ঢাকা ০৩:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

মস্তিষ্কের জ্ঞানীয় ক্ষমতার ওপর চায়ের প্রভাব

  • আপডেট সময় : ১১:২১:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জুন ২০২২
  • ৬৫ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : এক কাপ চা মানসিক প্রশান্তি দেয়, মনকে প্রফুল্ল করে। আর গবেষণা বলছে মস্তিষ্কেরও অনেক উপকার করে চা।
যুক্তারাষ্ট্রের ডালাস’য়ে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস’য়ের ‘সেন্টার ফর ব্রেইন হেল্থ’য়ের ‘কগনিটিভ নিউরোসাইন্টিস্ট ড. জুলিয়া ফ্রাট্যানটোনি বলেন, “মস্তিষ্কের জ্ঞানীয় ক্ষমতা, মানসিক অবস্থা এবং দৈনন্দিন কার্যকারিতার ওপর গ্রিন টি’র প্রভাব নিয়ে করা ‘সিস্টেমেটিক রিভিউ’তে জানা যায় এই চা মানসিক অস্বস্তি কমায়, স্মৃতিশক্তি ও মনযোগ বাড়ায় এবং ‘ওয়ার্কিং মেমোরি’ বাড়ায়।”
ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “ওয়ার্কিং মেমোরি’কে বলা যায় মস্তিষ্কের রাফ করার খাতা, মনে মনে অঙ্ক কষা। গ্রিন টি’তে থাকে ‘ক্যাটেকিন’ নামক এক শ্রেণীর ‘ফ্লাভানয়েডস’। এরমধ্যে একটি ‘ক্যাটেকিন’ হলো ‘এপিগ্যালোক্যাটেকিন-থ্রি-গ্যালেট (ইজিসিজি)। এটি মস্তিষ্ককে প্রদাহ ও বিভিন্ন রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়।”
তিনি আরও বলেন, “একথা শুনেই চা বানানো শুরু করার আগে পুরো ঘটনা জানতে হবে। শুধু চায়ের উপকারিতার দিকে মনযোগ দিলে হবে না। কখন, কী পরিস্থিতিতে তা পান করছেন সেদিকেও নজর রাখতে হবে।”
যখন মানসিকভাবে প্রচ- চাপে আছেন, তাড়াহুড়া করছেন, জ্যামে বসে বিরক্ত হচ্ছেন এই পরিস্থিতির মানসিক চাপ চায়ের সকল গুণাগুণ নষ্ট করে দেবে।
বিজ্ঞান যা বলে : ড. ফ্রাট্যানটোনি বলেন, “কিছু নির্দিষ্ট ধরনের চা যেমন- গ্রিন টি, ব্ল্যাক টি’য়ে মেলে ‘পলিফেনল’, ‘ক্যাটেকিন’ ও অন্যান্য প্রদাহনাশক উপাদান। আর সব চায়েই থাকে ‘ক্যাফেইন’। বয়সের কারণে মস্তিষ্কের যে ক্ষয় হয় তা কিছুটা কমায় চা। বয়সের এই ক্ষয় হল ‘অক্সিডেটিভ স্ট্রেস’। যে কারণে শরীরের কোষগুলোতে তৈরি হওয়া বিষাক্ত ও বর্জ্যগুলো অপসারণের ক্ষমতা কমতে থাকে। আর সেই প্রভাবের উল্টো প্রভাব ফেলে ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’। চায়ে থাকা ‘ক্যাটেকিন’ কাজ করে ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’ হিসেবে।”
তিনি আরও বলেন, “অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’য়ের বাইরেও কিছু উপাদান চায়ে থাকে যা মস্তিষ্ককে বয়সের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচায়। যেমন ‘এল-থিয়েনিন’ ও ‘ক্যাফেইন’। ‘এল-থিয়েনিন’ হল অ্যামিনো অ্যাসিড যা মস্তিষ্ককে সুরক্ষিত রাখে এবং জ্ঞানীয় ক্ষমতা বাড়ায়। ‘ক্যাফেইন’ বাড়ায় উৎফুল্লতা, মস্তিষ্ককে করে সতর্ক। আর এই দুই উপাদান একসঙ্গে শরীরের প্রবেশ করলে তাদের প্রভাব হয় স্বাভাবিকের চাইতে বেশি।”
“দিনে কতটুকু চা পান করা যাবে তার কোনো নির্দিষ্ট মাত্রা নেই। একদিনে ছয় কাপ চা পান করলেও গুরুতর কোনো ক্ষতি হবে না ঠিক, তবে তিন কাপ চা থেকে আসলে সর্বোচ্চ উপকার পাবেন, এর বেশি পান করাতে উপকারিতা তেমন বাড়ে না,” বলেন এই ড. ফ্রাট্যানটোনি। আর মাথায় রাখতে হবে ‘ক্যাফেইন’ কতটা যাচ্ছে শরীরে। অতিরিক্ত ‘ক্যাফেইন’ মস্তিষ্ককে সতর্ক রাখে বেশি। ফলে ঘুম হয় না, ঘুমালেও তা গভীর হবে না।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মস্তিষ্কের জ্ঞানীয় ক্ষমতার ওপর চায়ের প্রভাব

আপডেট সময় : ১১:২১:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জুন ২০২২

প্রত্যাশা ডেস্ক : এক কাপ চা মানসিক প্রশান্তি দেয়, মনকে প্রফুল্ল করে। আর গবেষণা বলছে মস্তিষ্কেরও অনেক উপকার করে চা।
যুক্তারাষ্ট্রের ডালাস’য়ে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস’য়ের ‘সেন্টার ফর ব্রেইন হেল্থ’য়ের ‘কগনিটিভ নিউরোসাইন্টিস্ট ড. জুলিয়া ফ্রাট্যানটোনি বলেন, “মস্তিষ্কের জ্ঞানীয় ক্ষমতা, মানসিক অবস্থা এবং দৈনন্দিন কার্যকারিতার ওপর গ্রিন টি’র প্রভাব নিয়ে করা ‘সিস্টেমেটিক রিভিউ’তে জানা যায় এই চা মানসিক অস্বস্তি কমায়, স্মৃতিশক্তি ও মনযোগ বাড়ায় এবং ‘ওয়ার্কিং মেমোরি’ বাড়ায়।”
ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “ওয়ার্কিং মেমোরি’কে বলা যায় মস্তিষ্কের রাফ করার খাতা, মনে মনে অঙ্ক কষা। গ্রিন টি’তে থাকে ‘ক্যাটেকিন’ নামক এক শ্রেণীর ‘ফ্লাভানয়েডস’। এরমধ্যে একটি ‘ক্যাটেকিন’ হলো ‘এপিগ্যালোক্যাটেকিন-থ্রি-গ্যালেট (ইজিসিজি)। এটি মস্তিষ্ককে প্রদাহ ও বিভিন্ন রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়।”
তিনি আরও বলেন, “একথা শুনেই চা বানানো শুরু করার আগে পুরো ঘটনা জানতে হবে। শুধু চায়ের উপকারিতার দিকে মনযোগ দিলে হবে না। কখন, কী পরিস্থিতিতে তা পান করছেন সেদিকেও নজর রাখতে হবে।”
যখন মানসিকভাবে প্রচ- চাপে আছেন, তাড়াহুড়া করছেন, জ্যামে বসে বিরক্ত হচ্ছেন এই পরিস্থিতির মানসিক চাপ চায়ের সকল গুণাগুণ নষ্ট করে দেবে।
বিজ্ঞান যা বলে : ড. ফ্রাট্যানটোনি বলেন, “কিছু নির্দিষ্ট ধরনের চা যেমন- গ্রিন টি, ব্ল্যাক টি’য়ে মেলে ‘পলিফেনল’, ‘ক্যাটেকিন’ ও অন্যান্য প্রদাহনাশক উপাদান। আর সব চায়েই থাকে ‘ক্যাফেইন’। বয়সের কারণে মস্তিষ্কের যে ক্ষয় হয় তা কিছুটা কমায় চা। বয়সের এই ক্ষয় হল ‘অক্সিডেটিভ স্ট্রেস’। যে কারণে শরীরের কোষগুলোতে তৈরি হওয়া বিষাক্ত ও বর্জ্যগুলো অপসারণের ক্ষমতা কমতে থাকে। আর সেই প্রভাবের উল্টো প্রভাব ফেলে ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’। চায়ে থাকা ‘ক্যাটেকিন’ কাজ করে ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’ হিসেবে।”
তিনি আরও বলেন, “অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’য়ের বাইরেও কিছু উপাদান চায়ে থাকে যা মস্তিষ্ককে বয়সের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচায়। যেমন ‘এল-থিয়েনিন’ ও ‘ক্যাফেইন’। ‘এল-থিয়েনিন’ হল অ্যামিনো অ্যাসিড যা মস্তিষ্ককে সুরক্ষিত রাখে এবং জ্ঞানীয় ক্ষমতা বাড়ায়। ‘ক্যাফেইন’ বাড়ায় উৎফুল্লতা, মস্তিষ্ককে করে সতর্ক। আর এই দুই উপাদান একসঙ্গে শরীরের প্রবেশ করলে তাদের প্রভাব হয় স্বাভাবিকের চাইতে বেশি।”
“দিনে কতটুকু চা পান করা যাবে তার কোনো নির্দিষ্ট মাত্রা নেই। একদিনে ছয় কাপ চা পান করলেও গুরুতর কোনো ক্ষতি হবে না ঠিক, তবে তিন কাপ চা থেকে আসলে সর্বোচ্চ উপকার পাবেন, এর বেশি পান করাতে উপকারিতা তেমন বাড়ে না,” বলেন এই ড. ফ্রাট্যানটোনি। আর মাথায় রাখতে হবে ‘ক্যাফেইন’ কতটা যাচ্ছে শরীরে। অতিরিক্ত ‘ক্যাফেইন’ মস্তিষ্ককে সতর্ক রাখে বেশি। ফলে ঘুম হয় না, ঘুমালেও তা গভীর হবে না।