ঢাকা ০৬:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫

মাঠে বাঘিনী বাড়িতে লক্ষ্মী ক্রিকেটার মারুফা

  • আপডেট সময় : ১০:০২:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ অগাস্ট ২০২৩
  • ১১১ বার পড়া হয়েছে

নীলফামারী প্রতিনিধি : মাঠে বাঘিনী হলেও বাড়িতে লক্ষ্মী শান্ত সাবলীল মারুফা। বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের হয়ে খেলে খুব অল্প সময়েই দেশ-বিদেশে প্রশংসা কুড়িয়েছেন এই বাঘিনী। তবে প্রখর রোদে প্রতিপক্ষকে হারানোর লক্ষ্যে স্থির থাকা মারুফার রয়েছে ভিন্ন এক রূপ। তিনি বাড়িতে সারাক্ষণই মা-বাবার সঙ্গে মেতে থাকেন খুনসুটিতে।
বাবার কাজে হাত লাগানো, মাকে রান্না বা ঘর গোছানোর কাজে সাহায্যের পাশাপাশি সবজি বাগানের পরিচর্যার অভ্যাস এখনো বদলায়নি মারুফার। খেলার প্রতিভা সামনে আনলেও নিজের অন্য সব প্রতিভা সামনে আনতে নারাজ এই বাঘিনী। খেলা ও বাড়ির কাজের পাশাপাশি পড়াশোনায়ও পিছিয়ে নেই ডান হাতি এই পেসার। ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ৪.০৬ পয়েন্ট নিয়ে পাস করেছেন তিনি।
সম্প্রতি ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে নিজ গ্রাম খাদিখোলায় বাবা-মায়ের কাছে ফিরেছেন তিনি। সেখানেই কথা হয় তার সঙ্গে।
সব মিলিয়ে ভারত সিরিজই এখন পর্যন্ত সেরা অভিজ্ঞতা জানিয়ে মারুফা বলেন, এটা আমার কাছে ভালো অনুভূতির। সবাই যখন আমার খেলার প্রশংসা করে তখন তো ভালোই লাগে। তাছাড়া আগে আমার এলাকার মানুষ আমার খেলা ভালো চোখে দেখতো না। শুধু আমার ভাইয়েরা আমাকে সাপোর্ট করতো। এখন পরিবারের সবাই আমার খেলা দেখে এটা ভালো লাগে।
মারুফা আরও বলেন, শুরু থেকে আমার জার্নিটা অনেক কঠিন ছিল। তবে আমার ভাইয়ের সাপোর্ট আমাকে এতদূর আসতে সাহায্য করেছে। সামনে আমার লক্ষ্য হলো আইপিএল, বিগ ব্যাসসহ বিশ্বের বড় লিগগুলোতে খেলা। যেন বিশ্বেও বাংলাদেশকে তুলে ধরতে পারি। সব সময় দেশের জন্য খেলতে চাই। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। খেলার পাশাপাশি মারুফার অন্যান্য প্রতিভার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এখনো আগের মতোই পরিবারের সাহায্য করি। কিন্তু এসব ব্যাপারে কথা বলতে চাই না।’
মারুফার বাবা মোহাম্মদ আইমুল্লাহ বলেন, আগে তো আমরা কেউ মারুফাকে খেলতে দিতে চাইতাম না। সবাই নানা কথা শুনিয়েছে, গালিগালাজ করেছে। এখন তো সবাই ওর খেলা দেখে ভালো কথা বলে। আমরা এখন গর্ববোধ করি। ওর মতো যারা খেলে সবার জন্য আমি এখন দোয়া করি।
মারুফা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন বিশ্বকাপের মঞ্চে। অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলঙ্কার মতো দলকে হারিয়ে সুপার সিক্সে উঠেছিল লাল-সবুজরা। সেই মঞ্চের তিন ম্যাচে দলের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকার করে ছিলেন মারুফা। এরপর অনূর্ধ্ব-১৯ এর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স জাতীয় দলে জায়গা করে দেয় প্রত্যন্ত গ্রামের মারুফাকে। জাতীয় দলে অভিষেকের পর থেকেই নিজের বোলিং দিয়ে নজর কারেন মারুফা। বাংলাদেশ দলের একমাত্র পেসার এখন তিনিই। সম্প্রতি ভারত সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে মারুফার নেওয়া চার উইকেট নিয়ে ধসিয়ে দিয়েছিলেন ভারতের ব্যাটিং লাইন আপ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে এক উইকেট পেলেও মাঠছাড়া করেছেন ভারতের ওপেনার স্মৃতি মান্ধানাকে।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

‘ক্ষমতায় থাকতে’ ইউনূস মৌলবাদীদের ‘একখানে করেছেন’: গয়েশ্বর

মাঠে বাঘিনী বাড়িতে লক্ষ্মী ক্রিকেটার মারুফা

আপডেট সময় : ১০:০২:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ অগাস্ট ২০২৩

নীলফামারী প্রতিনিধি : মাঠে বাঘিনী হলেও বাড়িতে লক্ষ্মী শান্ত সাবলীল মারুফা। বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের হয়ে খেলে খুব অল্প সময়েই দেশ-বিদেশে প্রশংসা কুড়িয়েছেন এই বাঘিনী। তবে প্রখর রোদে প্রতিপক্ষকে হারানোর লক্ষ্যে স্থির থাকা মারুফার রয়েছে ভিন্ন এক রূপ। তিনি বাড়িতে সারাক্ষণই মা-বাবার সঙ্গে মেতে থাকেন খুনসুটিতে।
বাবার কাজে হাত লাগানো, মাকে রান্না বা ঘর গোছানোর কাজে সাহায্যের পাশাপাশি সবজি বাগানের পরিচর্যার অভ্যাস এখনো বদলায়নি মারুফার। খেলার প্রতিভা সামনে আনলেও নিজের অন্য সব প্রতিভা সামনে আনতে নারাজ এই বাঘিনী। খেলা ও বাড়ির কাজের পাশাপাশি পড়াশোনায়ও পিছিয়ে নেই ডান হাতি এই পেসার। ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ৪.০৬ পয়েন্ট নিয়ে পাস করেছেন তিনি।
সম্প্রতি ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে নিজ গ্রাম খাদিখোলায় বাবা-মায়ের কাছে ফিরেছেন তিনি। সেখানেই কথা হয় তার সঙ্গে।
সব মিলিয়ে ভারত সিরিজই এখন পর্যন্ত সেরা অভিজ্ঞতা জানিয়ে মারুফা বলেন, এটা আমার কাছে ভালো অনুভূতির। সবাই যখন আমার খেলার প্রশংসা করে তখন তো ভালোই লাগে। তাছাড়া আগে আমার এলাকার মানুষ আমার খেলা ভালো চোখে দেখতো না। শুধু আমার ভাইয়েরা আমাকে সাপোর্ট করতো। এখন পরিবারের সবাই আমার খেলা দেখে এটা ভালো লাগে।
মারুফা আরও বলেন, শুরু থেকে আমার জার্নিটা অনেক কঠিন ছিল। তবে আমার ভাইয়ের সাপোর্ট আমাকে এতদূর আসতে সাহায্য করেছে। সামনে আমার লক্ষ্য হলো আইপিএল, বিগ ব্যাসসহ বিশ্বের বড় লিগগুলোতে খেলা। যেন বিশ্বেও বাংলাদেশকে তুলে ধরতে পারি। সব সময় দেশের জন্য খেলতে চাই। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। খেলার পাশাপাশি মারুফার অন্যান্য প্রতিভার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এখনো আগের মতোই পরিবারের সাহায্য করি। কিন্তু এসব ব্যাপারে কথা বলতে চাই না।’
মারুফার বাবা মোহাম্মদ আইমুল্লাহ বলেন, আগে তো আমরা কেউ মারুফাকে খেলতে দিতে চাইতাম না। সবাই নানা কথা শুনিয়েছে, গালিগালাজ করেছে। এখন তো সবাই ওর খেলা দেখে ভালো কথা বলে। আমরা এখন গর্ববোধ করি। ওর মতো যারা খেলে সবার জন্য আমি এখন দোয়া করি।
মারুফা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন বিশ্বকাপের মঞ্চে। অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলঙ্কার মতো দলকে হারিয়ে সুপার সিক্সে উঠেছিল লাল-সবুজরা। সেই মঞ্চের তিন ম্যাচে দলের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকার করে ছিলেন মারুফা। এরপর অনূর্ধ্ব-১৯ এর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স জাতীয় দলে জায়গা করে দেয় প্রত্যন্ত গ্রামের মারুফাকে। জাতীয় দলে অভিষেকের পর থেকেই নিজের বোলিং দিয়ে নজর কারেন মারুফা। বাংলাদেশ দলের একমাত্র পেসার এখন তিনিই। সম্প্রতি ভারত সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে মারুফার নেওয়া চার উইকেট নিয়ে ধসিয়ে দিয়েছিলেন ভারতের ব্যাটিং লাইন আপ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে এক উইকেট পেলেও মাঠছাড়া করেছেন ভারতের ওপেনার স্মৃতি মান্ধানাকে।