ঢাকা ০১:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেওয়া শিশুর জন্য সঞ্চয়পত্র কেনার নির্দেশ

  • আপডেট সময় : ০৩:০৩:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩
  • ৭৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ময়মনসিংহের ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেওয়া শিশু ফাতেমা ও তার পরিবারের ভরণ পোষণের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে থাকা ১৩ লাখ ১১ হাজার টাকা দিয়ে সঞ্চয়পত্র কেনার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত সঞ্চয়পত্রের লভ্যাংশ দিয়ে শিশু ফাতেমা, তার দুই ভাই-বোন ও দাদীর সংসারের ব্যয় নির্বাহের কথা বলেছেন। একইসঙ্গে দুর্ঘটনায় আহতদের ক্ষতিপূরণের জন্য তাদের পক্ষে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে আবেদন করতে বলা হয়েছে। আর ৩০ দিনের মধ্যে ওই আবেদন নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসাইন। ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষে ছিলেন রাফিউল ইসলাম ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে রিটের পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন বলেন, ‘ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া শিশুর জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া ১৩ লাখ ১১ হাজার টাকা ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসকের কাছে রয়েছে। এ টাকা দিয়ে জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে সঞ্চয়পত্র কেনার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আর সঞ্চয়পত্রের লভ্যাংশ দিয়ে শিশু ফাতেমা, তার ভাই ইবাদত হোসেন ও বোন জান্নাতের কল্যাণে ব্যয় করতে বলেছেন আদালত। এ ছাড়া ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে দুর্ঘটনার আহতদের ক্ষতিপূরণের জন্য তাদের পক্ষে আবেদন করতে বলেছেন। এবং ট্রাস্টি বোর্ডকে ৩০ দিনের মধ্যে ওই আবেদন নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।’ গত ১৬ জুলাই ময়মনসিংহে ট্রাকচাপায় মা-বাবা ও বোন হারিয়ে অলৌকিকভাবে জন্ম নেওয়া শিশুটির ক্ষতিপূরণ এবং কল্যাণ নিশ্চিতে সোমবার (১৮ জুলাই) রিট করেন আইনজীবী কানিজ ফাতেমা তুনাজ্জিনা হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন। গত ১৬ জুলাই বিকেলে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার দিনমজুর জাহাঙ্গীর আলম তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন। এ সময় তাদের সঙ্গে ছিল ছয় বছরের শিশুকন্যা সানজিদা। এরপর ত্রিশালের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আল্টাসনোগ্রাম করে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির পথে মহাসড়ক পার হওয়ার সময় হঠাৎ বেপরোয়া একটি মালবাহী ট্রাক চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়।
তবে দুর্ঘটনার সময় মায়ের পেটের ওপর দিয়ে মালবাহী ট্রাকের চাকা চলে গেলেও মায়ের গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ট হয় ফুটফুটে এক নবজাতক। জন্মের সময় নবজাতকের ডান হাতের দুইটি হাড় ভেঙে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনতা তাৎক্ষণিক ওই নবজাতককে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এরপর তাকে কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হয়। বর্তমানে শিশুটি সমাজসেবা অধিদফতরের অধীনে ঢাকার আজিমপুরের ছোটমনি নিবাসে রয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেওয়া শিশুর জন্য সঞ্চয়পত্র কেনার নির্দেশ

আপডেট সময় : ০৩:০৩:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : ময়মনসিংহের ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেওয়া শিশু ফাতেমা ও তার পরিবারের ভরণ পোষণের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে থাকা ১৩ লাখ ১১ হাজার টাকা দিয়ে সঞ্চয়পত্র কেনার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত সঞ্চয়পত্রের লভ্যাংশ দিয়ে শিশু ফাতেমা, তার দুই ভাই-বোন ও দাদীর সংসারের ব্যয় নির্বাহের কথা বলেছেন। একইসঙ্গে দুর্ঘটনায় আহতদের ক্ষতিপূরণের জন্য তাদের পক্ষে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে আবেদন করতে বলা হয়েছে। আর ৩০ দিনের মধ্যে ওই আবেদন নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসাইন। ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষে ছিলেন রাফিউল ইসলাম ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে রিটের পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন বলেন, ‘ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া শিশুর জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া ১৩ লাখ ১১ হাজার টাকা ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসকের কাছে রয়েছে। এ টাকা দিয়ে জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে সঞ্চয়পত্র কেনার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আর সঞ্চয়পত্রের লভ্যাংশ দিয়ে শিশু ফাতেমা, তার ভাই ইবাদত হোসেন ও বোন জান্নাতের কল্যাণে ব্যয় করতে বলেছেন আদালত। এ ছাড়া ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে দুর্ঘটনার আহতদের ক্ষতিপূরণের জন্য তাদের পক্ষে আবেদন করতে বলেছেন। এবং ট্রাস্টি বোর্ডকে ৩০ দিনের মধ্যে ওই আবেদন নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।’ গত ১৬ জুলাই ময়মনসিংহে ট্রাকচাপায় মা-বাবা ও বোন হারিয়ে অলৌকিকভাবে জন্ম নেওয়া শিশুটির ক্ষতিপূরণ এবং কল্যাণ নিশ্চিতে সোমবার (১৮ জুলাই) রিট করেন আইনজীবী কানিজ ফাতেমা তুনাজ্জিনা হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন। গত ১৬ জুলাই বিকেলে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার দিনমজুর জাহাঙ্গীর আলম তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন। এ সময় তাদের সঙ্গে ছিল ছয় বছরের শিশুকন্যা সানজিদা। এরপর ত্রিশালের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আল্টাসনোগ্রাম করে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির পথে মহাসড়ক পার হওয়ার সময় হঠাৎ বেপরোয়া একটি মালবাহী ট্রাক চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়।
তবে দুর্ঘটনার সময় মায়ের পেটের ওপর দিয়ে মালবাহী ট্রাকের চাকা চলে গেলেও মায়ের গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ট হয় ফুটফুটে এক নবজাতক। জন্মের সময় নবজাতকের ডান হাতের দুইটি হাড় ভেঙে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনতা তাৎক্ষণিক ওই নবজাতককে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এরপর তাকে কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হয়। বর্তমানে শিশুটি সমাজসেবা অধিদফতরের অধীনে ঢাকার আজিমপুরের ছোটমনি নিবাসে রয়েছে।