প্রত্যাশা ডেস্ক: পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে সেনাবাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৩১ গ্রামবাসী নিহত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) একথা জানিয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, মালির সেনাবাহিনী ও তাদের মিত্র মিলিশিয়ারা দেশটির মধ্য সেগু অঞ্চলের দুটি গ্রামে অভিযান চালিয়ে ওই গ্রামবাসীদের হত্যা করে। আল-কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রধান বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি এখানেই সবচেয়ে বেশি সক্রিয়।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
মঙ্গলবার প্রকাশিত এইচআরডব্লিউ’র ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২ অক্টোবর প্রথম হামলাটি হয় কামোনা গ্রামে। সেখানে সেনা ও মিলিশিয়া সদস্যরা অন্তত ২১ জন পুরুষকে হত্যা করে এবং কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেয়। দ্বিতীয় হামলাটি ঘটে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার দূরের বালে গ্রামে, যেখানে অন্তত ১০ জনকে হত্যা করা হয়। নিহতদের মধ্যে একজন নারীও ছিলেন।
সাক্ষীরা এইচআরডব্লিউকে জানান, সেনা ও মিলিশিয়া সদস্যরা গ্রামবাসীদের জামা’আত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন (জেএনআইএম)-এর সঙ্গে সহযোগিতার অভিযোগে ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। আল-কায়েদা-ঘনিষ্ঠ এই গোষ্ঠীটি দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে তাদের প্রভাব আরও বিস্তার করেছে।
সাক্ষীদের মধ্যে স্থানীয় এক রাখালও রয়েছেন। হামলার সময় তিনি তার ৯ বছরের মেয়েকে নিয়ে একটি পরিত্যক্ত ঘরে আশ্রয় নেন এবং এতে করে বেঁচে যান। পরে তিনি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ১৭টি লাশ পড়ে থাকতে দেখেন বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।
এ বিষয়ে আফ্রিকান ইউনিয়ন বা মালি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
নিউইয়র্কভিত্তিক এই মানবাধিকার সংস্থাটি মালি কর্তৃপক্ষকে ঘটনাগুলো তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। একইসঙ্গে আফ্রিকান ইউনিয়নকে সংঘাত থামাতে এবং অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধও করে তারা।
প্রসঙ্গত, জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর অব্যাহত হামলায় দীর্ঘদিন ধরেই চাপে রয়েছে স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র মালি। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে জঙ্গিরা জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে বড় ধরনের সংকট তৈরি করেছে। এর জেরে পেট্রোলপাম্পে লম্বা লাইন পড়ছে এবং ডিজেল জেনারেটর চালানো আরও ব্যয়বহুল হয়ে গেছে।
চলতি সপ্তাহে মালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, জঙ্গিগোষ্ঠী শিগগিরই রাজধানী বামাকো দখল করতে পারে— এ ধারণা ‘বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়’।
ওআ/আপ্র/১৯/১১/২০২৫


























