ঢাকা ০৯:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫

মিথ্যা তথ্যে চাকরি ও অর্থ আত্মসাৎ: পুতুলের নামে দুই মামলা

  • আপডেট সময় : ০৮:৪৮:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
  • ১১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় (ডব্লিওএইচও) মিথ্যা তথ্যে চাকরি ও সূচনা ফাউন্ডেশনের নামে প্রভাব খাটিয়ে ২০টি ব্যাংক থেকে ৩৩ কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। মামলা দুটির বাদী দুদকের উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক। পুতুল ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও ভারতে পলাতক শেখ হাসিনার মেয়ে।

শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালে তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় নিয়োগ পান। মো. আক্তার হোসেন বলেন, আসামি সায়মা ওয়াজেদ ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিওএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পদে নিয়োগ লাভের উদ্দেশ্যে সংস্থাটিতে ২০২৩ সালে সিভি দেন, যেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) শিক্ষকতা/শিক্ষা ম্যানুয়েল তৈরি বা রিভিউ সম্পর্কিত কার্যক্রমে অংশগ্রহণ না করেও নিজেকে ওই কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত মর্মে মিথ্যা দাবি করে আবেদন করেন। এর মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পদে নিয়োগ লাভ করে দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৮/৪৭১ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তার নামে একটা মামলা করা হয়।

তিনি জানান, আরেক মামলায় আসামি সায়মা ওয়াজেদ অপর আসামি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের সঙ্গে যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে বিএবিভুক্ত ব্যাংকসমূহকে তাদের সিএসআর ফান্ড থেকে বিধিবহির্ভূতভাবে সূচনা ফাউন্ডেশনের অনুকূলে টাকা দিতে চাপ তৈরির জন্য সময়ে সময়ে চিঠি দেন। তৎপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের মে মাসে ১৭টি বাংক বাধ্য হয়ে তাদের সিএসআর খাত হতে মোট ২১ কোটি টাকা প্রদান করে এবং এ প্রক্রিয়ায় সর্বমোট ২০টি ব্যাংক হতে ৩৩ কোটি ৫ লাখ টাকা সূচনা ফাউন্ডেশনের অনুকূলে প্রদানের জন্য বাধ্য করা হয়।

চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে বাধ্য করে আদায়কৃত ওই অর্থ পরবর্তীতে কীভাবে কোন খাতে খরচ হয়েছে সেটি জানার জন্য সূচনা ফাউন্ডেশনের ঠিকানায় অনুসন্ধানকালে চিঠি দেওয়া হলেও কোনো রেকর্ডপত্র পাওয়া যায়নি। যেহেতু প্রতিষ্ঠানটির কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি, তাই ওই অর্থ উত্তোলনপূর্বক/বিভিন্ন ভুয়া রেকর্ডপত্র সৃজনপূর্বক আত্মসাৎ করা হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে, যা মামলা তদন্তকালে খতিয়ে দেখা হবে। এ ধরনের প্রক্রিয়ায় জনহিতকর এবং সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজের জন্য জমাকৃত অর্থের (সিএসআর ফান্ড) এহেন অপব্যয় এবং আত্মসাৎ দণ্ডবিধি এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় সায়মা ওয়াজেদ ও নজরুল ইসলাম মজুমদারের নামে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান দুদক মহাপরিচালক। মামলা তদন্তকালে অন্য কোনো তথ্য উদ্ঘাটিত হলে অথবা অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তা আইনামলে আনা হবে বলেও তিনি জানান।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মিথ্যা তথ্যে চাকরি ও অর্থ আত্মসাৎ: পুতুলের নামে দুই মামলা

আপডেট সময় : ০৮:৪৮:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় (ডব্লিওএইচও) মিথ্যা তথ্যে চাকরি ও সূচনা ফাউন্ডেশনের নামে প্রভাব খাটিয়ে ২০টি ব্যাংক থেকে ৩৩ কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। মামলা দুটির বাদী দুদকের উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক। পুতুল ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও ভারতে পলাতক শেখ হাসিনার মেয়ে।

শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালে তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় নিয়োগ পান। মো. আক্তার হোসেন বলেন, আসামি সায়মা ওয়াজেদ ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিওএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পদে নিয়োগ লাভের উদ্দেশ্যে সংস্থাটিতে ২০২৩ সালে সিভি দেন, যেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) শিক্ষকতা/শিক্ষা ম্যানুয়েল তৈরি বা রিভিউ সম্পর্কিত কার্যক্রমে অংশগ্রহণ না করেও নিজেকে ওই কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত মর্মে মিথ্যা দাবি করে আবেদন করেন। এর মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পদে নিয়োগ লাভ করে দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৮/৪৭১ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তার নামে একটা মামলা করা হয়।

তিনি জানান, আরেক মামলায় আসামি সায়মা ওয়াজেদ অপর আসামি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের সঙ্গে যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে বিএবিভুক্ত ব্যাংকসমূহকে তাদের সিএসআর ফান্ড থেকে বিধিবহির্ভূতভাবে সূচনা ফাউন্ডেশনের অনুকূলে টাকা দিতে চাপ তৈরির জন্য সময়ে সময়ে চিঠি দেন। তৎপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের মে মাসে ১৭টি বাংক বাধ্য হয়ে তাদের সিএসআর খাত হতে মোট ২১ কোটি টাকা প্রদান করে এবং এ প্রক্রিয়ায় সর্বমোট ২০টি ব্যাংক হতে ৩৩ কোটি ৫ লাখ টাকা সূচনা ফাউন্ডেশনের অনুকূলে প্রদানের জন্য বাধ্য করা হয়।

চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে বাধ্য করে আদায়কৃত ওই অর্থ পরবর্তীতে কীভাবে কোন খাতে খরচ হয়েছে সেটি জানার জন্য সূচনা ফাউন্ডেশনের ঠিকানায় অনুসন্ধানকালে চিঠি দেওয়া হলেও কোনো রেকর্ডপত্র পাওয়া যায়নি। যেহেতু প্রতিষ্ঠানটির কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি, তাই ওই অর্থ উত্তোলনপূর্বক/বিভিন্ন ভুয়া রেকর্ডপত্র সৃজনপূর্বক আত্মসাৎ করা হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে, যা মামলা তদন্তকালে খতিয়ে দেখা হবে। এ ধরনের প্রক্রিয়ায় জনহিতকর এবং সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজের জন্য জমাকৃত অর্থের (সিএসআর ফান্ড) এহেন অপব্যয় এবং আত্মসাৎ দণ্ডবিধি এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় সায়মা ওয়াজেদ ও নজরুল ইসলাম মজুমদারের নামে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান দুদক মহাপরিচালক। মামলা তদন্তকালে অন্য কোনো তথ্য উদ্ঘাটিত হলে অথবা অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তা আইনামলে আনা হবে বলেও তিনি জানান।