ঢাকা ০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, নির্মূল সম্ভব নয়: তেজগাঁও ডিসি

  • আপডেট সময় : ০৩:৩২:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ২০ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুলিশ মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে পারে কিন্তু নির্মূল করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান।

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। গতকাল রাতে মোহাম্মদপুরের জেনেভাক্যাম্পে চালানো অভিযানের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

জেনেভা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে। কিন্তু কয়েকদিন পরেই তারা আবার জেল থেকে বেরিয়ে একই অপকর্মে জড়ায়। জেনেভা ক্যাম্পে মাদককারবারি নির্মূল করা যাচ্ছে না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি ইবনে মিজান বলেন, আমরা (পুলিশ) মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, একেবারে নির্মূল করা সম্ভব না। বিভিন্ন অভিযানের মাধ্যমে আমরা মাদক কারবারিদের ও মাদকসেবীদের নিয়ন্ত্রণে রাখি। আমরা এটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। আশা করি আমরা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছে যাবো।

গ্রেফতারের পর আসামি বেরিয়ে এসে একই অপরাধের জড়ানোর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশ হচ্ছে ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমের একটি পার্ট। আমাদের অংশে যেটুকু রয়েছে, আসামি গ্রেফতার তদন্ত প্রক্রিয়া এটি আমাদের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ ভালোভাবে করার চেষ্টা করি। যেন কোনো ত্রুটি না হয়। বাকি যে অংশটুকু- সেটিতে আমাদের কোনো হাত নেই। সেটি অন্য সংস্থা করেছে। এই প্রসঙ্গে আমাদের মন্তব্য না করাই সমুচীন।

মোহাম্মদপুরে অপরাধ বাড়ার কারণ কী জানতে চাইলে তেজগাঁওয়ের ডিসি বলেন, ৫ আগস্টের পর মোহাম্মদপুরে অপরাধের চরম বিস্ফোরণ ঘটেছে। যেসব অপরাধী বাইরে ছিল তারাও চলে এসেছে। অনেক অপরাধ সেখানে ঘটেছে৷ তারপর আমরা লাগাতার মোহাম্মদপুরে অভিযান চালিয়ে আসছি। গত ৬ থেকে ৭ মাসে আমরা ৩ হাজারের বেশি অপরাধীকে আইনের আওতায় এনেছি। আমরা চেষ্টা করেছি প্রতিদিন যেসব এলাকায় অপরাধীদের বিচরণ রয়েছে সেখানে অভিযান পরিচালনা করতে। এর ফলে বেশি অপরাধ হওয়া জায়গায় অপরাধ কমে গেছে। আমাদের অভিযান চলমান। আশা করি পরিস্থিতি আরো ভালো হবে।

মাদক ও সন্ত্রাসীদের স্বর্গরাজ্যখ্যাত রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মাদককারবারি, বিক্রেতা, অস্ত্রের জোগানদাতা ও ককটেল সংরক্ষণকারীসহ ৪০ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা থেকে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোর রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

অভিযানে গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ৮টি ককটেল, ২টি পেট্রোল বোমা, ৬টি সামুরাই, ৫টি হেলমেট, ৩টি ছুরি, ১১টি চোরাই মোবাইল ফোন, এবং ৫০০ গ্রাম হেরোইন জব্দ করা হয়।

এ বিষয়ে ডিসি মো. ইবনে মিজান বলেন, মোহাম্মদপুরের আলোচিত স্থান জেনেভা ক্যাম্পে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত হয়। মাদকের বিস্তারের জন্য এলাকাটি বেশ পরিচিত। পুলিশ নিয়মিতভাবে এখানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আসছি। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার বিকেল থেকে রোববার ভোর রাত পর্যন্ত ১২০ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে সেখানে অভিযান পরিচালনা করি।

তিনি আরো বলেন, আটককৃতদের মধ্যে অনেকে জেনেভা ক্যাম্পের মাদককারবারি বুনিয়া সোহেল, পিচ্চি রাজা, চুয়া সেলিমের সহযোগী হিসেবে কাজ করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও অনেকের নাম উঠে এসেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধেও গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করবো৷ বিভিন্ন সময় জেনেভা ক্যাম্পে যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেটি যেনো ভবিষ্যতে না ঘটে সেজন্য ডিএমপি সদা তৎপর থাকবে।

এসি/আপ্র/২১/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, নির্মূল সম্ভব নয়: তেজগাঁও ডিসি

আপডেট সময় : ০৩:৩২:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুলিশ মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে পারে কিন্তু নির্মূল করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান।

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। গতকাল রাতে মোহাম্মদপুরের জেনেভাক্যাম্পে চালানো অভিযানের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

জেনেভা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে। কিন্তু কয়েকদিন পরেই তারা আবার জেল থেকে বেরিয়ে একই অপকর্মে জড়ায়। জেনেভা ক্যাম্পে মাদককারবারি নির্মূল করা যাচ্ছে না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি ইবনে মিজান বলেন, আমরা (পুলিশ) মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, একেবারে নির্মূল করা সম্ভব না। বিভিন্ন অভিযানের মাধ্যমে আমরা মাদক কারবারিদের ও মাদকসেবীদের নিয়ন্ত্রণে রাখি। আমরা এটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। আশা করি আমরা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছে যাবো।

গ্রেফতারের পর আসামি বেরিয়ে এসে একই অপরাধের জড়ানোর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশ হচ্ছে ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমের একটি পার্ট। আমাদের অংশে যেটুকু রয়েছে, আসামি গ্রেফতার তদন্ত প্রক্রিয়া এটি আমাদের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ ভালোভাবে করার চেষ্টা করি। যেন কোনো ত্রুটি না হয়। বাকি যে অংশটুকু- সেটিতে আমাদের কোনো হাত নেই। সেটি অন্য সংস্থা করেছে। এই প্রসঙ্গে আমাদের মন্তব্য না করাই সমুচীন।

মোহাম্মদপুরে অপরাধ বাড়ার কারণ কী জানতে চাইলে তেজগাঁওয়ের ডিসি বলেন, ৫ আগস্টের পর মোহাম্মদপুরে অপরাধের চরম বিস্ফোরণ ঘটেছে। যেসব অপরাধী বাইরে ছিল তারাও চলে এসেছে। অনেক অপরাধ সেখানে ঘটেছে৷ তারপর আমরা লাগাতার মোহাম্মদপুরে অভিযান চালিয়ে আসছি। গত ৬ থেকে ৭ মাসে আমরা ৩ হাজারের বেশি অপরাধীকে আইনের আওতায় এনেছি। আমরা চেষ্টা করেছি প্রতিদিন যেসব এলাকায় অপরাধীদের বিচরণ রয়েছে সেখানে অভিযান পরিচালনা করতে। এর ফলে বেশি অপরাধ হওয়া জায়গায় অপরাধ কমে গেছে। আমাদের অভিযান চলমান। আশা করি পরিস্থিতি আরো ভালো হবে।

মাদক ও সন্ত্রাসীদের স্বর্গরাজ্যখ্যাত রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মাদককারবারি, বিক্রেতা, অস্ত্রের জোগানদাতা ও ককটেল সংরক্ষণকারীসহ ৪০ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা থেকে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোর রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

অভিযানে গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ৮টি ককটেল, ২টি পেট্রোল বোমা, ৬টি সামুরাই, ৫টি হেলমেট, ৩টি ছুরি, ১১টি চোরাই মোবাইল ফোন, এবং ৫০০ গ্রাম হেরোইন জব্দ করা হয়।

এ বিষয়ে ডিসি মো. ইবনে মিজান বলেন, মোহাম্মদপুরের আলোচিত স্থান জেনেভা ক্যাম্পে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত হয়। মাদকের বিস্তারের জন্য এলাকাটি বেশ পরিচিত। পুলিশ নিয়মিতভাবে এখানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আসছি। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার বিকেল থেকে রোববার ভোর রাত পর্যন্ত ১২০ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে সেখানে অভিযান পরিচালনা করি।

তিনি আরো বলেন, আটককৃতদের মধ্যে অনেকে জেনেভা ক্যাম্পের মাদককারবারি বুনিয়া সোহেল, পিচ্চি রাজা, চুয়া সেলিমের সহযোগী হিসেবে কাজ করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও অনেকের নাম উঠে এসেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধেও গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করবো৷ বিভিন্ন সময় জেনেভা ক্যাম্পে যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেটি যেনো ভবিষ্যতে না ঘটে সেজন্য ডিএমপি সদা তৎপর থাকবে।

এসি/আপ্র/২১/০৯/২০২৫