ঢাকা ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

মহাকাশ স্টেশনে দীর্ঘ মিশনে যাচ্ছেন প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী

  • আপডেট সময় : ০৯:২৩:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ নভেম্বর ২০২১
  • ১০৫ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ২২ বছর আগের কথা। ১৯৯৮ সালের নভেম্বরে মহাকাশে পৃথিবীর কক্ষপথে মানুষের বসবাসযোগ্য কৃত্রিম উপগ্রহ ‘ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন’কে (আইএসএস) পাঠানো হয়। এরপর দুদশকের বেশি সময় কেটে গেছে। এই প্রথম আইএসএস-এ দীর্ঘ কোনো মিশনের জন্য যাচ্ছেন প্রথম কোনো কৃষ্ণাঙ্গ নারী নভোচারী। তার নাম জেসিকা ওয়াটকিন্স।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা এক ঘোষণায় জানিয়েছে, আগামী বছেরের এপ্রিলে স্পেসএক্স ক্রু-৪ মিশনের অন্যতম অভিযাত্রী জেসিকা।
মহাকাশে অবশ্য আগেও পা রেখেছেন কৃষ্ণাঙ্গ নারী নভোচারী। তবে সেটা দীর্ঘ সময়ের জন্য নয়। ১৯৯২ সালে স্পেস শাটল এনডেভারে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন প্রথম আমেরিকান-আফ্রিকান নারী মে জেমিসন।
ছয় সহযাত্রীর সঙ্গে এনডেভার মহাকাশযানে পৃথিবীকে ১২৬ বার প্রদক্ষিণ করেছিলেন মে। মহাকাশে কাটিয়েছিলেন ১৯০ ঘণ্টা। তবে নারী-পুরুষ মিলিয়েও কৃষ্ণাঙ্গ নভোচারীর সংখ্যা খুবই কম। ১৯৯৫ সালে প্রথম মহাকাশে পা রাখেন কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষ অভিযাত্রী বার্নার্ড হ্যারিস জুনিয়র। ২০২০ সালের নভেম্বরে মহাকাশে যান ভিক্টর গ্লোভার জুনিয়র। তিনিই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ, যিনি দীর্ঘসময়ের জন্য আইএসএসে অবস্থান করেছেন।
২০১৬ সালে সাড়া ফেলে দিয়েছিল নাসার তিন কৃষ্ণাঙ্গ নারীর বর্ণবৈষম্যের শিকার হওয়ার কাহিনি। তাদের জীবন নিয়ে সে বছর তৈরি হয়েছিল ফিল্ম ‘হিডেন ফিগারস’। ওই নামে মার্গট লি শ্যাটেরলির একটি বই থেকে ফিল্মটি তৈরি হয় হলিউডে।
নাসার তিন কৃষ্ণাঙ্গ গণিতজ্ঞ ও ইঞ্জিনিয়ার ক্যাথরিন জনসন, ডরোথি ভন এবং মেরি জ্যাকসনকে কিভাবে লিঙ্গ ও বর্ণবৈষম্যের শিকার হতে হয়েছিল, তাই দেখানো হয় ছবিতে। বেশি দিন আগের কথা নয়, নাসার প্রথম নারী ইঞ্জিনিয়ার মেরি জ্যাকসনকে সম্মান জানিয়ে ২০২০ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে নাসার সদর দফতরের নাম মেরির নামে রাখা হয়। এর দু’বছরের মাথায় এবার মহাকাশ স্টেশনে দীর্ঘ সময়ের মিশনে যাবেন প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী।
২০১৭ সালে নাসার পরীক্ষায় মহাকাশচারী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন জেসিকা। তারপর থেকে তার প্রশিক্ষণ চলছে। জেসিকার সঙ্গে ওই অভিযাত্রী দলে থাকবেন নাসার জেল লিন্ডগ্রেন ও রবার্ট হাইন্স এবং ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির সামান্থা ক্রিস্টোফোরেট্টি।
এলন মাস্কের বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেসএক্সের ক্রু ড্রাগন মহাকাশযান তাদের পৌঁছে দেবে স্পেস স্টেশনে। এ নিয়ে পর্যায়ক্রমে চারবার মহাকাশে যাত্রীদের পৌঁছে দেবে যানটি। ফ্লোরিডায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ফ্যালকন ৯ রকেটে করে স্পেসএক্সের ক্যাপসুলে চেপে রওনা দেবেন চারজন। ছয় মাসের জন্য মহাকাশই হবে তাদের ঠিকানা।
ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জিওলজিক্যাল ও এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স নিয়ে স্নাতক করেছেন জেসিকা। তারপর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জিওলজিতে স্নাতকোত্তর পাস করেন। নাসার সঙ্গে তার যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। নাসার এমস রিসার্চ সেন্টার এবং জেট প্রোপালসন ল্যাবে কাজ করেছেন তিনি।
নাসার মঙ্গলযান কিউরিওসিটির অভিযানেও যুক্ত ছিলেন জেসিকা। এই নভোচারী বলেন, জিওলজি পড়তে গিয়েই ভিন গ্রহের গঠন নিয়ে গবেষণার উৎসাহ জাগে। বিশেষ করে মঙ্গল নিয়ে।
২০২২ সালে মহাকাশ যাত্রায় অভিযাত্রীদের নাম ঘোষণা হতেই জেসিকাকে অভিনন্দন জানান সহকর্মীরা। নাসার বিজ্ঞানী ক্যাথি লুডার্সও টুইট করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। মহাকাশচারী জনি কিম বলেন, মহাকাশে আরও এক ঝাঁক! জেসিকা ওয়াটকিন্সকে অভিনন্দন। স্পেসএক্স ক্রু-৪ অভিযানে অসাধারণ কিছু করে দেখাবে সে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মহাকাশ স্টেশনে দীর্ঘ মিশনে যাচ্ছেন প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী

আপডেট সময় : ০৯:২৩:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ নভেম্বর ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ২২ বছর আগের কথা। ১৯৯৮ সালের নভেম্বরে মহাকাশে পৃথিবীর কক্ষপথে মানুষের বসবাসযোগ্য কৃত্রিম উপগ্রহ ‘ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন’কে (আইএসএস) পাঠানো হয়। এরপর দুদশকের বেশি সময় কেটে গেছে। এই প্রথম আইএসএস-এ দীর্ঘ কোনো মিশনের জন্য যাচ্ছেন প্রথম কোনো কৃষ্ণাঙ্গ নারী নভোচারী। তার নাম জেসিকা ওয়াটকিন্স।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা এক ঘোষণায় জানিয়েছে, আগামী বছেরের এপ্রিলে স্পেসএক্স ক্রু-৪ মিশনের অন্যতম অভিযাত্রী জেসিকা।
মহাকাশে অবশ্য আগেও পা রেখেছেন কৃষ্ণাঙ্গ নারী নভোচারী। তবে সেটা দীর্ঘ সময়ের জন্য নয়। ১৯৯২ সালে স্পেস শাটল এনডেভারে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন প্রথম আমেরিকান-আফ্রিকান নারী মে জেমিসন।
ছয় সহযাত্রীর সঙ্গে এনডেভার মহাকাশযানে পৃথিবীকে ১২৬ বার প্রদক্ষিণ করেছিলেন মে। মহাকাশে কাটিয়েছিলেন ১৯০ ঘণ্টা। তবে নারী-পুরুষ মিলিয়েও কৃষ্ণাঙ্গ নভোচারীর সংখ্যা খুবই কম। ১৯৯৫ সালে প্রথম মহাকাশে পা রাখেন কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষ অভিযাত্রী বার্নার্ড হ্যারিস জুনিয়র। ২০২০ সালের নভেম্বরে মহাকাশে যান ভিক্টর গ্লোভার জুনিয়র। তিনিই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ, যিনি দীর্ঘসময়ের জন্য আইএসএসে অবস্থান করেছেন।
২০১৬ সালে সাড়া ফেলে দিয়েছিল নাসার তিন কৃষ্ণাঙ্গ নারীর বর্ণবৈষম্যের শিকার হওয়ার কাহিনি। তাদের জীবন নিয়ে সে বছর তৈরি হয়েছিল ফিল্ম ‘হিডেন ফিগারস’। ওই নামে মার্গট লি শ্যাটেরলির একটি বই থেকে ফিল্মটি তৈরি হয় হলিউডে।
নাসার তিন কৃষ্ণাঙ্গ গণিতজ্ঞ ও ইঞ্জিনিয়ার ক্যাথরিন জনসন, ডরোথি ভন এবং মেরি জ্যাকসনকে কিভাবে লিঙ্গ ও বর্ণবৈষম্যের শিকার হতে হয়েছিল, তাই দেখানো হয় ছবিতে। বেশি দিন আগের কথা নয়, নাসার প্রথম নারী ইঞ্জিনিয়ার মেরি জ্যাকসনকে সম্মান জানিয়ে ২০২০ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে নাসার সদর দফতরের নাম মেরির নামে রাখা হয়। এর দু’বছরের মাথায় এবার মহাকাশ স্টেশনে দীর্ঘ সময়ের মিশনে যাবেন প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী।
২০১৭ সালে নাসার পরীক্ষায় মহাকাশচারী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন জেসিকা। তারপর থেকে তার প্রশিক্ষণ চলছে। জেসিকার সঙ্গে ওই অভিযাত্রী দলে থাকবেন নাসার জেল লিন্ডগ্রেন ও রবার্ট হাইন্স এবং ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির সামান্থা ক্রিস্টোফোরেট্টি।
এলন মাস্কের বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেসএক্সের ক্রু ড্রাগন মহাকাশযান তাদের পৌঁছে দেবে স্পেস স্টেশনে। এ নিয়ে পর্যায়ক্রমে চারবার মহাকাশে যাত্রীদের পৌঁছে দেবে যানটি। ফ্লোরিডায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ফ্যালকন ৯ রকেটে করে স্পেসএক্সের ক্যাপসুলে চেপে রওনা দেবেন চারজন। ছয় মাসের জন্য মহাকাশই হবে তাদের ঠিকানা।
ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জিওলজিক্যাল ও এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স নিয়ে স্নাতক করেছেন জেসিকা। তারপর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জিওলজিতে স্নাতকোত্তর পাস করেন। নাসার সঙ্গে তার যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। নাসার এমস রিসার্চ সেন্টার এবং জেট প্রোপালসন ল্যাবে কাজ করেছেন তিনি।
নাসার মঙ্গলযান কিউরিওসিটির অভিযানেও যুক্ত ছিলেন জেসিকা। এই নভোচারী বলেন, জিওলজি পড়তে গিয়েই ভিন গ্রহের গঠন নিয়ে গবেষণার উৎসাহ জাগে। বিশেষ করে মঙ্গল নিয়ে।
২০২২ সালে মহাকাশ যাত্রায় অভিযাত্রীদের নাম ঘোষণা হতেই জেসিকাকে অভিনন্দন জানান সহকর্মীরা। নাসার বিজ্ঞানী ক্যাথি লুডার্সও টুইট করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। মহাকাশচারী জনি কিম বলেন, মহাকাশে আরও এক ঝাঁক! জেসিকা ওয়াটকিন্সকে অভিনন্দন। স্পেসএক্স ক্রু-৪ অভিযানে অসাধারণ কিছু করে দেখাবে সে।