নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবাসন ও পরিবহন ফি আদায়ের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বর্তমান সময়ে এসব ফি আদায়কে ‘অমানবিক’ উল্লেখ করে তা প্রত্যাহার চেয়েছে সরকারসমর্থক সংগঠনটি। গতকাল সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে এই দাবি জানানো হয়। সমাবেশ থেকে ছাত্রলীগ নেতারা শিক্ষার্থীদের দ্রুত টিকার আওতায় এনে হল খুলে দেওয়ার দাবি জানান।
এছাড়া মাদকমুক্ত ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক নিশ্চয়তা, আবাসন সঙ্কট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের রোডম্যাপ প্রণয়ন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন এবং কোভিড-১৯ চিকিৎসার সুব্যবস্থার দাবি জানানো হয় সমাবেশ থেকে। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর গত বছর ১৮ মার্চ থেকে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। সেশনজটের আশঙ্কায় সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে আগামী জুলাই থেকে আবাসিক হল না খুলে সশরীরে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণির বিভিন্ন বর্ষ বা সেমিস্টারের আটকে থাকা চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
মহামারীকালে অনলাইনে ক্লাস হলেও নির্ধারিত সময়ে ভর্তি ও পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে পারেননি শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি শিক্ষার্থীরা ভর্তি ও ফরম পূরণ করতে গেলে তাদেরকে হলের আবাসন ফি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে যাতায়াত বাবদ পরিবহন ফি দিতে হয়।
সমাবেশ ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা পরিবহন সুবিধা গ্রহণ না করলেও তাদেরকে এক হাজার আশি টাকা করে পরিবহন ফি দিতে হচ্ছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধিক্কার জানিয়ে বলছি, আপনারা অভিভাবকসুলভ আচরণ করতে ব্যার্থ হয়েছেন। আমাদের আহ্বান থাকবে আপনারা পরিবহন ফি নেওয়া বন্ধ করবেন। যদি তা প্রত্যাহার না করেন, আমরা মনে করব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নৈতিকতা ভুল পথে চলে গেছে।’
ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘করোনার কারণে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা নানা রকম মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে এবং অনেক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যাও করেছে। ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলতে চাই আপনারা অতি দ্রুত শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনেশনের আওতায় এনে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করে শিক্ষার্থীদের এই ক্ষতি থেকে রক্ষা করুন। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স উন্নত করে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনতে হবে।’
হেফাজতের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব নাসির গ্রেপ্তার
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব নাসির উদ্দিন মুনিরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার হাটহাজারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল ইসলাম। পুলিশ সুপার বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে হাটহাজারীতে তা-বের ঘটনাসহ নাসির উদ্দিন মুনিরের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা আছে। পলাতক ছিলেন তিনি। ‘সোমবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে হাটহাজারী থেকে নাসির উদ্দিন মুনিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তীর দিনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতায় বিক্ষোভের সময় হাটহাজারী থানায় আক্রমণ করে ভাংচুর চালায় হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। পাশাপাশি সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়, উপজেলা সদর ভূমি অফিসে ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করা হয়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে সেদিন চারজন নিহত হন। সেদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেও ব্যাপক তা-ব চালায় মাদ্রাসার ছাত্ররা। এসব ঘটনায় পরে বিভিন্ন থানায় মামলা হয়, নাশকতায় উসকানিদাতা হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয় হেফাজত ইসলামের বিভিন্ন স্তরের কয়েকজন নেতাকে। হাটহাজারীর ঘটনায় ৩০ মার্চ রাতে পুলিশ বাদী হয়ে চারটি এবং ভূমি অফিসে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দুটি মামলা করা হয়। এসব মামলায় আসামি করা হয় কয়েক হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে। সংঘর্ষের ঘটনার প্রায় এক মাস পর গত ২২ এপ্রিল হেফাজত ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী এবং বিএনপি নেতা মীর হেলালকে আসামি করে আরও তিনটি মামলা হয় হাটহাজারীতে। এসব মামলায় হেফাজতের কেন্দ্রীয় বেশ কয়েকজন নেতার পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর শূরা সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মহামারীতে ঢাবির আবাসন-পরিবহন ফি অমানবিক : ছাত্রলীগ
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ