প্রযুক্তি ডেস্ক : টুইটারের প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জ্যাক ডরসি। ২০০৬ সালে বিজ স্টোন, ইভান উইলিয়ামস এবং নোয়া গ্লাসের সঙ্গে মিলে মাইক্রোব্লগিং সাইটটি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। তারপর থেকেই ছিলেন টুইটারের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্বে।
এর মধ্যেই গড়ে তোলেন লেনদেন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্কয়ার। প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব পালন করছিলেন সেখানেও। এই বছরগুলোতে বিতর্ক পিছু ছাড়েনি মার্কিন এ প্রযুক্তি উদ্যোক্তার। সামাল দিতে হয়েছে উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গের অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের ঘটনা। এমনকি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে নিজ প্ল্যাটফর্মে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন তিনি। টুইটারে ডরসির জায়গাটি নেবেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা পারাগ আগারওয়াল। রোববার এক টুইটে ডরসি প্রাতিষ্ঠানিক বিবৃতির বাইরে লেখেন, “আমি টুইটারকে ভালোবাসি।”রয়টার্সের এক প্রতিবেদনের আলোকে চলুন দেখা নেওয়া যাক টুইটারে ডরসির পথচলার পরিক্রমা-
২০০৬: মাইক্রোব্লগিং সাইটটিতে প্রথম টুইট পোস্ট করেন ডরসি। তাতে লেখা ছিল- “জাস্ট সেটিং আপ মাই টুইটার।”
২০০৮: সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইভান উইলিয়ামসকে প্রধান নির্বাহী হিসেবে নির্বাচিত করে পরিচালনা পর্ষদ, ডরসিকে বাধ্য করে পদ ছাড়তে। তিনি রয়ে যান চেয়ারম্যানের ভূমিকায়।
২০১৩: টুইটার শেয়ার বাজারে নাম লেখায়। বাজার মূল্যমান দাঁড়ায় তিন হাজার একশ’ কোটিতে।
২০১৫: ডিক কস্টোলো’র পদত্যাগে ফের টুইটারের প্রধান নির্বাহীর পদে ফেরেন ডরসি।
২০১৭: নিজ চাকরির শেষ দিনটিতে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট ড্যিআক্টিভেট করে দেন এক কর্মী। ১১ মিনিট পর তা আবার চালু করে দেওয়া হয়।
২০১৮: টুইটার টুইটের অক্ষর সীমা বাড়িয়ে ১৪০ থেকে ২৮০ করে। এ নিয়ে টুইটার ব্যবহারকারীরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
২০২০: অ্যাক্টিভিস্ট হেজ ফান্ড এলিয়ট ম্যানেজমেন্ট টুইটারে পরিবর্তনের দাবি তোলে। পরিবর্তনের মধ্যে ছিল ডরসিকে প্রধান নির্বাহী পদ থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়টিও।
২০২০: এলিয়ট ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে এক সমঝোতা চুক্তিতে আসে টুইটার। ডরসিকে প্রধান নির্বাহী হিসেবে থাকতে দেওয়ার বিনিময়ে তিন নতুন পরিচালক যোগ করে প্রতিষ্ঠানটি।
২০২১: যুক্তরাষ্ট্রে ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় টুইটার স্থায়ীভাবে বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করে টুইটারে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, আরও সহিংসতার আশঙ্কা থেকেই পদক্ষেপটি নিয়েছে তারা।
২০২১: টুইটার ফেব্রুয়ারিতে বছরে অন্তত সাড়ে সাতশ’ কোটি ডলার আয়ের পরিকল্পনা তুলে ধরে। পাশাপাশি জানায়, ২০২৩ নাগাদ মনিটাইজ করা সম্ভব এমন দৈনন্দিন সক্রিয় ৩১ কোটি ৫০ লাখ ব্যবহারকারী বা যারা বিজ্ঞাপন দেখে থাকে – তাদের ব্যাপারে।
২০২১: মার্চে ডরসি নিজের প্রথম টুইটটিকে ‘নন-ফাঞ্জিবল টোকেন’ বা এনএফটি হিসেবে বিক্রি করেন। দাম উঠেছিল ২৯ লাখ ডলারের কিছুটা বেশি।
২০২১: সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প জুলাইয়ে টুইটার, ফেইসবুক ও গুগলের বিরুদ্ধে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ আনেন রক্ষণশীলদের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণের, কণ্ঠরোধের।
২০২১: সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখে শেষ হওয়া প্রান্তিকে টুইটার জানায় তাদের গড় ২১ কোটি ১০ লাখ দৈনন্দিন সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে যাদেরকে মনিটাইজ করা সম্ভব।
২০২১: ফোর্বসের দেওয়া তথ্য অনুসারে নভেম্বরের ২৯ তারিখে ডরসির নেট সম্পদের মূল্য এক হাজার একশ’ ৮০ কোটি ডলার।
মাইক্রোব্লগিং পথিকৃৎ থেকে শতকোটিপতি: ডরসি’র টুইটার পরিক্রমা
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ