ঢাকা ১১:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫

মা হতে না পারার ঝুঁকিতে জাপানের ৪২ শতাংশ নারী

  • আপডেট সময় : ০১:৪৪:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ অগাস্ট ২০২৩
  • ১০৭ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : জাপানের বর্তমানে যে বার্ষিক জন্মহার, তা অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে অন্তত ৪২ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক নারী হয়তো কখনও মা হতে পারবেন না। পুরুষদের ক্ষেত্রে এই হার আরও বেশি, শতকরা ৫০ ভাগ। জাপানের সরকারি সংস্থা ন্যাশাল ইনস্টিটিউট অব পপুলেশন অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি রিসার্চ সম্প্রতি দেশটির তরুণ সম্প্রদায়কে এই সতর্কবার্তা দিয়েছে বলে বুধবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে জাপানি সংবাদমাধ্যম নিক্কি এশিয়া।
পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর এ নিয়ে তৃতীয়বার দেশের জন্মহার নিয়ে উদ্বেগ জানাল জাপানের সরকার। প্রসঙ্গত, এশিয়ার হাতে গোনা যে কয়েকটি দেশ উন্নত দেশের শ্রেণীভুক্ত, তার মধ্যে সবার ওপরে আছে জাপান; কিন্তু দীর্ঘ তিন দশক ধরে দেশটিতে জন্মহার কেবলই হ্রাস পাচ্ছে। এর মধ্যে গত বছর রেকর্ড পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে জন্মহার। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে জাপানে জন্মগ্রহণ করেছে ৮ লাখেরও কম সংখ্যক শিশু। বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির এত নি¤œহার আগে কখনও দেখেনি জাপান।
উন্নত জীবনযাত্রা হওয়ায় জাপানে সন্তান জন্মদান ও লালন পালনের ব্যয় খুবই উচ্চ। বিশ্বের যেসব দেশে সন্তান জন্ম ও তাকে বড় করে তোলার ব্যয় সবচেয়ে বেশি, সেসবের মধ্যে প্রথম সারিতে আছে জাপান। দেশটির জনসংখ্যা বিষয়ক গবেষণা সংস্থা ইউওয়া পপুলেশন রিসার্চের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সন্তান জন্মদান ও পালনের ক্ষেত্রে জাপান বিশ্বের শীর্ষ তিনটি ব্যয়বহুল দেশের মধ্যে একটি। দেশটিতে প্রতি বছর জন্মহার কমতে থাকার সবচেয়ে বড় কারণ এটি। জাপানের সরকার অবশ্য দম্পতিদের জন্য সন্তান জন্ম ও লালন বাবদ আর্থিক প্রণোদনা দিচ্ছে, তবে তা যথেষ্ট নয়। বর্তমানে প্রণোদনায় যে অর্থ দেওয়া হয়, সন্তান জন্মের পর হাসপাতালের বিল মেটাতেই তা শেষ হয়ে যায়। ফলে সীমিত আয়ের দম্পতিরা স্বাভাকিভাবেই এই প্রণোদনার ওপর নির্ভর করে সন্তান জন্মদানের ঝুঁকি নিতে চান না। এদিকে একদিকে যেমন জন্মহার কমছে, তেমনি অপরদিকে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন, উন্নত পরিষেবা ও উন্নত চিকিৎসাসেবার কারণে গড়আয়ু বাড়ছে জাপানে। ফলে দেশটির জনবিন্যাসে বয়স্ক ও কর্মজীবন থেকে অবসর নেওয়া নারী-পুরুষদের সংখ্যা বাড়ছে, কমছে কর্মক্ষম তরুণ-তরুণীর সংখ্যা। আরও কয়েক বছর যদি এই সংকট চলতে থাকে, তাহলে জাপানের সমাজজীবনে ভয়াবহ বিপর্যয় শুরু হবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন জাপানের সমাজবিজ্ঞানীরা। প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাও এ ব্যাপারে বেশ কয়েকবার প্রকাশ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গত জুন মাসে টোকিওতে একটি সরকারি ডে কেয়ার সেন্টার উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে ফুমিও কিশিদা বলেন, ‘শিগগির যদি জন্মহারে বৃদ্ধি না ঘটে, সেক্ষেত্রে জনসংখ্যাজনিত কারণে ২০৩০ সাল থেকে সামাজিক বিপর্যয়ের অধ্যায়ে প্রবেশ করবে জাপান।’

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রধান উপদেষ্টার জাপান সফর: গুরুত্ব পাবে দক্ষ কর্মী পাঠানো ও বিনিয়োগ

মা হতে না পারার ঝুঁকিতে জাপানের ৪২ শতাংশ নারী

আপডেট সময় : ০১:৪৪:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ অগাস্ট ২০২৩

প্রত্যাশা ডেস্ক : জাপানের বর্তমানে যে বার্ষিক জন্মহার, তা অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে অন্তত ৪২ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক নারী হয়তো কখনও মা হতে পারবেন না। পুরুষদের ক্ষেত্রে এই হার আরও বেশি, শতকরা ৫০ ভাগ। জাপানের সরকারি সংস্থা ন্যাশাল ইনস্টিটিউট অব পপুলেশন অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি রিসার্চ সম্প্রতি দেশটির তরুণ সম্প্রদায়কে এই সতর্কবার্তা দিয়েছে বলে বুধবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে জাপানি সংবাদমাধ্যম নিক্কি এশিয়া।
পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর এ নিয়ে তৃতীয়বার দেশের জন্মহার নিয়ে উদ্বেগ জানাল জাপানের সরকার। প্রসঙ্গত, এশিয়ার হাতে গোনা যে কয়েকটি দেশ উন্নত দেশের শ্রেণীভুক্ত, তার মধ্যে সবার ওপরে আছে জাপান; কিন্তু দীর্ঘ তিন দশক ধরে দেশটিতে জন্মহার কেবলই হ্রাস পাচ্ছে। এর মধ্যে গত বছর রেকর্ড পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে জন্মহার। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে জাপানে জন্মগ্রহণ করেছে ৮ লাখেরও কম সংখ্যক শিশু। বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির এত নি¤œহার আগে কখনও দেখেনি জাপান।
উন্নত জীবনযাত্রা হওয়ায় জাপানে সন্তান জন্মদান ও লালন পালনের ব্যয় খুবই উচ্চ। বিশ্বের যেসব দেশে সন্তান জন্ম ও তাকে বড় করে তোলার ব্যয় সবচেয়ে বেশি, সেসবের মধ্যে প্রথম সারিতে আছে জাপান। দেশটির জনসংখ্যা বিষয়ক গবেষণা সংস্থা ইউওয়া পপুলেশন রিসার্চের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সন্তান জন্মদান ও পালনের ক্ষেত্রে জাপান বিশ্বের শীর্ষ তিনটি ব্যয়বহুল দেশের মধ্যে একটি। দেশটিতে প্রতি বছর জন্মহার কমতে থাকার সবচেয়ে বড় কারণ এটি। জাপানের সরকার অবশ্য দম্পতিদের জন্য সন্তান জন্ম ও লালন বাবদ আর্থিক প্রণোদনা দিচ্ছে, তবে তা যথেষ্ট নয়। বর্তমানে প্রণোদনায় যে অর্থ দেওয়া হয়, সন্তান জন্মের পর হাসপাতালের বিল মেটাতেই তা শেষ হয়ে যায়। ফলে সীমিত আয়ের দম্পতিরা স্বাভাকিভাবেই এই প্রণোদনার ওপর নির্ভর করে সন্তান জন্মদানের ঝুঁকি নিতে চান না। এদিকে একদিকে যেমন জন্মহার কমছে, তেমনি অপরদিকে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন, উন্নত পরিষেবা ও উন্নত চিকিৎসাসেবার কারণে গড়আয়ু বাড়ছে জাপানে। ফলে দেশটির জনবিন্যাসে বয়স্ক ও কর্মজীবন থেকে অবসর নেওয়া নারী-পুরুষদের সংখ্যা বাড়ছে, কমছে কর্মক্ষম তরুণ-তরুণীর সংখ্যা। আরও কয়েক বছর যদি এই সংকট চলতে থাকে, তাহলে জাপানের সমাজজীবনে ভয়াবহ বিপর্যয় শুরু হবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন জাপানের সমাজবিজ্ঞানীরা। প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাও এ ব্যাপারে বেশ কয়েকবার প্রকাশ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গত জুন মাসে টোকিওতে একটি সরকারি ডে কেয়ার সেন্টার উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে ফুমিও কিশিদা বলেন, ‘শিগগির যদি জন্মহারে বৃদ্ধি না ঘটে, সেক্ষেত্রে জনসংখ্যাজনিত কারণে ২০৩০ সাল থেকে সামাজিক বিপর্যয়ের অধ্যায়ে প্রবেশ করবে জাপান।’