ঢাকা ০৩:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

মস্তিষ্ক, হৃৎপি-সহ বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম ভ্রূণ

  • আপডেট সময় : ১১:৫৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ অগাস্ট ২০২২
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম ভ্রূণ (সিনথেটিক এমব্রায়ো) তৈরি করেছেন, যাতে মস্তিষ্ক, স্পন্দনক্ষম হৃদ্যন্ত্রসহ শরীরের অন্য অঙ্গ তৈরির উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। এই ভ্রূণ তৈরি করা হয়েছে ইঁদুরের স্টেম সেল থেকে। শরীরের একটি আদি কোষ হলো স্টেম সেল। সাধারণত জন্মের পর একটি কোষ থেকে সব ধরনের কোষ তৈরি হয়।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ডিম্বাণু অথবা শুক্রাণু ব্যবহার করার বদলে কেমব্রিজের অধ্যাপক ম্যাগডালেনা জের্নিকা-গোয়েৎজের নেতৃত্বাধীন বিজ্ঞানীদের একটি দল স্টেম সেল ব্যবহার করে কৃত্রিম ভ্রূণের মডেলটি তৈরি করেছেন। এটি শরীরের স্টেম সেল এবং প্রায় যেকোনো ধরনের কোষের পার্থক্য করতে পারে। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওলজি, ডেভেলপমেন্ট ও নিউরোসায়েন্স বিভাগের ম্যামালিয়ান ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড স্টেম সেল বায়োলজির অধ্যাপক ম্যাগডালেনা জের্নিকা-গোয়েৎজ।
গবেষকেরা বলেন, আদিম স্তন্যপায়ী প্রাণীর দেহে উপস্থিত তিন ধরনের ভিন্ন ভিন্ন স্টেম সেলকে এমন এক পর্যায়ে আনা হয়েছিল, যেগুলো গবেষণাগারে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় অনুকরণ করে মিথস্ক্রিয়া শুরু করে। গবেষকেরা একটি নির্দিষ্ট ধরনের জিনের উৎপাদন উসকে দেন এবং সেসবের মিথস্ক্রিয়ার জন্য বিশেষ পরিবেশ তৈরি করেন। এর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা স্টেম সেলগুলোকে পরস্পরের সঙ্গে ‘মিথস্ক্রিয়া’ ঘটাতে সক্ষম হন।
গবেষক ম্যাগডালেনার বরাত দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের ইঁদুরের ভ্রূণের মডেল শুধু মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায়নি, বরং একটি স্পন্দনক্ষম হৃৎপি-ও তৈরি করেছে। এতে এমন সব উপাদান রয়েছে, যা শরীরের গঠনে ভূমিকা রাখে।’
ম্যাগডালেনা আরও বলেন, ‘এটা অবিশ্বাস্য যে আমরা এতটা পেয়েছি। বছরের পর বছর ধরে আমাদের সম্প্রদায়ের স্বপ্ন ছিল এটি। এক দশক ধরে আমাদের কাজের প্রধান লক্ষ্য ছিল কৃত্রিম ভ্রূণ তৈরির বিষয়টি। অবশেষে আমরা সফল হয়েছি।’
গর্ভধারণের সময় কেন কিছু সফলতা ও ব্যর্থতার বিষয় থাকে, তা বুঝতে গবেষক ম্যাগডালেনা ও কেমব্রিজের গবেষক দল গর্ভধারণের প্রাথমিক পর্যায় নিয়ে এক দশক ধরে গবেষণা করছেন। ম্যাগডালেনা বলেন, ‘স্টেম সেল ভ্রূণের মডেলটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আমাদের এমন একটি পর্যায় সম্পর্কে তথ্য দিতে পারে, যা সাধারণত মাতৃগর্ভে ক্ষুদ্র ভ্রূণ হিসেবে আড়ালেই থেকে যায়।’
বিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখেছেন, ভ্রূণের বিকাশকে নির্দেশ করতে বাইরের কোষগুলো কেবল রাসায়নিকভাবে নয়, যান্ত্রিকভাবেও বা কেবল স্পর্শগতভাবেও ভ্রূণ কোষের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মস্তিষ্ক, হৃৎপি-সহ বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম ভ্রূণ

আপডেট সময় : ১১:৫৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ অগাস্ট ২০২২

প্রত্যাশা ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম ভ্রূণ (সিনথেটিক এমব্রায়ো) তৈরি করেছেন, যাতে মস্তিষ্ক, স্পন্দনক্ষম হৃদ্যন্ত্রসহ শরীরের অন্য অঙ্গ তৈরির উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। এই ভ্রূণ তৈরি করা হয়েছে ইঁদুরের স্টেম সেল থেকে। শরীরের একটি আদি কোষ হলো স্টেম সেল। সাধারণত জন্মের পর একটি কোষ থেকে সব ধরনের কোষ তৈরি হয়।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ডিম্বাণু অথবা শুক্রাণু ব্যবহার করার বদলে কেমব্রিজের অধ্যাপক ম্যাগডালেনা জের্নিকা-গোয়েৎজের নেতৃত্বাধীন বিজ্ঞানীদের একটি দল স্টেম সেল ব্যবহার করে কৃত্রিম ভ্রূণের মডেলটি তৈরি করেছেন। এটি শরীরের স্টেম সেল এবং প্রায় যেকোনো ধরনের কোষের পার্থক্য করতে পারে। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওলজি, ডেভেলপমেন্ট ও নিউরোসায়েন্স বিভাগের ম্যামালিয়ান ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড স্টেম সেল বায়োলজির অধ্যাপক ম্যাগডালেনা জের্নিকা-গোয়েৎজ।
গবেষকেরা বলেন, আদিম স্তন্যপায়ী প্রাণীর দেহে উপস্থিত তিন ধরনের ভিন্ন ভিন্ন স্টেম সেলকে এমন এক পর্যায়ে আনা হয়েছিল, যেগুলো গবেষণাগারে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় অনুকরণ করে মিথস্ক্রিয়া শুরু করে। গবেষকেরা একটি নির্দিষ্ট ধরনের জিনের উৎপাদন উসকে দেন এবং সেসবের মিথস্ক্রিয়ার জন্য বিশেষ পরিবেশ তৈরি করেন। এর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা স্টেম সেলগুলোকে পরস্পরের সঙ্গে ‘মিথস্ক্রিয়া’ ঘটাতে সক্ষম হন।
গবেষক ম্যাগডালেনার বরাত দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের ইঁদুরের ভ্রূণের মডেল শুধু মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায়নি, বরং একটি স্পন্দনক্ষম হৃৎপি-ও তৈরি করেছে। এতে এমন সব উপাদান রয়েছে, যা শরীরের গঠনে ভূমিকা রাখে।’
ম্যাগডালেনা আরও বলেন, ‘এটা অবিশ্বাস্য যে আমরা এতটা পেয়েছি। বছরের পর বছর ধরে আমাদের সম্প্রদায়ের স্বপ্ন ছিল এটি। এক দশক ধরে আমাদের কাজের প্রধান লক্ষ্য ছিল কৃত্রিম ভ্রূণ তৈরির বিষয়টি। অবশেষে আমরা সফল হয়েছি।’
গর্ভধারণের সময় কেন কিছু সফলতা ও ব্যর্থতার বিষয় থাকে, তা বুঝতে গবেষক ম্যাগডালেনা ও কেমব্রিজের গবেষক দল গর্ভধারণের প্রাথমিক পর্যায় নিয়ে এক দশক ধরে গবেষণা করছেন। ম্যাগডালেনা বলেন, ‘স্টেম সেল ভ্রূণের মডেলটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আমাদের এমন একটি পর্যায় সম্পর্কে তথ্য দিতে পারে, যা সাধারণত মাতৃগর্ভে ক্ষুদ্র ভ্রূণ হিসেবে আড়ালেই থেকে যায়।’
বিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখেছেন, ভ্রূণের বিকাশকে নির্দেশ করতে বাইরের কোষগুলো কেবল রাসায়নিকভাবে নয়, যান্ত্রিকভাবেও বা কেবল স্পর্শগতভাবেও ভ্রূণ কোষের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকে।