ঢাকা ০২:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

মাঠে নারীদের নামাজ আদায়, পরে গোমূত্র ঢেলে ‘শুদ্ধিকরণ’!

  • আপডেট সময় : ০৩:৪৩:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
  • ২৩ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের পুণের ঐতিহাসিক শানিওয়ারওয়াড়া দুর্গে নামাজ আদায় করেছিলেন কয়েকজন মুসলিম নারী। আর পরে নামাজ আদায়ের স্থানে বিজেপি সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে ‘গোমূত্র শুদ্ধিকরণ’ কর্মসূচি পালন করা হয়।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পুণের ঐতিহাসিক শানিওয়ারওয়াড়া দুর্গে কয়েকজন মুসলিম নারী নামাজ আদায় করেছেন, এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর রাজ্যজুড়ে রাজনৈতিক বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর বিজেপি সংসদ সদস্য মেধা কুলকার্নির নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী দুর্গে গিয়ে ওই স্থানকে ‘গোমূত্র’ দিয়ে শুদ্ধ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

গত শনিবার দুর্গে ঘটনাটি ঘটে বলে জানা গেছে। এরপর প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর (এএসআই)-এর এক কর্মকর্তা পুণে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। এখন পর্যন্ত ওই নারীদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

ভিডিওতে দেখা যায়, বিজেপি নেতারা দুর্গের ভেতর সেই স্থানটি গোমূত্র দিয়ে ধুয়ে ‘শুদ্ধি’ অনুষ্ঠান করছেন এবং ‘শিব বন্দনা’ পাঠ করছেন।

বিজেপি সংসদ সদস্য মেধা কুলকার্নি বলেন, “ঘটনাটি প্রত্যেকের জন্য উদ্বেগ ও ক্ষোভের বিষয়। এটি দুর্ভাগ্যজনক। শানিওয়ারওয়াড়া নামাজের জায়গা নয়। প্রশাসনকে আমরা অনুরোধ করছি, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে।”

পুলিশ জানিয়েছে, দুর্গে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং পুরো ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নিতেশ রানে ঘটনাটি নিন্দা জানিয়ে বলেন, “শানিওয়ারওয়াড়ার ইতিহাস রয়েছে, এটি বীরত্বের প্রতীক এবং হিন্দু সমাজের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। যদি হিন্দুরা হাজি আলিতে হনুমান চালিশা পাঠ করে, মুসলমানদের অনুভূতি আঘাত পাবে না? নামাজ পড়তে হলে মসজিদে যান। যদি হাজি আলিতে হনুমান চালিশা ও আরতি হয়, তখন কেউ যেন ক্ষুব্ধ না হয়।”

এদিকে বিজেপির এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছে বিরোধী মহাযুতি জোট।

এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ারের মুখপাত্র রূপালি পাটিল থোম্বরে বলেন, পুলিশের উচিত মেধা কুলকার্নির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগে মামলা করা। তিনি বলেন, “কুলকার্নি হিন্দু-মুসলমান বিভাজন তৈরি করার চেষ্টা করছেন, অথচ পুণেতে উভয় সম্প্রদায় বহুদিন ধরে শান্তিতে বসবাস করছে।”

শিবসেনা নেতা নীলম গোহরে বলেন, “শানিওয়ারওয়াড়া প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সংরক্ষিত স্থাপনা। এর নিজস্ব নিয়মকানুন রয়েছে, যা সবাইকে মানতে হবে। নিয়ম ভঙ্গ হলে জেলা প্রশাসন ও পুলিশই ব্যবস্থা নেবে। কেউ যেন এই ভেবে বসে না থাকে যে, তারাই সরকার।”

ওআ/আপ্র/২১/১০/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

মাঠে নারীদের নামাজ আদায়, পরে গোমূত্র ঢেলে ‘শুদ্ধিকরণ’!

আপডেট সময় : ০৩:৪৩:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের পুণের ঐতিহাসিক শানিওয়ারওয়াড়া দুর্গে নামাজ আদায় করেছিলেন কয়েকজন মুসলিম নারী। আর পরে নামাজ আদায়ের স্থানে বিজেপি সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে ‘গোমূত্র শুদ্ধিকরণ’ কর্মসূচি পালন করা হয়।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পুণের ঐতিহাসিক শানিওয়ারওয়াড়া দুর্গে কয়েকজন মুসলিম নারী নামাজ আদায় করেছেন, এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর রাজ্যজুড়ে রাজনৈতিক বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর বিজেপি সংসদ সদস্য মেধা কুলকার্নির নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী দুর্গে গিয়ে ওই স্থানকে ‘গোমূত্র’ দিয়ে শুদ্ধ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

গত শনিবার দুর্গে ঘটনাটি ঘটে বলে জানা গেছে। এরপর প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর (এএসআই)-এর এক কর্মকর্তা পুণে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। এখন পর্যন্ত ওই নারীদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

ভিডিওতে দেখা যায়, বিজেপি নেতারা দুর্গের ভেতর সেই স্থানটি গোমূত্র দিয়ে ধুয়ে ‘শুদ্ধি’ অনুষ্ঠান করছেন এবং ‘শিব বন্দনা’ পাঠ করছেন।

বিজেপি সংসদ সদস্য মেধা কুলকার্নি বলেন, “ঘটনাটি প্রত্যেকের জন্য উদ্বেগ ও ক্ষোভের বিষয়। এটি দুর্ভাগ্যজনক। শানিওয়ারওয়াড়া নামাজের জায়গা নয়। প্রশাসনকে আমরা অনুরোধ করছি, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে।”

পুলিশ জানিয়েছে, দুর্গে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং পুরো ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নিতেশ রানে ঘটনাটি নিন্দা জানিয়ে বলেন, “শানিওয়ারওয়াড়ার ইতিহাস রয়েছে, এটি বীরত্বের প্রতীক এবং হিন্দু সমাজের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। যদি হিন্দুরা হাজি আলিতে হনুমান চালিশা পাঠ করে, মুসলমানদের অনুভূতি আঘাত পাবে না? নামাজ পড়তে হলে মসজিদে যান। যদি হাজি আলিতে হনুমান চালিশা ও আরতি হয়, তখন কেউ যেন ক্ষুব্ধ না হয়।”

এদিকে বিজেপির এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছে বিরোধী মহাযুতি জোট।

এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ারের মুখপাত্র রূপালি পাটিল থোম্বরে বলেন, পুলিশের উচিত মেধা কুলকার্নির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগে মামলা করা। তিনি বলেন, “কুলকার্নি হিন্দু-মুসলমান বিভাজন তৈরি করার চেষ্টা করছেন, অথচ পুণেতে উভয় সম্প্রদায় বহুদিন ধরে শান্তিতে বসবাস করছে।”

শিবসেনা নেতা নীলম গোহরে বলেন, “শানিওয়ারওয়াড়া প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সংরক্ষিত স্থাপনা। এর নিজস্ব নিয়মকানুন রয়েছে, যা সবাইকে মানতে হবে। নিয়ম ভঙ্গ হলে জেলা প্রশাসন ও পুলিশই ব্যবস্থা নেবে। কেউ যেন এই ভেবে বসে না থাকে যে, তারাই সরকার।”

ওআ/আপ্র/২১/১০/২০২৫