ঢাকা ০৭:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

ময়মনসিংহের ৫ যুদ্ধাপরাধীর যাবজ্জীবন

  • আপডেট সময় : ১০:৫৫:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ১৫৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে ময়মনসিংহের পাঁচজন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছে আদালত। বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গতকাল সোমবার এ মামলার রায় ঘোষণা করে। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম। দ-িত আসামিরা হলেন-মো. হরমুজ আলী, মো. আব্দুস সাত্তার, খন্দকার গোলাম রাব্বানী, খন্দকার গোলাম সাব্বির আহমেদ ও মো. ফখরুজ্জামান। তাদের মধ্যে ছাব্বির ও ফখরুজ্জামান পলাতক। বাকি তিন আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করে ট্রাইব্যুনাল। মু্ক্িতযুদ্ধের সময় হত্যা, গুম ও অপহরণের মত মানবতাবিরোধী অপরাধের জড়ি থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের যাবজ্জীবন কারাদ- দেওয়া হয়। রায়ে বলা হয়, রায়ের আগে কারাগারে কাটানোর সময় সাজা থেকে বাদ যাবে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন, রেজিয়া সুলতানা চমন ও ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার, মিজানুল ইসলাম ও গাজী এম এইচ তামিম। এ মামলার আসামি ছিলেন মোট ৮ জন। তাদের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে কারাগারে মারা গেছেন তিনজন। এরা হলেন, জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য এমএ আব্দুল হান্নান, তার ছেলে মো. রফিক সাজ্জাদ ও মিজানুর রহমান মিন্টু।
অভিযোগ-১: ময়মনসিংহের গোলকীবাড়ী বাইলেনের প্রখ্যাত ভাস্কর আব্দুর রশিদকে অপহরণের পর জিপ গাড়ির পেছনে রশি দিয়ে বেঁধে টেনেহিঁছড়ে নির্মমভাবে হত্যা ও লাশ গুম। রায়: খন্দকার গোলাম রাব্বানী ও মো. ফখরুজ্জামানের যাবজ্জীবন। অভিযোগ-২: ত্রিশাল থানার বৈলর হিন্দুপল্লী ও মুন্সিপাড়ায় অগ্নিসংযোগ, যোতিশ চন্দ্র চক্রবর্তীকে গুলি করে হত্যা ও দুইজন হিন্দুকে গুলি করে আহত করা। রায়: হরমুজ আলীর যাবজ্জীবন। অভিযোগ-৩: বৈলরের আ. রহমান মেম্বারকে অপহরণের পর হত্যা ও লাশ গুম। রায়: হরমুজ আলী ৫ বছরর কারাদ-। অভিযোগ-৪: খন্দকার আব্দুল আলী রতনকে অপহরণের পর হত্যা ও লাশ গুম। রায়: খন্দকার গোলাম রাব্বানী, ডা. খন্দকার গোলাম সাব্বির আহমেদ, মো. ফখরুজ্জামান ও আব্দুস সাত্তারের যাবজ্জীবন। অভিযোগ-৫: মো. আবেদ হোসেন খানকে আটক, নির্যাতন ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর। রায়: আব্দুস সাত্তারের ৫ বছরের কারাদ-। অভিযোগ-৬: কে এম খালিদ বাবুকে (বর্তমান সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী) অপহরণ, আটক ও নির্যাতন। এই অভিযোগের আসামি ছিলেন কেবল মৃত হান্নান।
২০১৫ সালের ১৯ মে ময়মনসিংহের ত্রিশালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন এই মামলাটি দায়ের করেন। ময়মনসিংহের ১ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক পরে মামলাটি ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেন। এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মতিউর রহমান ২০১৫ সালের ২৮ জুলাই থেকে ২০১৭ সালের ১১ জুলাই পর্যন্ত তদন্ত করেন। ওই বছরের অক্টোবরে প্রসিকিউশনের আবেদনে মামলার ৮ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। ওইদিনই ঢাকায় গ্রেপ্তার হন এম এ হান্নান ও তার ছেলে রফিক সাজ্জাদ। ময়মনসিংহ সদর ও ত্রিশালে গ্রেপ্তার হন বাকি তিনজন। ২০১৬ সালের ১১ জুলাই তদন্ত সংস্থা আটজনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করে ট্রাইব্যুনালে। সেখানে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যা ও গুমের অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে। ট্রাইব্যুনাল ২০১৯সালের৩১জানুয়ারিঅভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচার শুরু করে। গত বছরের ২৩ নভেম্বর শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষামান রাখা হয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

অমর একুশে বইমেলা শুরু ২০ ফেব্রুয়ারি

ময়মনসিংহের ৫ যুদ্ধাপরাধীর যাবজ্জীবন

আপডেট সময় : ১০:৫৫:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে ময়মনসিংহের পাঁচজন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছে আদালত। বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গতকাল সোমবার এ মামলার রায় ঘোষণা করে। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম। দ-িত আসামিরা হলেন-মো. হরমুজ আলী, মো. আব্দুস সাত্তার, খন্দকার গোলাম রাব্বানী, খন্দকার গোলাম সাব্বির আহমেদ ও মো. ফখরুজ্জামান। তাদের মধ্যে ছাব্বির ও ফখরুজ্জামান পলাতক। বাকি তিন আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করে ট্রাইব্যুনাল। মু্ক্িতযুদ্ধের সময় হত্যা, গুম ও অপহরণের মত মানবতাবিরোধী অপরাধের জড়ি থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের যাবজ্জীবন কারাদ- দেওয়া হয়। রায়ে বলা হয়, রায়ের আগে কারাগারে কাটানোর সময় সাজা থেকে বাদ যাবে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন, রেজিয়া সুলতানা চমন ও ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার, মিজানুল ইসলাম ও গাজী এম এইচ তামিম। এ মামলার আসামি ছিলেন মোট ৮ জন। তাদের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে কারাগারে মারা গেছেন তিনজন। এরা হলেন, জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য এমএ আব্দুল হান্নান, তার ছেলে মো. রফিক সাজ্জাদ ও মিজানুর রহমান মিন্টু।
অভিযোগ-১: ময়মনসিংহের গোলকীবাড়ী বাইলেনের প্রখ্যাত ভাস্কর আব্দুর রশিদকে অপহরণের পর জিপ গাড়ির পেছনে রশি দিয়ে বেঁধে টেনেহিঁছড়ে নির্মমভাবে হত্যা ও লাশ গুম। রায়: খন্দকার গোলাম রাব্বানী ও মো. ফখরুজ্জামানের যাবজ্জীবন। অভিযোগ-২: ত্রিশাল থানার বৈলর হিন্দুপল্লী ও মুন্সিপাড়ায় অগ্নিসংযোগ, যোতিশ চন্দ্র চক্রবর্তীকে গুলি করে হত্যা ও দুইজন হিন্দুকে গুলি করে আহত করা। রায়: হরমুজ আলীর যাবজ্জীবন। অভিযোগ-৩: বৈলরের আ. রহমান মেম্বারকে অপহরণের পর হত্যা ও লাশ গুম। রায়: হরমুজ আলী ৫ বছরর কারাদ-। অভিযোগ-৪: খন্দকার আব্দুল আলী রতনকে অপহরণের পর হত্যা ও লাশ গুম। রায়: খন্দকার গোলাম রাব্বানী, ডা. খন্দকার গোলাম সাব্বির আহমেদ, মো. ফখরুজ্জামান ও আব্দুস সাত্তারের যাবজ্জীবন। অভিযোগ-৫: মো. আবেদ হোসেন খানকে আটক, নির্যাতন ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর। রায়: আব্দুস সাত্তারের ৫ বছরের কারাদ-। অভিযোগ-৬: কে এম খালিদ বাবুকে (বর্তমান সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী) অপহরণ, আটক ও নির্যাতন। এই অভিযোগের আসামি ছিলেন কেবল মৃত হান্নান।
২০১৫ সালের ১৯ মে ময়মনসিংহের ত্রিশালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন এই মামলাটি দায়ের করেন। ময়মনসিংহের ১ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক পরে মামলাটি ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেন। এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মতিউর রহমান ২০১৫ সালের ২৮ জুলাই থেকে ২০১৭ সালের ১১ জুলাই পর্যন্ত তদন্ত করেন। ওই বছরের অক্টোবরে প্রসিকিউশনের আবেদনে মামলার ৮ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। ওইদিনই ঢাকায় গ্রেপ্তার হন এম এ হান্নান ও তার ছেলে রফিক সাজ্জাদ। ময়মনসিংহ সদর ও ত্রিশালে গ্রেপ্তার হন বাকি তিনজন। ২০১৬ সালের ১১ জুলাই তদন্ত সংস্থা আটজনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করে ট্রাইব্যুনালে। সেখানে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যা ও গুমের অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে। ট্রাইব্যুনাল ২০১৯সালের৩১জানুয়ারিঅভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচার শুরু করে। গত বছরের ২৩ নভেম্বর শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষামান রাখা হয়।