ঢাকা ০১:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলায় কমে মানসিক চাপ

  • আপডেট সময় : ০৭:১৫:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
  • ১৮ বার পড়া হয়েছে

লাইফস্টাইল ডেস্ক: মায়ের গর্ভে বেড়ে উঠতে উঠতেই শিশু তার মায়ের কণ্ঠস্বর শুনতে পায়। জন্মের সময়ে পৌঁছাতে পৌঁছাতে সে মায়ের কণ্ঠস্বরটিকে চিনতেও পারে। পৃথিবীর বুকে তার সবচেয়ে আপন তো এই মানুষটাই। তবে তার কণ্ঠস্বর সত্যিই চাপ সামলাতে সহায়ক কি না, এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষণা জানিয়েছে চমকপ্রদ তথ্য।

যা হয়েছিল সেই গবেষণায়: ৭ থেকে ১২ বছর বয়সী ৬১ জন মেয়েকে নিয়ে গবেষণাটি করা হয়। এ মেয়েদের সবাইকেই বেশ চাপের পরিস্থিতিতে ফেলা হয়েছিল। কোনো ধরনের প্রস্তুতি ছাড়াই উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে কোনো বিষয়ে বক্তব্য রাখতে বলা হয়েছিল তাদের। আরও ছিল কঠিন অঙ্কের হিসাব কষার কাজ। এসব কাজ তাদের করতে হয়েছিল অচেনা মানুষদের সামনে। এই চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে পড়ার পর মেয়েদের তিনটি দলে ভাগ করা হয়েছিল। একটি দলের মেয়েদের তাদের মায়েদের স্পর্শ পাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। অন্য একটি দলের মেয়েরা তাদের মায়েদের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ পেয়েছিল। বাকি দলটির মেয়েরা সাদামাটা একটি চলচ্চিত্র দেখে মনের চাপ কমানোর সুযোগ পেয়েছিল। তারপর তিনটি দলের মেয়েদের লালা এবং প্রস্রাবের হরমোন পরীক্ষা করে দেখা হয়েছিল, কাদের মানসিক চাপ সত্যিই কমেছিল।

গবেষণার ফলাফল: যারা মায়ের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছিল এবং যারা মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ পেয়েছিল, তাদের হরমোনের পরিবর্তন ছিল ইতিবাচক। আবেগ ও ভালো লাগার অনুভূতির সঙ্গে সম্পর্কিত হরমোন অক্সিটোসিন বেড়েছিল এ দু’দলের মেয়েদেরই। চাপের হরমোন কর্টিসলের মাত্রা কমে গিয়েছিল। মা যখন সন্তানকে জড়িয়ে ধরেন কিংবা কাঁধে হাত রেখে ভরসা দেন, তখন হরমোনের এ ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন হয়। অর্থাৎ এ গবেষণার ফলাফল বলছে, মায়ের কণ্ঠস্বর মাকে জড়িয়ে ধরার মতোই প্রশান্তি দিতে পারে সন্তানকে। যে দলটিকে চলচ্চিত্র দেখতে দেওয়া হয়েছিল, তাদের হরমোনের এমন ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যায়নি।

মোট কথা হলো, পড়ালেখা বা কাজের সূত্রে মায়ের থেকে দূরে থাকেন অনেকেই। বিয়ের পর অনেককে মায়ের কাছ থেকে দূরে চলে যেতে হয়। কারণ যেটিই হোক, মায়ের কাছ থেকে দূরে থাকার অর্থই হলো আপনি মায়ের শরীরের চেনা গন্ধটা পাচ্ছেন না, চাইলেই মাকে জড়িয়ে ধরতে পারছেন না। তবে সব সময়ের জন্য মায়ের কাছে থাকার কিংবা মাকে নিজের কাছে নিয়ে আসার সুযোগ না পেলেও আপনি মায়ের কাছে থাকার প্রশান্তির খানিকটা পেতেই পারেন। যোগাযোগ প্রযুক্তির উৎকর্ষের এই যুগে অডিও বা ভিডিওকল করা তো কোনো ব্যাপারই নয়। তাই যত দূরেই থাকুন না কেন, মাকে ফোন করুন নিয়মিত। এতে আপনি ভালো থাকবেন, ভালো থাকবেন আপনার মা।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলায় কমে মানসিক চাপ

আপডেট সময় : ০৭:১৫:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

লাইফস্টাইল ডেস্ক: মায়ের গর্ভে বেড়ে উঠতে উঠতেই শিশু তার মায়ের কণ্ঠস্বর শুনতে পায়। জন্মের সময়ে পৌঁছাতে পৌঁছাতে সে মায়ের কণ্ঠস্বরটিকে চিনতেও পারে। পৃথিবীর বুকে তার সবচেয়ে আপন তো এই মানুষটাই। তবে তার কণ্ঠস্বর সত্যিই চাপ সামলাতে সহায়ক কি না, এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষণা জানিয়েছে চমকপ্রদ তথ্য।

যা হয়েছিল সেই গবেষণায়: ৭ থেকে ১২ বছর বয়সী ৬১ জন মেয়েকে নিয়ে গবেষণাটি করা হয়। এ মেয়েদের সবাইকেই বেশ চাপের পরিস্থিতিতে ফেলা হয়েছিল। কোনো ধরনের প্রস্তুতি ছাড়াই উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে কোনো বিষয়ে বক্তব্য রাখতে বলা হয়েছিল তাদের। আরও ছিল কঠিন অঙ্কের হিসাব কষার কাজ। এসব কাজ তাদের করতে হয়েছিল অচেনা মানুষদের সামনে। এই চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে পড়ার পর মেয়েদের তিনটি দলে ভাগ করা হয়েছিল। একটি দলের মেয়েদের তাদের মায়েদের স্পর্শ পাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। অন্য একটি দলের মেয়েরা তাদের মায়েদের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ পেয়েছিল। বাকি দলটির মেয়েরা সাদামাটা একটি চলচ্চিত্র দেখে মনের চাপ কমানোর সুযোগ পেয়েছিল। তারপর তিনটি দলের মেয়েদের লালা এবং প্রস্রাবের হরমোন পরীক্ষা করে দেখা হয়েছিল, কাদের মানসিক চাপ সত্যিই কমেছিল।

গবেষণার ফলাফল: যারা মায়ের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছিল এবং যারা মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ পেয়েছিল, তাদের হরমোনের পরিবর্তন ছিল ইতিবাচক। আবেগ ও ভালো লাগার অনুভূতির সঙ্গে সম্পর্কিত হরমোন অক্সিটোসিন বেড়েছিল এ দু’দলের মেয়েদেরই। চাপের হরমোন কর্টিসলের মাত্রা কমে গিয়েছিল। মা যখন সন্তানকে জড়িয়ে ধরেন কিংবা কাঁধে হাত রেখে ভরসা দেন, তখন হরমোনের এ ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন হয়। অর্থাৎ এ গবেষণার ফলাফল বলছে, মায়ের কণ্ঠস্বর মাকে জড়িয়ে ধরার মতোই প্রশান্তি দিতে পারে সন্তানকে। যে দলটিকে চলচ্চিত্র দেখতে দেওয়া হয়েছিল, তাদের হরমোনের এমন ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যায়নি।

মোট কথা হলো, পড়ালেখা বা কাজের সূত্রে মায়ের থেকে দূরে থাকেন অনেকেই। বিয়ের পর অনেককে মায়ের কাছ থেকে দূরে চলে যেতে হয়। কারণ যেটিই হোক, মায়ের কাছ থেকে দূরে থাকার অর্থই হলো আপনি মায়ের শরীরের চেনা গন্ধটা পাচ্ছেন না, চাইলেই মাকে জড়িয়ে ধরতে পারছেন না। তবে সব সময়ের জন্য মায়ের কাছে থাকার কিংবা মাকে নিজের কাছে নিয়ে আসার সুযোগ না পেলেও আপনি মায়ের কাছে থাকার প্রশান্তির খানিকটা পেতেই পারেন। যোগাযোগ প্রযুক্তির উৎকর্ষের এই যুগে অডিও বা ভিডিওকল করা তো কোনো ব্যাপারই নয়। তাই যত দূরেই থাকুন না কেন, মাকে ফোন করুন নিয়মিত। এতে আপনি ভালো থাকবেন, ভালো থাকবেন আপনার মা।