ঢাকা ০২:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

মানবেন্দ্রর বাড়ি পোড়ানোর রাতে ‘মিশন কমপ্লিট’ লেখা ছাত্রলীগ কর্মীসহ গ্রেফতার ৮

  • আপডেট সময় : ০৮:৫০:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রায় মোটিফ নির্মাণকারী চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষ ও তার পরিবার এখনও শঙ্কার মধ্যে জানালেন শিল্পী নিজেই। তিনি বলেন, ‘আমার পরিবাররের যে ক্ষতি হয়ে গেছে সেটি বড় ধরনের ক্ষতি, তা পুষিয়ে নেয়ার মতো নয়। এ ছাড়া আমার শিল্পসত্তায় চরমভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছি। জানি না ভবিষ্যতে স্বাধীনভাবে শিল্পচর্চা করতে পারবো কি না?’ তবে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোছা.ইয়াসমিন খাতুনের দাবি, ভুক্তভোগী পরিবারকে ২৪ ঘণ্টার নিরাপত্তা দিচ্ছে তার পুলিশ বাহিনী। অন্যদিকে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত মানবেন্দ্রকে তার ইচ্ছের ডিজাইন মোতাবেক নতুন ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সদর থানা পুলিশ আট জনকে গ্রেফতার করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়ি পরিদর্শনে করেছেন ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।

ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের আশ্বাস দেন তিনি। এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে একদল দুবৃত্ত চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলা গড়পাড়া চান্দহরের একটি কাচারি ঘর পুড়িয়ের দেয়। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, গ্রেফতারদের মধ্যে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ কর্মী খান মোহাম্মদ রাফি (সৃজন) অগ্নিসংযোগের রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিল ‘মিশন কমপ্লিট’! আটক সিজনের কাছ থেকে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রজু হবে। এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, মানিকগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং সবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বাড়িও ওই গ্রামে। এ ছাড়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জাহিদ মালেকের আপন ফুফাতো ভাই ইসরাফিল হোসেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং গড়পাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত আফসার উদ্দিন সরকার, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সিফাত কোরাইশী সুমনের বাড়িও একই এলাকায়। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে দ্বিতীয়বারের মতো পরিদর্শনে যান জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা। এ সময় তিনি দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করে ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের কারণ এবং ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে সাত সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি জেলা প্রশাসক থেকে করা হয়েছে। তারা তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।’ এ সময় তিনি সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে তাৎক্ষণিক গতকাল বুধবার আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মানবেন্দ্র ঘোষের আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘরটি তার ইচ্ছের ডিজাইন মোতাবেক করে দেওয়া হবে। এরপর দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা বলেন, এ সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা দায়িত্ববোধ থেকে চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে এসেছি। আমাদের পুলিশের সর্বোচ্চ মহল বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। দুষ্কৃতকারীরা যেন আইনের আওতায় আসে সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদের কীভাবে আইনের আওতায় আনা যায় সেটাও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’ চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র বলেন, ‘আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে এটা অনেক বড় ধরনের ক্ষতি। আমার পরিবার আশঙ্কার মধ্যে রয়েছে এটা যেমন সত্যি, তেমনি শিল্পসত্তায় চরমভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছি। আমি জানি না ভবিষ্যতে স্বাধীনভাবে শিল্পকর্ম করতে পারবো কি না? আমি চাই এই ঘটনায় কোনও নিরপরাধ ব্যক্তি যেন শাস্তি না পায় । যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হয়।

’ এটাকে যেন কোনও রাজনৈতিক তকমা না দেওয়া হয় সেটির দিকে প্রশাসনের নজর দাবি করেন তিনি। এর আগে, বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে পতিত শেখ হাসিনার মুখাকৃতি বানানোর অপরাধে কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুমকি পাচ্ছিলেন চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষ। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাতে সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পর রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বত্তরা। দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে ঘরের ভেতর রাখা চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের দীর্ঘদিনের গচ্ছিত কাঠের এবং ফাইবার গ্লাসের তৈরি বিভিন্ন প্রকারের শিল্পকর্ম, একটি মোটরসাইকেল, জেনারেটর, আইপিএস বেশ কিছু প্রতিমাসহ ঘরের আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করলে পুলিশ জড়িত থাকার সন্দেহে এ পর্যন্ত আট জনকে গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার বিকালে গ্রেফতার আট জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমান উল্লা। তিনি জানান, গ্রেফতার আসামিরা হলেন, নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ কর্মী খান মোহাম্মদ রাফি ওরফে সৃজন (১৮), সদর উপজেলা ছাত্রলীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক আল আমিন ওরফে তমাল (২২), সদর উপজেলার নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাইনউদ্দিন আহাম্মদ পিয়াস (২২), ছাত্রলীগ কর্মী মীর মারুফ (২১), ছাত্রলীগ কর্মী মীর আমিনুর রহমান (২৬), গড়পাড়া ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন (৫৪), মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার পূর্বদাশড়ার সুনীল ঘোষের ছেলে সঞ্জিব ঘোষ (৪০) ও শিবালয় উপজেলার অন্বয়পুর গ্রামের মো. রায়হান মল্লিকের ছেলে মোশারফ হোসেন (৪৮)। এদের সবাইকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মানবেন্দ্রর বাড়ি পোড়ানোর রাতে ‘মিশন কমপ্লিট’ লেখা ছাত্রলীগ কর্মীসহ গ্রেফতার ৮

আপডেট সময় : ০৮:৫০:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রায় মোটিফ নির্মাণকারী চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষ ও তার পরিবার এখনও শঙ্কার মধ্যে জানালেন শিল্পী নিজেই। তিনি বলেন, ‘আমার পরিবাররের যে ক্ষতি হয়ে গেছে সেটি বড় ধরনের ক্ষতি, তা পুষিয়ে নেয়ার মতো নয়। এ ছাড়া আমার শিল্পসত্তায় চরমভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছি। জানি না ভবিষ্যতে স্বাধীনভাবে শিল্পচর্চা করতে পারবো কি না?’ তবে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোছা.ইয়াসমিন খাতুনের দাবি, ভুক্তভোগী পরিবারকে ২৪ ঘণ্টার নিরাপত্তা দিচ্ছে তার পুলিশ বাহিনী। অন্যদিকে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত মানবেন্দ্রকে তার ইচ্ছের ডিজাইন মোতাবেক নতুন ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সদর থানা পুলিশ আট জনকে গ্রেফতার করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়ি পরিদর্শনে করেছেন ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।

ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের আশ্বাস দেন তিনি। এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে একদল দুবৃত্ত চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলা গড়পাড়া চান্দহরের একটি কাচারি ঘর পুড়িয়ের দেয়। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, গ্রেফতারদের মধ্যে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ কর্মী খান মোহাম্মদ রাফি (সৃজন) অগ্নিসংযোগের রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিল ‘মিশন কমপ্লিট’! আটক সিজনের কাছ থেকে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রজু হবে। এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, মানিকগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং সবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বাড়িও ওই গ্রামে। এ ছাড়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জাহিদ মালেকের আপন ফুফাতো ভাই ইসরাফিল হোসেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং গড়পাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত আফসার উদ্দিন সরকার, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সিফাত কোরাইশী সুমনের বাড়িও একই এলাকায়। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে দ্বিতীয়বারের মতো পরিদর্শনে যান জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা। এ সময় তিনি দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করে ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের কারণ এবং ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে সাত সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি জেলা প্রশাসক থেকে করা হয়েছে। তারা তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।’ এ সময় তিনি সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে তাৎক্ষণিক গতকাল বুধবার আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মানবেন্দ্র ঘোষের আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘরটি তার ইচ্ছের ডিজাইন মোতাবেক করে দেওয়া হবে। এরপর দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা বলেন, এ সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা দায়িত্ববোধ থেকে চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে এসেছি। আমাদের পুলিশের সর্বোচ্চ মহল বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। দুষ্কৃতকারীরা যেন আইনের আওতায় আসে সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদের কীভাবে আইনের আওতায় আনা যায় সেটাও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’ চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র বলেন, ‘আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে এটা অনেক বড় ধরনের ক্ষতি। আমার পরিবার আশঙ্কার মধ্যে রয়েছে এটা যেমন সত্যি, তেমনি শিল্পসত্তায় চরমভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছি। আমি জানি না ভবিষ্যতে স্বাধীনভাবে শিল্পকর্ম করতে পারবো কি না? আমি চাই এই ঘটনায় কোনও নিরপরাধ ব্যক্তি যেন শাস্তি না পায় । যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হয়।

’ এটাকে যেন কোনও রাজনৈতিক তকমা না দেওয়া হয় সেটির দিকে প্রশাসনের নজর দাবি করেন তিনি। এর আগে, বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে পতিত শেখ হাসিনার মুখাকৃতি বানানোর অপরাধে কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুমকি পাচ্ছিলেন চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষ। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাতে সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পর রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বত্তরা। দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে ঘরের ভেতর রাখা চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের দীর্ঘদিনের গচ্ছিত কাঠের এবং ফাইবার গ্লাসের তৈরি বিভিন্ন প্রকারের শিল্পকর্ম, একটি মোটরসাইকেল, জেনারেটর, আইপিএস বেশ কিছু প্রতিমাসহ ঘরের আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করলে পুলিশ জড়িত থাকার সন্দেহে এ পর্যন্ত আট জনকে গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার বিকালে গ্রেফতার আট জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমান উল্লা। তিনি জানান, গ্রেফতার আসামিরা হলেন, নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ কর্মী খান মোহাম্মদ রাফি ওরফে সৃজন (১৮), সদর উপজেলা ছাত্রলীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক আল আমিন ওরফে তমাল (২২), সদর উপজেলার নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাইনউদ্দিন আহাম্মদ পিয়াস (২২), ছাত্রলীগ কর্মী মীর মারুফ (২১), ছাত্রলীগ কর্মী মীর আমিনুর রহমান (২৬), গড়পাড়া ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন (৫৪), মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার পূর্বদাশড়ার সুনীল ঘোষের ছেলে সঞ্জিব ঘোষ (৪০) ও শিবালয় উপজেলার অন্বয়পুর গ্রামের মো. রায়হান মল্লিকের ছেলে মোশারফ হোসেন (৪৮)। এদের সবাইকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।