ঢাকা ১২:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫

মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণ-হত্যার বিচার শুরু

  • আপডেট সময় : ০৩:৩৯:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • ৭৪ বার পড়া হয়েছে

মাগুরায় শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় বুধবার সকালে চার আসামিকে আদালতে নেওয়া হয় -ছবি সংগৃহীত

মাগুরা সংবাদদাতা: মাগুরায় শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে অভিযোগ গঠনের শুনানি হয়। এর মাধ্যমে আলোচিত এ ঘটনার বিচার শুরু হলো।

শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন চার আসামি শিশুটির বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি, বোনের স্বামী ও ভাশুর। ২৭ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনিরুল ইসলাম মুকুলসহ অন্য আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। মামলাটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় অ্যাটর্নি জেনারেলের সমমর্যাদাপ্রাপ্ত আইনজীবী এহসানুল হক সমাজীকে। তিনি শুনানিতে অংশ নেন। শুনানি শেষে এহসানুল হক সমাজী সাংবাদিকদের জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি ও অন্যান্য নথির ভিত্তিতে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, শিশুটির বোনের শ্বশুরের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (২) ধারায় (ধর্ষণের ফলে মৃত্যু) অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। অন্যদিকে বোনের স্বামী ও ভাশুরের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারার দ্বিতীয় অংশে (ভয়ভীতি প্রদর্শন) এবং শাশুড়ির বিরুদ্ধে ২০১ ধারায় (অপরাধের আলামত নষ্ট) অভিযোগ গঠন করা হয়।

শুনানি শেষে কৌঁসুলি এহসানুল হক সমাজী সাংবাদিকদের জানান, এই মামলায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতের স্বার্থে বিচারক আসামিদের বলেছেন, তাঁরা চাইলে নিজেদের পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন। আইনজীবী নিয়োগ করতে হলে কারাবিধি অনুযায়ী আবেদন করতে হবে। ওই ঘটনার দায় স্বীকার করছেন কি না, বিচারক জানতে চাইলে আসামিরা অপরাধে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন।

১৩ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মাগুরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলাউদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। পরে ১৭ এপ্রিল মামলাটি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয় এবং ২০ এপ্রিল অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয়। এর আগে ১৫ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব্যসাচী রায়ের আদালতে শিশুটির বোনের শ্বশুর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনি বলেন, ৬ মার্চ সকালে বোনের স্বামীর কক্ষে শিশুটিকে একা পেয়ে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করেন।

তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, আসামির জবানবন্দির সঙ্গে বাদীর এজাহারে কিছু অমিল রয়েছে। এজাহারে বলা হয়, ঘটনা ঘটেছিল রাতে এবং শিশুটির স্বামী ঘরের দরজা খুলে দেওয়ার পর তার বাবা শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। গত ১ মার্চ শিশুটি নিজ বাড়ি থেকে বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়। ৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে অচেতন অবস্থায় মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় হেলিকপ্টারে করে মরদেহ মাগুরায় আনা হয়। জানাজার পর উত্তেজিত জনতা শিশুটির বোনের শ্বশুরবাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এর আগে ৮ মার্চ শিশুটির মা মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়। বর্তমানে তাঁরা সবাই কারাগারে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ইইউ ও মেক্সিকোর ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণ-হত্যার বিচার শুরু

আপডেট সময় : ০৩:৩৯:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

মাগুরা সংবাদদাতা: মাগুরায় শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে অভিযোগ গঠনের শুনানি হয়। এর মাধ্যমে আলোচিত এ ঘটনার বিচার শুরু হলো।

শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন চার আসামি শিশুটির বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি, বোনের স্বামী ও ভাশুর। ২৭ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনিরুল ইসলাম মুকুলসহ অন্য আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। মামলাটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় অ্যাটর্নি জেনারেলের সমমর্যাদাপ্রাপ্ত আইনজীবী এহসানুল হক সমাজীকে। তিনি শুনানিতে অংশ নেন। শুনানি শেষে এহসানুল হক সমাজী সাংবাদিকদের জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি ও অন্যান্য নথির ভিত্তিতে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, শিশুটির বোনের শ্বশুরের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (২) ধারায় (ধর্ষণের ফলে মৃত্যু) অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। অন্যদিকে বোনের স্বামী ও ভাশুরের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারার দ্বিতীয় অংশে (ভয়ভীতি প্রদর্শন) এবং শাশুড়ির বিরুদ্ধে ২০১ ধারায় (অপরাধের আলামত নষ্ট) অভিযোগ গঠন করা হয়।

শুনানি শেষে কৌঁসুলি এহসানুল হক সমাজী সাংবাদিকদের জানান, এই মামলায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতের স্বার্থে বিচারক আসামিদের বলেছেন, তাঁরা চাইলে নিজেদের পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন। আইনজীবী নিয়োগ করতে হলে কারাবিধি অনুযায়ী আবেদন করতে হবে। ওই ঘটনার দায় স্বীকার করছেন কি না, বিচারক জানতে চাইলে আসামিরা অপরাধে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন।

১৩ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মাগুরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলাউদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। পরে ১৭ এপ্রিল মামলাটি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয় এবং ২০ এপ্রিল অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয়। এর আগে ১৫ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব্যসাচী রায়ের আদালতে শিশুটির বোনের শ্বশুর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনি বলেন, ৬ মার্চ সকালে বোনের স্বামীর কক্ষে শিশুটিকে একা পেয়ে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করেন।

তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, আসামির জবানবন্দির সঙ্গে বাদীর এজাহারে কিছু অমিল রয়েছে। এজাহারে বলা হয়, ঘটনা ঘটেছিল রাতে এবং শিশুটির স্বামী ঘরের দরজা খুলে দেওয়ার পর তার বাবা শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। গত ১ মার্চ শিশুটি নিজ বাড়ি থেকে বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়। ৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে অচেতন অবস্থায় মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় হেলিকপ্টারে করে মরদেহ মাগুরায় আনা হয়। জানাজার পর উত্তেজিত জনতা শিশুটির বোনের শ্বশুরবাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এর আগে ৮ মার্চ শিশুটির মা মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়। বর্তমানে তাঁরা সবাই কারাগারে।