ঢাকা ০৬:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

মহামারিতে নতুন আতঙ্ক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট

  • আপডেট সময় : ১১:২৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২১
  • ৭২ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রায় দুই বছর হতে চললো মহামারির কোভিডের দাপট। এর মধ্যে বিভিন্ন সময় রূপ বদলেছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস। আলফা, বেটা, গামা ও ডেলটা পর এখন ‘ওমিক্রন’ ভ্যারিয়েন্টের অস্তিত্ব মেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। ‘ওমিক্রন’ বিশ্বে এখন নতুন আতঙ্কের কারণ। ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার রোধে আফ্রিকার ৭ দেশে ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ করছে একের পর এক দেশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা- ডব্লিউএইচও’র একটি প্যানেল ‘ওমিক্রন, বি১.১.৫২৯ কে উদ্বেগের ভ্যারিয়েন্ট অ্যাখায়িত করেছে। প্রাথমিকভাবে এখন পর্যন্ত এটিকে অত্যন্ত সংক্রমণযোগ্য ভাইরাস হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
দ. আফ্রিকা, বতসোয়ানা, হংকং এবং ইসরায়েল ছাড়াও ইউরোপের একমাত্র দেশ হিসেবে বেলজিয়ামেও এই ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি মেলেছে। পূর্ব আফ্রিকার দেশ মালাউই থেকে ইসরায়েলে আসা এক পর্যটক নতুন ধরনে শনাক্ত হয়। পরিস্থিতি জটিল তা বুঝতে বাকি নেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গত শুক্রবার তিনি বলেন, নতুন ভ্যারিয়েন্টটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, ফলে আফ্রিকার ৭ দেশের সঙ্গে ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ করতে বাধ্য হয়েছি। যা আগামী সোমবার থেকে কার্যকর হতে চলছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সতর্ক থাকবো।
করোনার নতুন স্ট্রেইন ‘ওমিক্রন’ নিয়ে যেহেতু এখনও বিস্তর তথ্য পাওয়া যায়নি, তাই এর ঝুঁকি কতটুকু তা এখনও অজানা। তবে ডব্লিউএইচও প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, এটি অন্যান্য অত্যন্ত সংক্রমণযোগ্য ভ্যারিয়েন্টের মতো ঝুঁকি রয়েছে। আর বর্তমানে বাজারে যে করোনার প্রতিষেধক টিকা রয়েছে এর বিরুদ্ধে কম কার্যকর কিনা তা জানতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভিড-১৯ বিষয়ক কারিগরি কমিটির প্রধান মারিয়া ভন কারখোভ জানালেন, ‘ওমিক্রন, বি১.১.৫২৯ কে উদ্বেগের ভ্যারিয়েন্ট বলা হচ্ছে কারণ এর ভেতর দুশ্চিন্তা করার মতো কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা গেছে।’ মারিয়া তার টুইটারে আরও উল্লেখ করেন, ‘এই ভ্যারিয়েন্টে অনেক মিউটেশন দেখা গেছে। কিছু মিউটেশন (জিনগত পরিবর্তন) সত্যিই উদ্বেগের।’
প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে দক্ষিণ আফ্রিকার ৭টি দেশের সঙ্গে ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এর ২৭ দেশ। সাময়িকভাবে আফ্রিকার এই দেশগুলো থেকে কেউ ভ্রমণ করতে পারবে না। তবে এই সাত দেশ থেকে মার্কিন নাগরিকরা নিজ দেশে ফিরতে পারবেন বলে জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। এদিকে ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ তার দেশের আইনমন্ত্রীদের বলেছেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব এই বিষয়ে অগ্রসর হওয়া উচিত’। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে রাশিয়াও আগামী রবিবার থেকে ভ্রমণে বিধিনিষেধের আরোপের ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। উদ্বেগ প্রকাশ করে ইইউ কমিশনের প্রসিডেন্ট উরসুলা ভন বলেন, ‘নতুন স্ট্রেইন ওমিক্রন নিয়ে পরিষ্কার ধারণা না পাওয়া পর্যন্ত ফ্লাইট স্থগিত করতে হবে। শনাক্ত হওয়া দেশগুলো থেকে আসা যাত্রীদের অবশ্যই আলাদা করা উচিত। এই নিয়মগুলো কঠোরভাবে মানা উচিত’।
গত শুক্রবার সংবাদমাধ্যম সিএনএন-কে ওমিক্রন নিয়ে উদ্বেগের কথা শুনিয়ে মার্কিন শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউচি। ফাউচি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত নতুন ভ্যারিন্টের অস্তিত্ব না মিললেও চিন্তার কারণ রয়েছে। গবেষণার ফলাফল হাতে না আসা পর্যন্ত আমরা এই মুহূর্তে সঠিকভাবে বলতে পারছি না’।
বিশ্বের অনেক দেশ যখন আফ্রিকায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে তখন এর বিরুদ্ধে কথা বলেছেন আফ্রিকার কেন্দ্রীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থার পরিচালক ড. জন নেকেনগাসং। তিনি বলেন, ‘আগে যেই ভ্যারিয়েন্ট এসেছিল তার সংক্রমণ রোধে ভ্রমণসহ বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েও বিস্তার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় কাজে আসেনি’। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, মাস্ক পড়া এবং বার বার হাত ধোয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মহামারিতে নতুন আতঙ্ক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট

আপডেট সময় : ১১:২৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রায় দুই বছর হতে চললো মহামারির কোভিডের দাপট। এর মধ্যে বিভিন্ন সময় রূপ বদলেছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস। আলফা, বেটা, গামা ও ডেলটা পর এখন ‘ওমিক্রন’ ভ্যারিয়েন্টের অস্তিত্ব মেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। ‘ওমিক্রন’ বিশ্বে এখন নতুন আতঙ্কের কারণ। ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার রোধে আফ্রিকার ৭ দেশে ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ করছে একের পর এক দেশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা- ডব্লিউএইচও’র একটি প্যানেল ‘ওমিক্রন, বি১.১.৫২৯ কে উদ্বেগের ভ্যারিয়েন্ট অ্যাখায়িত করেছে। প্রাথমিকভাবে এখন পর্যন্ত এটিকে অত্যন্ত সংক্রমণযোগ্য ভাইরাস হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
দ. আফ্রিকা, বতসোয়ানা, হংকং এবং ইসরায়েল ছাড়াও ইউরোপের একমাত্র দেশ হিসেবে বেলজিয়ামেও এই ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি মেলেছে। পূর্ব আফ্রিকার দেশ মালাউই থেকে ইসরায়েলে আসা এক পর্যটক নতুন ধরনে শনাক্ত হয়। পরিস্থিতি জটিল তা বুঝতে বাকি নেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গত শুক্রবার তিনি বলেন, নতুন ভ্যারিয়েন্টটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, ফলে আফ্রিকার ৭ দেশের সঙ্গে ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ করতে বাধ্য হয়েছি। যা আগামী সোমবার থেকে কার্যকর হতে চলছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সতর্ক থাকবো।
করোনার নতুন স্ট্রেইন ‘ওমিক্রন’ নিয়ে যেহেতু এখনও বিস্তর তথ্য পাওয়া যায়নি, তাই এর ঝুঁকি কতটুকু তা এখনও অজানা। তবে ডব্লিউএইচও প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, এটি অন্যান্য অত্যন্ত সংক্রমণযোগ্য ভ্যারিয়েন্টের মতো ঝুঁকি রয়েছে। আর বর্তমানে বাজারে যে করোনার প্রতিষেধক টিকা রয়েছে এর বিরুদ্ধে কম কার্যকর কিনা তা জানতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভিড-১৯ বিষয়ক কারিগরি কমিটির প্রধান মারিয়া ভন কারখোভ জানালেন, ‘ওমিক্রন, বি১.১.৫২৯ কে উদ্বেগের ভ্যারিয়েন্ট বলা হচ্ছে কারণ এর ভেতর দুশ্চিন্তা করার মতো কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা গেছে।’ মারিয়া তার টুইটারে আরও উল্লেখ করেন, ‘এই ভ্যারিয়েন্টে অনেক মিউটেশন দেখা গেছে। কিছু মিউটেশন (জিনগত পরিবর্তন) সত্যিই উদ্বেগের।’
প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে দক্ষিণ আফ্রিকার ৭টি দেশের সঙ্গে ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এর ২৭ দেশ। সাময়িকভাবে আফ্রিকার এই দেশগুলো থেকে কেউ ভ্রমণ করতে পারবে না। তবে এই সাত দেশ থেকে মার্কিন নাগরিকরা নিজ দেশে ফিরতে পারবেন বলে জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। এদিকে ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ তার দেশের আইনমন্ত্রীদের বলেছেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব এই বিষয়ে অগ্রসর হওয়া উচিত’। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে রাশিয়াও আগামী রবিবার থেকে ভ্রমণে বিধিনিষেধের আরোপের ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। উদ্বেগ প্রকাশ করে ইইউ কমিশনের প্রসিডেন্ট উরসুলা ভন বলেন, ‘নতুন স্ট্রেইন ওমিক্রন নিয়ে পরিষ্কার ধারণা না পাওয়া পর্যন্ত ফ্লাইট স্থগিত করতে হবে। শনাক্ত হওয়া দেশগুলো থেকে আসা যাত্রীদের অবশ্যই আলাদা করা উচিত। এই নিয়মগুলো কঠোরভাবে মানা উচিত’।
গত শুক্রবার সংবাদমাধ্যম সিএনএন-কে ওমিক্রন নিয়ে উদ্বেগের কথা শুনিয়ে মার্কিন শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউচি। ফাউচি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত নতুন ভ্যারিন্টের অস্তিত্ব না মিললেও চিন্তার কারণ রয়েছে। গবেষণার ফলাফল হাতে না আসা পর্যন্ত আমরা এই মুহূর্তে সঠিকভাবে বলতে পারছি না’।
বিশ্বের অনেক দেশ যখন আফ্রিকায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে তখন এর বিরুদ্ধে কথা বলেছেন আফ্রিকার কেন্দ্রীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থার পরিচালক ড. জন নেকেনগাসং। তিনি বলেন, ‘আগে যেই ভ্যারিয়েন্ট এসেছিল তার সংক্রমণ রোধে ভ্রমণসহ বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েও বিস্তার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় কাজে আসেনি’। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, মাস্ক পড়া এবং বার বার হাত ধোয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।