নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য টিসিবির গাড়ীতে লাইন দিচ্ছেন। আর ভারত থেকে শিল্পী এনে প্রধানমন্ত্রী গান শুনছেন। এতে কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর কারামুক্তি উপলক্ষে এক নাগরিক সংবর্ধনায় এসব কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে রুহুল আমিন গাজী মুক্তি পরিষদের আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এখানে সৌজন্যবোধ, ন্যূনতম শালীনতাবোধ, সৌজন্যের সঙ্গে কথা বলা, সেটা নেই। হবেটা কেন? যাঁরা চাকর, তাঁরা যদি মালিক বনে যান, তখন সেটা কী অবস্থায় গিয়ে দাঁড়াবে? এমন এমন কথা এমন এমন লোকজন বলছেন, যাঁরা কিনা জনগণের টাকায় চলছেন। তাঁদের জীবন চলে জনগণের টাকায়, তাঁদের বেতন হয় জনগণের টাকায়, আজ তাঁরা মালিক বনে গেছেন।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একদিকে মানুষ টিসিবির নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য লাইন দিচ্ছেন, অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী ভারত থেকে শিল্পী এনে গান শুনছেন। এতে কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। মন্ত্রীরা বাংলাদেশ থেকে টরন্টোর ফ্লাইটে ভ্রমণ করছেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, রাজনীতিবিদদের জেলে যেতে হয়, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু যাঁরা লেখালেখি করেন, তাঁদের জেলে যাওয়াটা অস্বাভাবিক। এখন ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের নামে নিপীড়ন করা হচ্ছে। কারাগারের দিনগুলোতে খোঁজখবর নেওয়া ও প্রতিবাদ করার জন্য তাঁর সহকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে রুহুল আমিন গাজী বলেন, ১৭ মাসের কারাভোগ ইতিহাস হয়ে থাকবে। আইনজীবীরা আদালতে বলেছেন, ‘ওনাকে (রুহুল আমিন গাজীর) বাঁচতে দিন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী বলেন, বর্তমানে সাংবাদিক নেতাসহ যাঁরা নির্যাতিত হচ্ছেন, তাঁদের কারও অবদান, ত্যাগ-তিতিক্ষা বৃথা যাবে না। এখন গণতন্ত্র, মানবাধিকার নির্বাসিত। এসবের জন্য কথা বলতে গেলে নির্যাতনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। পুরো দেশই আজ বড় কারাগার। এগুলো ইতিহাসে কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে।
জামায়াতে ইসলামীর নেতা মতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী ১৭ মাস কারা নির্যাতিত হলেন। অথচ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা ছিল বানোয়াট। সুতরাং তিনি ন্যায়বিচারবঞ্চিত। দেশে গণতন্ত্র নেই বলেই এ অবস্থা। বিচার বিভাগ এখনো পরাধীন। আইনের শাসন নেই। মানবাধিকার কোথায় গিয়ে ঠেকেছে, সবারই জানা।
সভাপতির বক্তব্যে নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন বলেন, ক্ষমতাবানেরা কখনো তাঁদের বিরুদ্ধে সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না। যে কারণেই সাংবাদিকেরা ক্ষমতাবানদের টার্গেটে পরিণত হন। এ ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কবি আবদুল হাই শিকদার, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জাতীয় প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কবি হাসান হাফিজ, সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এলাহী নেওয়াজ খান, বর্তমান সভাপতি (বিএনপি-সমর্থিত) আবদুল কাদের গণি চৌধুরী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম, ইলিয়াস হোসেন, মুরসালিন নোমানী প্রমুখ।
মানুষ টিসিবির লাইনে, প্রধানমন্ত্রী বিদেশি শিল্পীর গান শুনছেন : মির্জা ফখরুল
ট্যাগস :
মানুষ টিসিবির লাইনে
জনপ্রিয় সংবাদ