নিজস্ব প্রতিবেদক : গাজীপুরের ভাওয়াল মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে ইয়াবা পাওয়ার কথা জানিয়েছে র্যাব। সেই সঙ্গে মিলেছে রশি, লাঠি, হাতকড়াও।
র্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, সেখানে মাদকের ব্যবহারের পাশাপাশি নির্যাতনও চলত। এক চিত্রনায়কের সন্ধানে ওই নিরাময় কেন্দ্রে গিয়েছিল র্যাব। তাকেসহ ২৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ পাঁচজনকে।
গতকাল বুধবার গাজীপুরে এই অভিযান চালানোর পর ঢাকার মোহাম্মদপুরের বছিলায় র্যাব-২ এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন বাহিনীর মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, “১ জানুয়ারি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতির পক্ষ থেকে র্যাবের কাছে অভিযোগ করা হয়, অনিক আহমেদ অভি নামে এক চিত্রনায়ক দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রমে অনুপস্থিত। পরে জানা যায়, তাকে ওই পুনর্বাসন কেন্দ্রে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে।”
ওই তথ্যের ভিত্তিতে পুনর্বাসন কেন্দ্রটিতে অভিযান চালিয়ে অনিক আহমেদ অভিসহ ২৮ জনকে উদ্ধার করা হয়। অভিযানে ৪২০টি ইয়াবা, নির্যাতনের কাজে ব্যবহৃত লাঠি, স্টিলের পাইপ, হাতকড়া, রশি, খেলনা পিস্তল জব্দ করা হয় বলে জানান আল মঈন। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফিরোজা নাজনীন বাঁধন (৫৫), মনোয়ার হোসেন সিপন (৩১), মো. রায়হান খান (২০), দিপংকর শাহ দিপু (৪৪)ও জাকির হোসেন আনন্দকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধও করে দিয়েছেন। বাঁধনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাবের মুখপাত্র আল মঈন বলেন, ২০০৯ সালে পুনর্বাসন কেন্দ্রটি অনুমোদন ছাড়াই প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৩-২০১৪ সালে সাময়িক অনুমোদন পায়। “এখানে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের আড়ালে মাদক ব্যবসা, রোগীদের নির্যাতন, প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় ভর্তি রেখে অর্থ আদায় ও অনৈতিক কার্যক্রম চলত।”
নিরাময় কেন্দ্রে দুজন চিকিৎসক থাকার কথা বললেও কাউকে পাওয়া যায়নি র্যাবের অভিযানের সময়। যে ২৮ জন রোগী পাওয়া যায়, তারা র্যাবকে জানান, বাঁধন প্রতি রোগীর কাছ থেকে মাসিক চার্জ হিসেবে ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আদায় করতেন। আল মঈন বলেন, করোনাভাইরাস মহামারীকালে চলচ্চিত্রের কার্যক্রম স্থবির থাকায় অর্থনৈতিক টানাপড়েনের কারণে চিত্রনায়ক অভি মানসিকভাবে কিছুটা বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। পরে তার আচরণে কিছুটা অস্বাভাবিকতা দেখা গেলে গত মার্চে তার মা চিকিৎসার জন্য সেখানে নিয়ে যান। “মালিক বাধঁনের কথামতো অনিককে তার মা সেখানে ভর্তি করান এবং চিকিৎসা জন্য ৩ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। পরবর্তীতে প্রতি মাসে ৪০ হাজার টাকা করে দিতেন।” বাঁধনের গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাটে। একটি ভুঁইফোড় পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয়ে তিনি প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করতেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
মাদক নিরাময় কেন্দ্রেই ‘মাদকের কারবার’
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ