প্রযুক্তি ডেস্ক: আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা আইএসএস যথেষ্ট জীবাণুমুক্ত এবং একটু ময়লার কারণে সেখানে থাকা নভোচারীরা উপকার পেতে পারেন বলে উঠে এসেছে নতুন এক গবেষণায়।
আইএসএসে সময় কাটানোর ফলে নভোচারীরা প্রায়ই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সমস্যা, ত্বকের ব্যাধি ও অন্যান্য অবস্থার মুখে পড়েন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
গবেষণা বলছে, পৃথিবীর তুলনায় স্টেশনটিতে জীবাণুর পরিমাণ অনেক কম বলেই এমনটি হতে পারে।
মহাকাশ স্টেশনে থাকা বিভিন্ন জীবাণু নভোচারীরাই সেখানে বহন করে নিয়ে যায়। গবেষকরা বলছেন, প্রকৃতি থেকে আসা আরো জীবাণু দিয়ে মহাকাশ স্টেশনকে ‘ময়লা’ করার কিছু সুবিধা পেতে পারেন নভোচারীরা।
বিষয়টিকে বাগান করার সুবিধার সঙ্গে তুলনা করেছেন গবেষকরা অর্থাৎ বাগান করার সময় মানুষ যেমন উপকার পেয়ে থাকেন বিষয়টি ঠিক তেমনই। যারা বাগান করেন তাদের রোগ প্রতিরোধ সক্ষমতা বাড়ে বলে উঠে এসেছে গবেষণায়।
বাগান করা থেকে মাটির সংস্পর্শে আসা ও আমাদের নিজস্ব ময়লার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার মধ্যে একটি বড় পার্থক্য রয়েছে। আর এটি এমন এক ধরনের ঘটনা, যা আমরা যে কঠোর আবদ্ধ পরিবেশে থাকি, যেখানে বাইরে থেকে জীবাণুর সুস্থ বিভিন্ন উৎস থেকে কোনো ধারাবাহিক ইনপুট থাকে না, এক বিবৃতিতে বলেছেন ‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া সান দিয়াগো’র রব নাইট।
গবেষণায় মহাকাশ স্টেশনের ৮০৩টি আলাদা সোয়াবের নমুনা সংগ্রহের জন্য নভোচারীদের সঙ্গে কাজ করেছেন বিজ্ঞানীরা, যা আগের একই ধরনের জরিপে নেওয়া নমুনার চেয়ে প্রায় একশ গুণ বেশি।
এরপর থ্রিডি মানচিত্র তৈরি করেন গবেষকরা। থ্রিডি মানচিত্রে দেখা গেছে, এসব সোয়াব কোন জায়গা থেকে নেওয়া হয়েছিল, এরা কী ধরনের জীবাণু ও কীভাবে এরা সেখানে থাকা বিভিন্ন রাসায়নিকের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করেছে।
গবেষকরা বলছেন, বেশিরভাগ জীবাণু মানুষের ত্বক থেকে এসেছে। পাশাপাশি মহাকাশ স্টেশন জুড়ে ‘পরিষ্কার’ বিভিন্ন রাসায়নিকেরও সন্ধান মিলেছে।
গবেষণায় উঠে এসেছে, গবেষকদের সংগ্রহ করা এসব জীবাণুর পরিমাণ পৃথিবীর চেয়ে অনেক কম বৈচিত্র্যময়। আর এসব জীবাণুর সঙ্গে মিল রয়েছে হাসপাতালের মতো অন্যান্য জীবাণুমুক্ত পরিবেশের।
‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন হ্যাজ এ ইউনিক অ্যান্ড এক্সট্রিম মাইক্রোবিয়াল অ্যান্ড কেমিক্যাল এনভায়রনমেন্ট ড্রিভেন বাই ইউজ প্যাটার্নস’ শিরোনামে গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘সেল’-এ।