ঢাকা ০২:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

মানবতাবিরোধী অপরাধে বিএনপির সাবেক এমপি মোমিনের রায় যে কোনো দিন

  • আপডেট সময় : ০১:২৭:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ নভেম্বর ২০২১
  • ৬৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) বগুড়ার আবদুল মোমিন তালুকদারের বিরুদ্ধে যে কোনো দিন রায় ঘোষণা করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
গতকাল সোমবার চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।
এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন সুলতান মাহমুদ সিমন। আসামি পলাতক থাকায় তার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন রাষ্ট্রীয় খরচে নিয়োজিত আইনজীবী (ডিফেন্স লইয়ার) আবুল হাসান। আইনজীবীরা জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) জেড এম আলতাফুর রহমানসহ মোট ১৫ জন সাক্ষী জবানবন্দি দেন। এরপর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন জাগো নিউজকে বলেন, আসামির বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ ছিল। প্রথমটিতে ১০ জনকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। দ্বিতীয়টিতে পাঁচজনকে হত্যা, যার মধ্যে দুজনকে ঘটনাস্থলেই হত্যা, বাকি তিনজনকে ধরে রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। তৃতীয় অভিযোগে চারজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, এ মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পর মামলাটি সিএভি করেছেন আদালত। আশা করি, আসামির সর্বোচ্চ সাজা হবে। বগুড়া-৩ (দুপচাঁচিয়া-আদমদীঘি) আসনের সাবেক এমপি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল মোমিন তালুকদার খোকা ওরফে খোকা রাজাকারের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালে হত্যা, লুট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ২০১১ সালে আদালতে মামলা করেন আদমদীঘির কায়েতপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সুবিদ আলী। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ডভুক্ত করতে আদমদীঘি থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। পরে ওই মামলা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর হয়।
২০১৮ সালের ৩ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামি আবদুল মোমিন মুসলিম লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পাকিস্তান দখলদার বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য সশস্ত্র রাজাকার বাহিনীতে যোগদান করে তিনি। আদমদীঘি থানার রাজাকার কমান্ডার হিসেবে সহযোগিতা করেন অন্যান্য রাজাকার ও পাকিস্তান বাহিনীকে। তার বিরুদ্ধে মোট ৭১৪ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। ওইদিন তদন্ত সংস্থার তৎকালীন প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান আরও জানিয়েছিলেন, ’৭১ সালে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগসহ ১৯ জনকে হত্যার অভিযোগে বগুড়া জেলার আদমদীঘি থানার কালাইকুড়ি গ্রামের আবদুল মজিদ তালুকদারের ছেলে আবদুল মোমিন তালুকদার ওরফে খোকার (৬৬) বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এটি তদন্ত সংস্থার ৬৪তম প্রতিবেদন। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৮ সালে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। পরে আদমদীঘি উপজেলা বিএনপির সভাপতি হন। এরপর বগুড়া জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এবং রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে আসেন। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন আবদুল মোমিন। তিনি ২০০১ ও ২০০৮ সালে দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মানবতাবিরোধী অপরাধে বিএনপির সাবেক এমপি মোমিনের রায় যে কোনো দিন

আপডেট সময় : ০১:২৭:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ নভেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) বগুড়ার আবদুল মোমিন তালুকদারের বিরুদ্ধে যে কোনো দিন রায় ঘোষণা করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
গতকাল সোমবার চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।
এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন সুলতান মাহমুদ সিমন। আসামি পলাতক থাকায় তার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন রাষ্ট্রীয় খরচে নিয়োজিত আইনজীবী (ডিফেন্স লইয়ার) আবুল হাসান। আইনজীবীরা জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) জেড এম আলতাফুর রহমানসহ মোট ১৫ জন সাক্ষী জবানবন্দি দেন। এরপর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন জাগো নিউজকে বলেন, আসামির বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ ছিল। প্রথমটিতে ১০ জনকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। দ্বিতীয়টিতে পাঁচজনকে হত্যা, যার মধ্যে দুজনকে ঘটনাস্থলেই হত্যা, বাকি তিনজনকে ধরে রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। তৃতীয় অভিযোগে চারজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, এ মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পর মামলাটি সিএভি করেছেন আদালত। আশা করি, আসামির সর্বোচ্চ সাজা হবে। বগুড়া-৩ (দুপচাঁচিয়া-আদমদীঘি) আসনের সাবেক এমপি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল মোমিন তালুকদার খোকা ওরফে খোকা রাজাকারের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালে হত্যা, লুট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ২০১১ সালে আদালতে মামলা করেন আদমদীঘির কায়েতপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সুবিদ আলী। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ডভুক্ত করতে আদমদীঘি থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। পরে ওই মামলা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর হয়।
২০১৮ সালের ৩ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামি আবদুল মোমিন মুসলিম লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পাকিস্তান দখলদার বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য সশস্ত্র রাজাকার বাহিনীতে যোগদান করে তিনি। আদমদীঘি থানার রাজাকার কমান্ডার হিসেবে সহযোগিতা করেন অন্যান্য রাজাকার ও পাকিস্তান বাহিনীকে। তার বিরুদ্ধে মোট ৭১৪ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। ওইদিন তদন্ত সংস্থার তৎকালীন প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান আরও জানিয়েছিলেন, ’৭১ সালে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগসহ ১৯ জনকে হত্যার অভিযোগে বগুড়া জেলার আদমদীঘি থানার কালাইকুড়ি গ্রামের আবদুল মজিদ তালুকদারের ছেলে আবদুল মোমিন তালুকদার ওরফে খোকার (৬৬) বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এটি তদন্ত সংস্থার ৬৪তম প্রতিবেদন। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৮ সালে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। পরে আদমদীঘি উপজেলা বিএনপির সভাপতি হন। এরপর বগুড়া জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এবং রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে আসেন। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন আবদুল মোমিন। তিনি ২০০১ ও ২০০৮ সালে দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।