলে মিনিকেট বলে বিক্রি করে।
গতকাল শনিবার দুপুরে গাজীপুরের জয়দেপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে বার্ষিক গবেষণা কর্মশালায় (২০২১-২০২২) প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিভিন্ন মিল মালিকরা অন্য জাতগুলোকে পলিশ করে মিনিকেট বলে বিক্রি করে। সেটা বন্ধের জন্য আমাদের কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ব্যবসায়ীরা মিল থেকে কোন চাল কিনে পলিশ করে মিনিকেট করছে সেটা আমাদের দেখতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং খাদ্য মন্ত্রণালয় মিলে মাঠ পর্যায়ে এ নিয়ে কাজ করতে হবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘৩০-৪০ বছর আগে দেশের মানুষ মূলত সরিষার তেলই খেতো। পরে একটা পর্যায়ে গিয়ে ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে বিদেশের ওপর আমাদের ৯০ শতাংশ পর্যন্ত নির্ভরশীল হতে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন আবার স্থানীয়ভাবে ভোজ্যতেল উৎপাদন হচ্ছে। সেটি হলো আমাদের কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) বিজ্ঞানীরা, বিনা’র বিজ্ঞানীরা সরিষার অনেক ভালো জাত উদ্ভাবন করেছে। সেগুলোর উৎপাদনশীলতা ভালো। আগে বিঘাতে যেটা দেড় দুই মণ হতো, এখন সেটা প্রতি বিঘা ছয়-সাত মণ হয়। এখন সরিষার গাছ এতো বড় হয়, যেখানে মানুষ গেলে ডুবে যায়। আগে সরিষা গাছ ছিল ছোট ছোট।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেকটা দিক হলো আমনের পরে সরিষা লাগানো হয়। সাধারণত আমন হয় ১৪০-১৬০ দিনে। এই জাতগুলো চাষ করলে তখন আর সরিষা চাষের সময় থাকে না। এখানেও আমাদের বিজ্ঞানীরা ধানের এমন জাত আবিষ্কার করছেন সেটা ১১০-১১৫ দিনে হয়। আমন ও বোরোর মধ্যে যে সময় থাকে সেই সময় সরিষা চাষ করা সম্ভব। ৮০-৮৫ দিনে সরিষা এসে যায়। সরিষা তুলে আবার বোরো চাষে চলে যাওয়া যায়।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এ বছরই আমরা ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। আমাদের কৃষি কর্মকর্তা, টেকনেশিয়ানরা মাঠে কাজ করছে। আমরা একটা পরিকল্পনা নিয়েছি। আগামী তিন বছরের মধ্য ৪০-৫০ শতাংশ ভোজ্যতেল দেশে উৎপাদন করবো। আবার মানুষ সরিষার তেলে ফিরে যাবে। সেই লক্ষ্যে কৃষি উন্নয়নে আমাদের বিজ্ঞানীরা এবং কৃষি মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে কর্মসূচি নিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা সরিষার আবাদ বাড়াতে চাচ্ছি। সরিষা দিয়ে দেশের ভোজ্যতেলের চাহিদা আমরা পূরণ করতে চাচ্ছি।’
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফরের মহাপরিচালক বেনজির আলম, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান এ এফ এম হায়াতুল্লাহ, কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মিনিকেট জমিতে চাষ হয়, এটা বাস্তবতা: কৃষিমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০১:৩৮:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২

গাজীপুর প্রতিনিধি : কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, মিনিকেট ধানটা আমি নিজে দেখেছি। নওগাঁ এলাকায় অনেক জমিতে এ ধান চাষ হয়। যশোর এলাকার কিছু জমিতেও চাষ হয়। যেটা বাজারে পাওয়া যায়, এটাই মিনিকেট। মিনিকেট যে জমিতে চাষ হয়, এটা বাস্তবতা। সেটা কিন্তু অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু ডিলাররা অন্য চালকেও নানা কৌশলে মিনিকেট বলে বিক্রি করে।
গতকাল শনিবার দুপুরে গাজীপুরের জয়দেপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে বার্ষিক গবেষণা কর্মশালায় (২০২১-২০২২) প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিভিন্ন মিল মালিকরা অন্য জাতগুলোকে পলিশ করে মিনিকেট বলে বিক্রি করে। সেটা বন্ধের জন্য আমাদের কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ব্যবসায়ীরা মিল থেকে কোন চাল কিনে পলিশ করে মিনিকেট করছে সেটা আমাদের দেখতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং খাদ্য মন্ত্রণালয় মিলে মাঠ পর্যায়ে এ নিয়ে কাজ করতে হবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘৩০-৪০ বছর আগে দেশের মানুষ মূলত সরিষার তেলই খেতো। পরে একটা পর্যায়ে গিয়ে ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে বিদেশের ওপর আমাদের ৯০ শতাংশ পর্যন্ত নির্ভরশীল হতে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন আবার স্থানীয়ভাবে ভোজ্যতেল উৎপাদন হচ্ছে। সেটি হলো আমাদের কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) বিজ্ঞানীরা, বিনা’র বিজ্ঞানীরা সরিষার অনেক ভালো জাত উদ্ভাবন করেছে। সেগুলোর উৎপাদনশীলতা ভালো। আগে বিঘাতে যেটা দেড় দুই মণ হতো, এখন সেটা প্রতি বিঘা ছয়-সাত মণ হয়। এখন সরিষার গাছ এতো বড় হয়, যেখানে মানুষ গেলে ডুবে যায়। আগে সরিষা গাছ ছিল ছোট ছোট।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেকটা দিক হলো আমনের পরে সরিষা লাগানো হয়। সাধারণত আমন হয় ১৪০-১৬০ দিনে। এই জাতগুলো চাষ করলে তখন আর সরিষা চাষের সময় থাকে না। এখানেও আমাদের বিজ্ঞানীরা ধানের এমন জাত আবিষ্কার করছেন সেটা ১১০-১১৫ দিনে হয়। আমন ও বোরোর মধ্যে যে সময় থাকে সেই সময় সরিষা চাষ করা সম্ভব। ৮০-৮৫ দিনে সরিষা এসে যায়। সরিষা তুলে আবার বোরো চাষে চলে যাওয়া যায়।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এ বছরই আমরা ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। আমাদের কৃষি কর্মকর্তা, টেকনেশিয়ানরা মাঠে কাজ করছে। আমরা একটা পরিকল্পনা নিয়েছি। আগামী তিন বছরের মধ্য ৪০-৫০ শতাংশ ভোজ্যতেল দেশে উৎপাদন করবো। আবার মানুষ সরিষার তেলে ফিরে যাবে। সেই লক্ষ্যে কৃষি উন্নয়নে আমাদের বিজ্ঞানীরা এবং কৃষি মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে কর্মসূচি নিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা সরিষার আবাদ বাড়াতে চাচ্ছি। সরিষা দিয়ে দেশের ভোজ্যতেলের চাহিদা আমরা পূরণ করতে চাচ্ছি।’
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফরের মহাপরিচালক বেনজির আলম, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান এ এফ এম হায়াতুল্লাহ, কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।