ঢাকা ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫

মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি সম্পাদকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিন্দা-প্রতিবাদ

  • আপডেট সময় : ০৭:২১:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪
  • ১০০ বার পড়া হয়েছে

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবিরের বিরুদ্ধে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি সফিউদ্দিন আহাম্মেদ অভিযোগটি করেন। অভিযোগটি বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের মাধ্যমে তারেক রহমানের কাছে পাঠানো হয়। অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবির ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয় উপজেলায় দলের চিহ্নিত অপরাধীদের মাধ্যমে চাঁদাবাজী, ভূমিদখল, হাট বাজার, ঘাট দখল, সিএনজি ও বাসষ্ট্যান্ড দখল, বালু মহল দখলসহ নানাবিধ অবৈধ অর্থনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য বিএনপি’র নাম ব্যবহার করে দলের ভাবমূর্তি জনসাধারণের কাছে ক্ষুন্ন করে চলেছেন। এতে বিএনপি নেতৃত্বের প্রতি জনমনে বিরুপ ধারণা তৈরি হচ্ছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ঘিওর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান খান কুদরত জনমনে ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে ঘিওর বালুমহল দখল করে ও বরংগাইল-টাঙ্গাইল-নাগরপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচলকৃত সিএনজি থেকে চাঁদা আদায় করছে। বানিয়াজুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার রাজাকে দিয়ে তরা বালুমহল থেকে বালু উত্তোলন করছেন। এছাড়াও এসএ জিন্নাহ কবিরের মেয়ের জামাতা ব্যারিষ্টার জাওয়ানের বিরুদ্ধে বালিয়াখোড়ায় অবস্থিত ডেরা রিসোর্ট, পুখুরিয়ায় স্টোন ব্রিক্সস কারখানা ও স্কয়ার কোম্পানির চলমান কাজে বাঁধা প্রদান করে অর্থ আদায়সহ মাসিক চাঁদা আদায়ের অভিযোগ করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘিওরের শ্রীধরনগর বালুমহালের ইজারা পায় স্কীম এসোসিয়েটস নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক রাসেল মাহমুদ। ৬৫ লাখ ৪০ হাজার টাকায় ইজারা পাওয়া বালুমহালটি ইজারার শর্ত মেনে ও রাজস্ব জমা দিয়ে চালানো হয়। রাসেল মাহমুদ নিজেই বালুমহালটি পরিচালনা করছেন বলে জানান। একইভাবে দুই কোটি ৯ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকায় তরা বালুমহালটি ইজারা পায় মেসার্স মাকসুদ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী মাকসুদ একজন প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার। তিনি কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত না থাকলেও বিএনপির সমর্থক হিসেবে পরিচিত। ঠিকাদার মাকসুদ বলেন, ইজারার শর্ত মেনে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আমি বালুমহালটি চালাচ্ছি। বালুমহালটি দেখাশোনা করছে আমার ভাতিজা জিসান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকার পতনের পর পরিবহন সেক্টরের নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিরাও পালিয়ে যান। এরপর থেকে বন্ধ হয়ে যায় চাঁদাবাজির ঘটনা। পরিবহন শ্রমিকদের দাবি, তারা এখন অনেক ভালো আছেন। কারণ কাউকে কোন চাঁদা দিতে হচ্ছে না। শ্রমিকরা জানান, সিরিয়াল ঠিক রাখার জন্য তাদের মধ্য থেকে প্রতিদিন একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দায়িত্ব পালনের জন্য সবাই তাকে দশ টাকা করে দেয়। জানতে চাইলে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবির বলেন, একটা চক্র দীর্ঘদিন ধরে আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। এটাও ওই চক্রের কাজ। তারা আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এসব মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। অভিযোগকারী সফিউদ্দিনের পক্ষে এতো কিছু লেখা সম্ভব নয় দাবি করে তিনি বলেন, একজন বিশেষ ব্যক্তি তার বাসার কম্পিউটারে অভিযোগটি লিখে সফিউদ্দিনকে দিয়ে সিগনেচার করিয়েছে। এই মিথ্যা অভিযোগ ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এসএ জিন্নাহ কবির। একইসঙ্গে এই চক্রের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়াসহ আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি। এসএ জিন্নাহ কবির বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী অনেকে বিএনপি নেতা হয়ে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের কাউকে বিগত ১৬ বছরে আমরা কোথাও দেখিনি। কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তী তারাই হঠাৎ বিএনপির নেতাকর্মীদের মুখোমুখি দাঁড়াচ্ছে। হামলা চালাচ্ছে, দখলবাজি করছে। এরা কখনো নিজেদের ছাত্র সমন্বয়ক ও ছাত্রদলের পরিচয়ে অপকর্ম করছে। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপির পদধারী যাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ পেয়েছি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি, বহিষ্কার করেছি। যাদের দলে কোন পদ-পদবী নেই, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা কিভাবে নেব বলেও উল্টো প্রশ্ন বরেন তিনি।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি সম্পাদকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিন্দা-প্রতিবাদ

আপডেট সময় : ০৭:২১:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবিরের বিরুদ্ধে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি সফিউদ্দিন আহাম্মেদ অভিযোগটি করেন। অভিযোগটি বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের মাধ্যমে তারেক রহমানের কাছে পাঠানো হয়। অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবির ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয় উপজেলায় দলের চিহ্নিত অপরাধীদের মাধ্যমে চাঁদাবাজী, ভূমিদখল, হাট বাজার, ঘাট দখল, সিএনজি ও বাসষ্ট্যান্ড দখল, বালু মহল দখলসহ নানাবিধ অবৈধ অর্থনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য বিএনপি’র নাম ব্যবহার করে দলের ভাবমূর্তি জনসাধারণের কাছে ক্ষুন্ন করে চলেছেন। এতে বিএনপি নেতৃত্বের প্রতি জনমনে বিরুপ ধারণা তৈরি হচ্ছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ঘিওর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান খান কুদরত জনমনে ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে ঘিওর বালুমহল দখল করে ও বরংগাইল-টাঙ্গাইল-নাগরপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচলকৃত সিএনজি থেকে চাঁদা আদায় করছে। বানিয়াজুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার রাজাকে দিয়ে তরা বালুমহল থেকে বালু উত্তোলন করছেন। এছাড়াও এসএ জিন্নাহ কবিরের মেয়ের জামাতা ব্যারিষ্টার জাওয়ানের বিরুদ্ধে বালিয়াখোড়ায় অবস্থিত ডেরা রিসোর্ট, পুখুরিয়ায় স্টোন ব্রিক্সস কারখানা ও স্কয়ার কোম্পানির চলমান কাজে বাঁধা প্রদান করে অর্থ আদায়সহ মাসিক চাঁদা আদায়ের অভিযোগ করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘিওরের শ্রীধরনগর বালুমহালের ইজারা পায় স্কীম এসোসিয়েটস নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক রাসেল মাহমুদ। ৬৫ লাখ ৪০ হাজার টাকায় ইজারা পাওয়া বালুমহালটি ইজারার শর্ত মেনে ও রাজস্ব জমা দিয়ে চালানো হয়। রাসেল মাহমুদ নিজেই বালুমহালটি পরিচালনা করছেন বলে জানান। একইভাবে দুই কোটি ৯ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকায় তরা বালুমহালটি ইজারা পায় মেসার্স মাকসুদ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী মাকসুদ একজন প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার। তিনি কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত না থাকলেও বিএনপির সমর্থক হিসেবে পরিচিত। ঠিকাদার মাকসুদ বলেন, ইজারার শর্ত মেনে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আমি বালুমহালটি চালাচ্ছি। বালুমহালটি দেখাশোনা করছে আমার ভাতিজা জিসান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকার পতনের পর পরিবহন সেক্টরের নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিরাও পালিয়ে যান। এরপর থেকে বন্ধ হয়ে যায় চাঁদাবাজির ঘটনা। পরিবহন শ্রমিকদের দাবি, তারা এখন অনেক ভালো আছেন। কারণ কাউকে কোন চাঁদা দিতে হচ্ছে না। শ্রমিকরা জানান, সিরিয়াল ঠিক রাখার জন্য তাদের মধ্য থেকে প্রতিদিন একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দায়িত্ব পালনের জন্য সবাই তাকে দশ টাকা করে দেয়। জানতে চাইলে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবির বলেন, একটা চক্র দীর্ঘদিন ধরে আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। এটাও ওই চক্রের কাজ। তারা আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এসব মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। অভিযোগকারী সফিউদ্দিনের পক্ষে এতো কিছু লেখা সম্ভব নয় দাবি করে তিনি বলেন, একজন বিশেষ ব্যক্তি তার বাসার কম্পিউটারে অভিযোগটি লিখে সফিউদ্দিনকে দিয়ে সিগনেচার করিয়েছে। এই মিথ্যা অভিযোগ ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এসএ জিন্নাহ কবির। একইসঙ্গে এই চক্রের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়াসহ আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি। এসএ জিন্নাহ কবির বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী অনেকে বিএনপি নেতা হয়ে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের কাউকে বিগত ১৬ বছরে আমরা কোথাও দেখিনি। কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তী তারাই হঠাৎ বিএনপির নেতাকর্মীদের মুখোমুখি দাঁড়াচ্ছে। হামলা চালাচ্ছে, দখলবাজি করছে। এরা কখনো নিজেদের ছাত্র সমন্বয়ক ও ছাত্রদলের পরিচয়ে অপকর্ম করছে। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপির পদধারী যাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ পেয়েছি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি, বহিষ্কার করেছি। যাদের দলে কোন পদ-পদবী নেই, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা কিভাবে নেব বলেও উল্টো প্রশ্ন বরেন তিনি।