ঢাকা ০৩:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫

মাকে বেঁধে মেয়েকে ধর্ষণ পলাতক আসামি গ্রেপ্তার

  • আপডেট সময় : ০২:২৪:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ অক্টোবর ২০২২
  • ৯৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফেনীর সোনাগাজীতে ২০০৩ সালে মাকে বেঁধে তার সামনে ১৩ বছরের মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি লাতু মিয়া গ্রেপ্তার হয়েছেন। সোমবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দীর্ঘ ১৮ বছর আত্মগোপনে থাকা লাতুকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন—র‌্যাব।
র‌্যাব জানায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য নানা অপকর্ম করতেন লাতু। ভিকটিমের বাবা মারা যাবার পর মা এবং তাকে বিভিন্ন সময় লাতু কুপ্রস্তাব দিত। তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় লাতু দলবল নিয়ে ২০০৩ সালের ১৩ মে ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে বিধবা মাকে অস্ত্রের মুখে বেঁধে ভিকিটমকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য জানান।
আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ফেনীর সোনাগাজীতে ২০০৩ সালের চাঞ্চল্যকর এই মামলায় ১৮ বছর ধরে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি লাতু মিয়াকে ঢাকার বাড্ডা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
২০০৩ সালে ১৩ মে গভীর রাতে সোনাগাজী উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের একটি বাড়িতে ঘরের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে লাতু মিয়া, ফারুক, জাহাঙ্গীর আলম ও কাশেম।
পরে তারা বিধবা মাকে অস্ত্রের মুখে বেঁধে তার সামনে ১৩ বছরের মেয়েকে গণধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ভিকটমের মা ১৩ মে সোনাগাজী থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেন।
র‌্যাব-৩ অধিনায়ক বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে বিগত ২০০৩ সালের ১৩ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরে মামলার বিচার কাজ শেষে ২০২২ সালের ১৪ জুলাই জাহাঙ্গীর আলম, আবুল কাশেম ও মো. লাতু মিয়াসহ অভিযুক্ত তিন আসামির বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ২ লাখ টাকা অর্থদ- করেন এবং মো. ফারুকের বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত না হওয়ায় খালাস দেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লাতু র‌্যাবকে জানায়, ঘটনার সময়ে সোনাগাজী এলাকায় মো. ফারুকের নেতৃত্বে সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ লক্ষ্যে নানা অপকর্ম করতো। এছাড়ার বিভিন্ন সময় নারীদের উত্যক্ত করতো।
স্বামীর মৃত্যুর পর ভিকটিমের বিধবা মা অনেক কষ্টে দিনযাপন করছিলেন। তারা বিভিন্ন সময়ে ভিকটিম ও তার মাকে কুপ্রস্তাব দিত। কিন্তু কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ২০০৩ সালের ১৩ মে গভীর রাতে তারা চারজন মিলে ভিকটিমকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে। পরে ঘটনাটি সারা দেশে আলোচিত হলে লাতু আত্মগোপনে চলে যায়।
র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, দলবদ্ধ ধর্ষণের পর লাতু চট্টগ্রামে গিয়ে রিকশাচালক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ শুরু করে। কিন্তু কোনো কায়িক পরিশ্রম তার ভালো লাগত না। তারপর চুরি ডাকাতিতে জড়িয়ে পড়ে। একটি ডাকাতির ঘটনায় সে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হাতে গ্রেপ্তার হয়ে জেলও খাটে। জামিনে বের হয়ে সে গোপনে তার বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাসায় অতিথি হিসেবে জীবনযাপন করত।
মাঝে মাঝে গোপনে তার নিজ বাড়িতে এসে স্ত্রী-সন্তানের সাথে দেখা করত এবং তাদের নিকট হতে অর্থ নিয়ে যেত। তারপর সে কিছুদিন সিলেটে মাজার এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। একপর্যায়ে সে ঢাকায় এসে ফুটপাতে হকারি শুরু করে।
পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে পড়ার আশংকা থেকে দারোয়ানের চাকরি নেয়। পলাতক সময়ে নিজেকে অলি নবী হিসেবে পরিচয় দিত। মামলার রায়ে মৃত্যুদ-ের আদেশ হওয়ার পর ঢাকায় একটি মাজারে আত্মগোপন করে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে লেজেন্ড মর্যাদা পেলেন বেলিন্ডা ক্লার্ক

মাকে বেঁধে মেয়েকে ধর্ষণ পলাতক আসামি গ্রেপ্তার

আপডেট সময় : ০২:২৪:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ অক্টোবর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফেনীর সোনাগাজীতে ২০০৩ সালে মাকে বেঁধে তার সামনে ১৩ বছরের মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি লাতু মিয়া গ্রেপ্তার হয়েছেন। সোমবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দীর্ঘ ১৮ বছর আত্মগোপনে থাকা লাতুকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন—র‌্যাব।
র‌্যাব জানায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য নানা অপকর্ম করতেন লাতু। ভিকটিমের বাবা মারা যাবার পর মা এবং তাকে বিভিন্ন সময় লাতু কুপ্রস্তাব দিত। তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় লাতু দলবল নিয়ে ২০০৩ সালের ১৩ মে ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে বিধবা মাকে অস্ত্রের মুখে বেঁধে ভিকিটমকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য জানান।
আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ফেনীর সোনাগাজীতে ২০০৩ সালের চাঞ্চল্যকর এই মামলায় ১৮ বছর ধরে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি লাতু মিয়াকে ঢাকার বাড্ডা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
২০০৩ সালে ১৩ মে গভীর রাতে সোনাগাজী উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের একটি বাড়িতে ঘরের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে লাতু মিয়া, ফারুক, জাহাঙ্গীর আলম ও কাশেম।
পরে তারা বিধবা মাকে অস্ত্রের মুখে বেঁধে তার সামনে ১৩ বছরের মেয়েকে গণধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ভিকটমের মা ১৩ মে সোনাগাজী থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেন।
র‌্যাব-৩ অধিনায়ক বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে বিগত ২০০৩ সালের ১৩ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরে মামলার বিচার কাজ শেষে ২০২২ সালের ১৪ জুলাই জাহাঙ্গীর আলম, আবুল কাশেম ও মো. লাতু মিয়াসহ অভিযুক্ত তিন আসামির বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ২ লাখ টাকা অর্থদ- করেন এবং মো. ফারুকের বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত না হওয়ায় খালাস দেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লাতু র‌্যাবকে জানায়, ঘটনার সময়ে সোনাগাজী এলাকায় মো. ফারুকের নেতৃত্বে সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ লক্ষ্যে নানা অপকর্ম করতো। এছাড়ার বিভিন্ন সময় নারীদের উত্যক্ত করতো।
স্বামীর মৃত্যুর পর ভিকটিমের বিধবা মা অনেক কষ্টে দিনযাপন করছিলেন। তারা বিভিন্ন সময়ে ভিকটিম ও তার মাকে কুপ্রস্তাব দিত। কিন্তু কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ২০০৩ সালের ১৩ মে গভীর রাতে তারা চারজন মিলে ভিকটিমকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে। পরে ঘটনাটি সারা দেশে আলোচিত হলে লাতু আত্মগোপনে চলে যায়।
র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, দলবদ্ধ ধর্ষণের পর লাতু চট্টগ্রামে গিয়ে রিকশাচালক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ শুরু করে। কিন্তু কোনো কায়িক পরিশ্রম তার ভালো লাগত না। তারপর চুরি ডাকাতিতে জড়িয়ে পড়ে। একটি ডাকাতির ঘটনায় সে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হাতে গ্রেপ্তার হয়ে জেলও খাটে। জামিনে বের হয়ে সে গোপনে তার বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাসায় অতিথি হিসেবে জীবনযাপন করত।
মাঝে মাঝে গোপনে তার নিজ বাড়িতে এসে স্ত্রী-সন্তানের সাথে দেখা করত এবং তাদের নিকট হতে অর্থ নিয়ে যেত। তারপর সে কিছুদিন সিলেটে মাজার এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। একপর্যায়ে সে ঢাকায় এসে ফুটপাতে হকারি শুরু করে।
পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে পড়ার আশংকা থেকে দারোয়ানের চাকরি নেয়। পলাতক সময়ে নিজেকে অলি নবী হিসেবে পরিচয় দিত। মামলার রায়ে মৃত্যুদ-ের আদেশ হওয়ার পর ঢাকায় একটি মাজারে আত্মগোপন করে।