ঢাকা ০২:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

মালাবার গহনা এলে স্বর্ণশিল্পে সঙ্কটের আশঙ্কা

  • আপডেট সময় : ১২:০৮:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ এপ্রিল ২০২২
  • ৮৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : মালাবার বাংলাদেশে রেডিমেট গহনা এনে ব্যবসা করলে কর্মহারা হবে স্বর্ণ শিল্পের সঙ্গে জড়িত লক্ষাধিক কারিগর। এতে বন্ধ হয়ে যেতে পারে শত বছরেরও পুরনো সব গহনা তৈরির কারখানা। সেই সঙ্গে বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশি গহনা রপ্তানির সম্ভাবনাও মার খাবে। এমন আশঙ্কা করছেন স্বর্ণ শিল্পে যুক্ত শ্রমিক ও মালিকরা।
জানা গেছে, ভারতের মালাবার গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ড’স মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে অনুষ্ঠিত তৃতীয় বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামে বাংলাদেশে ব্যবসা করার ঘোষণা দেয়। প্রতিষ্ঠানটি আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরি করা সোনার গহনা বাংলাদেশের বাজারে আনবে বলে জানায়। দুবাইয়ের মুভেনপিক গ্র্যান্ড হোটেলে অনুষ্ঠিত ফোরামে এ ঘোষণা দেন মালাবার গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের অর্থ ও প্রশাসনের পরিচালক আমীর সিএমসি। মালাবারের এমন ঘোষণার পর শঙ্কিত দেশের সোনার কারিগর ও কারখানার মালিকরা। তারা জানান, মূলত এ দেশের স্বর্ণ চোরাচালানি চক্র ও স্বর্ণ শিল্প ধ্বংসের চক্রান্তের সঙ্গে জড়িতরাই মালাবারকে বাংলাদেশে আনতে ইন্ধন দিচ্ছে। দেশের স্বর্ণ শিল্পকে বাঁচিয়ে রপ্তানিমুখী করতে মালাবারের বাংলাদেশে আসা যে কোন মুল্যে ঠেকানোরও ঘোষণা দেন তারা। ঢাকা স্বর্ণ শিল্পী শ্রমিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক দিনেশ চন্দ্র পাল বলেন, একটি আসাধু চক্র বিদেশী রেডিমেট গহনা দেশে আনার চোরাচালানি চক্রের সঙ্গে জড়িত। তারাই চায় বিদেশী রেডিমেট গহনা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে এসে ব্যবসা করুক। এখন তারা ভারতীয় মালাবারকে বাংলাদেশে আনার অপচেষ্টা করছে। তিনি বলেন, বর্তমানে বিদেশ থেকে রেডিমেট গহনা আসায় দেশী কারিগররা কাজ পায় না। এ জন্য সোনার কারিগরা অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। দিনেশ চন্দ্র পাল বলেন, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে আমরা বিভিন্ন সময় চিঠি দিয়েছি, যাতে করে রেডিমেট গহনা আনা বন্ধ হয়। কিন্তু সরকার থেকে এ বিষয়ে কোন সাড়া নেই। অথচ আমাদের কারিগরদের তৈরি করা গহনার বিদেশে বিপুল চাহিদা রয়েছে। এখানকার কারিগরদের হাতে তৈরি গহনার ফিনিশিং ও সৌন্দর্য্য পৃথিবীর আর কোথাও নেই। ঢাকা স্বর্ণ শিল্পী শ্রমিক সংঘের সিনিয়র সহ সভাপতি শংকর বসাক বলেন, বিদেশী কোন প্রতিষ্ঠান রেডিমেট গহনা নিয়ে যদি এ দেশে আসে তাহলে দেশের স্বর্ণ শিল্প শেষ হয়ে যাবে । এমন উদ্যোগ থেকে সরকারকে অবশ্যই সরে আসতে হবে। তিনি বলেন, বিদেশী কোন গহনা দেশে আনা যাবে না। কারণ আমাদের কারিগরদের হাতে তৈরি গহনার বিদেশে অনেক চাহিদা আছে। তারপরও বর্তমানে কাজের অভাবে আমাদের কারিগররা ভারতে চলে যায়। সেখানে গিয়ে তারা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাচ্ছে। কারণ ভারত সোনা রপ্তানি করে। ভারত সরকারও প্রচুর রেভিনিউ পায় এখাত থেকে। বিদেশী কোম্পানিকে সুযোগ না দিয়ে দেশের কারিগরের তৈরি সোনার অলংকার রপ্তানির সুযোগ দিলে আমাদের সরকারেরও বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা রেভিনিউ আয়ের সুযোগ থাকবে। ঢাকা স্বর্ণ শিল্পী শ্রমিক সংঘের সভাপতি ও বাজুসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি গঙ্গাচরন মালাকার বলেন, সারা বিশ্বের স্বর্ণ রপ্তানির প্রধান বাজার হলো দুবাই। সেখানে সব দেশের শো-রুম আছে। নেই শুধু বাংলাদেশের। আমরা যত দিন সোনার গহনা রপ্তানিতে না যাব তত দিন এ শিল্পে সাফল্য আসবে না। সরকারের রপ্তানি আয়ও বাড়বে না। সরকার এদেশে বিদেশী প্রতিষ্ঠানকে এনে ব্যবসার সুযোগ না দিয়ে আমাদের তৈরি করা গহনা রপ্তানির সুযোগ করে দিক। আমরা গার্মেন্টসের চেয়ে বেশি রপ্তানি আয় এনে দিব সরকারকে। তিনি বলেন, বর্তমানে ভারত সারা বিশ্বের সোনার গহনার মোট প্রায় ৭৫ শতাংশ রপ্তানি করে। এটা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশী কারিগরদের কারণে। বাংলাদেশ থেকে তারা হাজার হাজার কারিগর নিয়ে গেছে। অথচ এই কারিগরগুলোর উৎপাদিত সোনার গহনা আমরাই রপ্তানি করতে পারতাম।
গঙ্গাচরন মালাকার বলেন, বর্তমানে ইতালি, তুরস্ক ও ইন্ডিয়া মেশিনে সোনার গহনা উৎপাদন করলেও আমাদের দেশে তৈরি অলংকারই সারা পৃথিবীর মধ্যে সেরা। এত সুক্ষ ও হালকা ওজনের গহনা পৃথিবীর কেউ বানাতে পারে না। তারপরও বিদেশী গহনা আমদানির কারণে আমাদের সোনার কারিগররা এখন অটোরিক্সা চালিয়েও জীবিকা নির্বাহ করে। এখন যদি মালাবার বাংলাদেশে আসে তাহলে লাখের অধিক কারিগর বেকার হয়ে যাবে। রাজধানীর তাঁতিবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন ভবনের ছোট-বড় কারখানাগুলো টুক টুক শব্দে গহনা বানানোতে ব্যস্ত কারিগররা। সেই সঙ্গে কপালে চিন্তার ভাজ। আনন্দ গোল্ড ওয়ার্কসপের কারিগর ও মহাজন ৬৫ বছর বয়স্ক মদন পালকে বলা হয় তাঁতি বাজারের সবচেয়ে বয়স্ক ও সিনিয়র কারিগর। প্রায় ৪৫ বছর ধরে সোনার বালা বানিয়ে আসা এ কারিগর বলেন, এই শিল্পের এখন আর সুদিন নেই। তিনি বলেন, এ শিল্পের অনেক কারিগর ভারত আগেই নিয়ে গেছে। তারপরও আমারা এটি ধরে রেখেছি। এখন ভারত বাংলাদেশের স্বর্ণ শিল্পকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে চায়। মা গোল্ড হাউজ কারখানার মহাজন ও কারিগর সুধীর কুমার পাল বলেন, একজন কারিগরের ৩ থেকে ৪ বছর সময় নিয়ে গহনা তৈরির কাজ শিখে। এই শিল্পে দেশ জুড়ে লাখের অধিক শ্রমিক আছে। তিনি বলেন, বিদেশী প্রতিষ্ঠান মালাবার বাংলাদেশে আসলে এই লক্ষাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে। আমাদের কারখানাগুলোও বন্ধ হয়ে যাবে। সন্দীপ জুয়েলারি ওয়ার্কসপের মহাজন ও কারিগর বিশ্বজিৎ কর্মকার বলেন, আমার কারাখানার আপন জুয়েলার্সের গহনা তৈরি করা হয়। এই কারখানায় শ্রমিক কমতে কমতে এখন মাত্র ৩ জন আছে। তারপরও কাজ নেই। মাসে গড়ে ১৫ থেকে ২০ দিন কাজ থাকে। অর্ধেক মাসের আয় দিয়েতো পুরো মাস পরিবার নিয়ে চলে না। তাই এই শিল্প ছাড়ছে কারিগররা।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আবু সাঈদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে গণঅভ্যুত্থানের সূচনা

মালাবার গহনা এলে স্বর্ণশিল্পে সঙ্কটের আশঙ্কা

আপডেট সময় : ১২:০৮:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ এপ্রিল ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : মালাবার বাংলাদেশে রেডিমেট গহনা এনে ব্যবসা করলে কর্মহারা হবে স্বর্ণ শিল্পের সঙ্গে জড়িত লক্ষাধিক কারিগর। এতে বন্ধ হয়ে যেতে পারে শত বছরেরও পুরনো সব গহনা তৈরির কারখানা। সেই সঙ্গে বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশি গহনা রপ্তানির সম্ভাবনাও মার খাবে। এমন আশঙ্কা করছেন স্বর্ণ শিল্পে যুক্ত শ্রমিক ও মালিকরা।
জানা গেছে, ভারতের মালাবার গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ড’স মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে অনুষ্ঠিত তৃতীয় বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামে বাংলাদেশে ব্যবসা করার ঘোষণা দেয়। প্রতিষ্ঠানটি আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরি করা সোনার গহনা বাংলাদেশের বাজারে আনবে বলে জানায়। দুবাইয়ের মুভেনপিক গ্র্যান্ড হোটেলে অনুষ্ঠিত ফোরামে এ ঘোষণা দেন মালাবার গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের অর্থ ও প্রশাসনের পরিচালক আমীর সিএমসি। মালাবারের এমন ঘোষণার পর শঙ্কিত দেশের সোনার কারিগর ও কারখানার মালিকরা। তারা জানান, মূলত এ দেশের স্বর্ণ চোরাচালানি চক্র ও স্বর্ণ শিল্প ধ্বংসের চক্রান্তের সঙ্গে জড়িতরাই মালাবারকে বাংলাদেশে আনতে ইন্ধন দিচ্ছে। দেশের স্বর্ণ শিল্পকে বাঁচিয়ে রপ্তানিমুখী করতে মালাবারের বাংলাদেশে আসা যে কোন মুল্যে ঠেকানোরও ঘোষণা দেন তারা। ঢাকা স্বর্ণ শিল্পী শ্রমিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক দিনেশ চন্দ্র পাল বলেন, একটি আসাধু চক্র বিদেশী রেডিমেট গহনা দেশে আনার চোরাচালানি চক্রের সঙ্গে জড়িত। তারাই চায় বিদেশী রেডিমেট গহনা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে এসে ব্যবসা করুক। এখন তারা ভারতীয় মালাবারকে বাংলাদেশে আনার অপচেষ্টা করছে। তিনি বলেন, বর্তমানে বিদেশ থেকে রেডিমেট গহনা আসায় দেশী কারিগররা কাজ পায় না। এ জন্য সোনার কারিগরা অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। দিনেশ চন্দ্র পাল বলেন, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে আমরা বিভিন্ন সময় চিঠি দিয়েছি, যাতে করে রেডিমেট গহনা আনা বন্ধ হয়। কিন্তু সরকার থেকে এ বিষয়ে কোন সাড়া নেই। অথচ আমাদের কারিগরদের তৈরি করা গহনার বিদেশে বিপুল চাহিদা রয়েছে। এখানকার কারিগরদের হাতে তৈরি গহনার ফিনিশিং ও সৌন্দর্য্য পৃথিবীর আর কোথাও নেই। ঢাকা স্বর্ণ শিল্পী শ্রমিক সংঘের সিনিয়র সহ সভাপতি শংকর বসাক বলেন, বিদেশী কোন প্রতিষ্ঠান রেডিমেট গহনা নিয়ে যদি এ দেশে আসে তাহলে দেশের স্বর্ণ শিল্প শেষ হয়ে যাবে । এমন উদ্যোগ থেকে সরকারকে অবশ্যই সরে আসতে হবে। তিনি বলেন, বিদেশী কোন গহনা দেশে আনা যাবে না। কারণ আমাদের কারিগরদের হাতে তৈরি গহনার বিদেশে অনেক চাহিদা আছে। তারপরও বর্তমানে কাজের অভাবে আমাদের কারিগররা ভারতে চলে যায়। সেখানে গিয়ে তারা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাচ্ছে। কারণ ভারত সোনা রপ্তানি করে। ভারত সরকারও প্রচুর রেভিনিউ পায় এখাত থেকে। বিদেশী কোম্পানিকে সুযোগ না দিয়ে দেশের কারিগরের তৈরি সোনার অলংকার রপ্তানির সুযোগ দিলে আমাদের সরকারেরও বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা রেভিনিউ আয়ের সুযোগ থাকবে। ঢাকা স্বর্ণ শিল্পী শ্রমিক সংঘের সভাপতি ও বাজুসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি গঙ্গাচরন মালাকার বলেন, সারা বিশ্বের স্বর্ণ রপ্তানির প্রধান বাজার হলো দুবাই। সেখানে সব দেশের শো-রুম আছে। নেই শুধু বাংলাদেশের। আমরা যত দিন সোনার গহনা রপ্তানিতে না যাব তত দিন এ শিল্পে সাফল্য আসবে না। সরকারের রপ্তানি আয়ও বাড়বে না। সরকার এদেশে বিদেশী প্রতিষ্ঠানকে এনে ব্যবসার সুযোগ না দিয়ে আমাদের তৈরি করা গহনা রপ্তানির সুযোগ করে দিক। আমরা গার্মেন্টসের চেয়ে বেশি রপ্তানি আয় এনে দিব সরকারকে। তিনি বলেন, বর্তমানে ভারত সারা বিশ্বের সোনার গহনার মোট প্রায় ৭৫ শতাংশ রপ্তানি করে। এটা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশী কারিগরদের কারণে। বাংলাদেশ থেকে তারা হাজার হাজার কারিগর নিয়ে গেছে। অথচ এই কারিগরগুলোর উৎপাদিত সোনার গহনা আমরাই রপ্তানি করতে পারতাম।
গঙ্গাচরন মালাকার বলেন, বর্তমানে ইতালি, তুরস্ক ও ইন্ডিয়া মেশিনে সোনার গহনা উৎপাদন করলেও আমাদের দেশে তৈরি অলংকারই সারা পৃথিবীর মধ্যে সেরা। এত সুক্ষ ও হালকা ওজনের গহনা পৃথিবীর কেউ বানাতে পারে না। তারপরও বিদেশী গহনা আমদানির কারণে আমাদের সোনার কারিগররা এখন অটোরিক্সা চালিয়েও জীবিকা নির্বাহ করে। এখন যদি মালাবার বাংলাদেশে আসে তাহলে লাখের অধিক কারিগর বেকার হয়ে যাবে। রাজধানীর তাঁতিবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন ভবনের ছোট-বড় কারখানাগুলো টুক টুক শব্দে গহনা বানানোতে ব্যস্ত কারিগররা। সেই সঙ্গে কপালে চিন্তার ভাজ। আনন্দ গোল্ড ওয়ার্কসপের কারিগর ও মহাজন ৬৫ বছর বয়স্ক মদন পালকে বলা হয় তাঁতি বাজারের সবচেয়ে বয়স্ক ও সিনিয়র কারিগর। প্রায় ৪৫ বছর ধরে সোনার বালা বানিয়ে আসা এ কারিগর বলেন, এই শিল্পের এখন আর সুদিন নেই। তিনি বলেন, এ শিল্পের অনেক কারিগর ভারত আগেই নিয়ে গেছে। তারপরও আমারা এটি ধরে রেখেছি। এখন ভারত বাংলাদেশের স্বর্ণ শিল্পকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে চায়। মা গোল্ড হাউজ কারখানার মহাজন ও কারিগর সুধীর কুমার পাল বলেন, একজন কারিগরের ৩ থেকে ৪ বছর সময় নিয়ে গহনা তৈরির কাজ শিখে। এই শিল্পে দেশ জুড়ে লাখের অধিক শ্রমিক আছে। তিনি বলেন, বিদেশী প্রতিষ্ঠান মালাবার বাংলাদেশে আসলে এই লক্ষাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে। আমাদের কারখানাগুলোও বন্ধ হয়ে যাবে। সন্দীপ জুয়েলারি ওয়ার্কসপের মহাজন ও কারিগর বিশ্বজিৎ কর্মকার বলেন, আমার কারাখানার আপন জুয়েলার্সের গহনা তৈরি করা হয়। এই কারখানায় শ্রমিক কমতে কমতে এখন মাত্র ৩ জন আছে। তারপরও কাজ নেই। মাসে গড়ে ১৫ থেকে ২০ দিন কাজ থাকে। অর্ধেক মাসের আয় দিয়েতো পুরো মাস পরিবার নিয়ে চলে না। তাই এই শিল্প ছাড়ছে কারিগররা।