আল জাজিরা : চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং রাশিয়ার মস্কোয় পৌঁছেছেন। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এটি রাশিয়ায় তার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর। তিনি বলছেন, এই সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন গতি দেবে। গতকাল সোমবার শি জিন পিং রাশিয়ায় পৌঁছান। মস্কো বিমানবন্দরের রানওয়েতে তিনি রাশিয়ার সরকারি গণমাধ্যমসহ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
শি সাংবাদিকদের বলেন, আমি আত্মবিশ্বাসী, এই সফর ফলপ্রসূ হবে এবং চীন-রাশিয়ার সুস্থ ও স্থিতিশীল সম্পর্কে নতুন গতি দেবে। তিনি চীন ও রাশিয়াকে ভালো প্রতিবেশী এবং নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে আখ্যা দেন।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো রাশিয়া সফরে যান চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। মস্কোয় শি-কে স্বাগত জানান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। তৃতীয় মেয়াদে চীনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর সোমবারই প্রথম বিদেশ সফরে যান শি। চীনের সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক নিবন্ধে (পরে রোববার রাতে যা ক্রেমলিনের ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত হয়েছে) পুতিন বলেছেন, ‘পুরনো ভালো বন্ধু’ শি-য়ের সফর নিয়ে তিনি অত্যন্ত আশাবাদী। ইউক্রেইন যুদ্ধে চীনের মধ্যস্থতাকারী হওয়ার ইচ্ছাকেও স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। অপরদিকে একই দিন রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদপত্র রাশিশকা গাজিয়াতায় প্রকাশিত নিবন্ধে শি লিখেছেন, “এক শতাব্দীতেও দেখা যায়নি এমন ব্যাপক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব। শান্তি, উন্নয়ন ও উভয়পক্ষ লাভবান হয় এমন সহযোগিতা অপ্রতিরোধ্য। বৈশ্বিক বহুমুখীনতা, অর্থনীতির বিশ্বায়ন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে বৃহত্তর গণতান্ত্রিক প্রবণতা অপরিবর্তনীয়।” গত বছর শি ও পুতিন ‘সীমাহীন’ অংশীদারিত্ব চুক্তি করেছিলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) যুদ্ধাপরাধের দায়ে পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়া প্রথম বিশ্ব নেতা হচ্ছেন শি। তবে রাশিয়া বা চীন আইসিসির সদস্য রাষ্ট্র নয়। তাই আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে তারা আমলে নিচ্ছেন না বলেই স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু বিশ্বের যে ১২৩টা দেশ আইসিসির সদস্য সেখানে পুতিন একজন ফেরারি, শি-র সফরের ঠিক আগে ঘটা এই বিষয়টি কিছুটা হলেও অস্বস্তিকর একটি বাতাবরণ তৈরি করেছে বলে মত আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের।
সিএনএন জানায়, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে শুক্রবার বলেন, চীনের সঙ্গে রাশিয়ার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ‘ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ’। তিনি বলেন, বেইজিংয়ের সঙ্গে মস্কো সামরিক সহযোগিতা শক্তিশালী করার চেষ্টা নেবে। দুই নেতা শুক্রবার ভিডিও লিংকের মাধ্যমে কথা বলেন। পুতিন এবং শি’র ভিডিও সম্মেলনটি রাষ্ট্রীয় টিভিতে প্রচার করা হয়। এতে চীন-রাশিয়া সম্পর্ক সব পরীক্ষা উৎরে টিকে থাকতে পারে বলেও পুতিন মন্তব্য করেন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, কঠিন একটি আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে চীন রাশিয়ার সঙ্গে রাজনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে এবং বৈশ্বিক অংশীদার হতে প্রস্তুত। সম্প্রতি কয়েক বছরে রাশিয়া এবং চীন ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়েছে। ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেইন আগ্রাসনের কয়েক সপ্তাহ আগেই শি এবং পুতিন ঘোষণা দিয়ে বলেছিলেন, দুই দেশের অংশীদারিত্বের কোনো সীমা নেই। তখন থেকেই চীন ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে। একই সঙ্গে যুদ্ধের জন্য চীন পশ্চিম সামরিক জোট নেটো এবং যুক্তরাষ্ট্রকে দোষারোপ করেছে বারবার।
মস্কোয় নেমে শি বললেন, এই সফর ‘নতুন গতি’ দেবে
ট্যাগস :
মস্কোয় নেমে শি বললেন
জনপ্রিয় সংবাদ