ঢাকা ১২:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মব সন্ত্রাস থামছে না, আক্রান্ত ব্যক্তিই হচ্ছেন আসামি

  • আপডেট সময় : ০৮:৩১:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচারবহির্ভূত হামলা বা মারধরের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে জনমনে। বিশেষ করে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে কিছু দিন পরপরই এমন ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। হেনস্তার শিকার হয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, সাধারণ মানুষসহ অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি। অনেক সময় নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করেই নির্দিষ্ট ব্যক্তির ওপর অতর্কিত হামলা চালাচ্ছে একটি চক্র। কিন্তু এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা যেন নির্বিকার।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো আক্রান্ত ব্যক্তিদেরই আটক করছে পুলিশ। আটকের এক-দুদিন পর তাদের নামে দেওয়া হচ্ছে হত্যা বা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলা। শুধু তাই নয়— সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অপছন্দের ব্যক্তির ওপর হামলে পড়ছেন একদল মানুষ। কোনও একটি ঘটনাকে বৈধতা দিতে গিয়ে বিগত সরকারের সময়ের কিছু ঘটনার চিত্র সামনে এনে পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছেন কেউ কেউ।

তবে বিচারবহির্ভূত আচরণকে এখনই থামানো প্রয়োজন বলে মনে করেন রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা। তারা বলেছেন, এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। এই মব সন্ত্রাসে কারা জড়িত? তাদের এত শক্তির উৎস কোথায়? এমন নানা প্রশ্ন ওঠার পাশাপাশি শঙ্কা ও ভীতিকর পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে।

মব সন্ত্রাসের ধরন

দেশে মব ভায়োলেন্স যেন মারাত্মক সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। গত কয়েক মাসে দেখা গেছে, দাবি আদায়ে কিছু ব্যক্তি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভুল-সঠিক বিবেচনা না করেই প্রশাসন বা প্রতিষ্ঠান-প্রধানের ওপর হামলা করছেন। জোর করে পদত্যাগপত্র নেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ আখ্যা দিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মারধর বা হেনস্তা করা নিয়মে পরিণত হয়েছে।

মূলত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপরই এ ধরনের মবের সূচনা হয়েছে বিভিন্ন জেলা থেকে উপজেলা পর্যায়ে। দেখা গেছে, স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা কলেজ অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করছেন তারই শিক্ষার্থীরা। এরপর ধীরে ধীরে রাজধানীতেও এর রেশ ছড়িয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, আদালতে নেওয়ার পরও পুলিশের সামনেই সাবেক একাধিক মন্ত্রী-এমপিসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ওপর হামলা ও ডিম নিক্ষেপের মতো ঘটনা ঘটেছে।

কারা জড়িত, আইনের ধারায় কী আছে 

প্রতিটি ঘটনার পরপরই দেখা গেছে, এসব হামলার ঘটনায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের প্রচেষ্টা জড়িত। অনেকে আবার আইনি প্রতিকার না পাওয়ার আশঙ্কায় এমনটি করছেন। জুলাই আন্দোলনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেও এমনটি ঘটাচ্ছেন অনেকে। তবে বাংলাদেশের আইন অনুসারে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বৈধতা দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই।

সংবিধানের অনুচ্ছেদ-৩১-এ উল্লেখ করা হয়েছে, ‘প্রত্যেক নাগরিকেরই রাষ্ট্রীয় আইনের মাধ্যমে সুরক্ষিত থাকার অধিকার রয়েছে। আইনবহির্ভূতভাবে কারো জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির প্রতি কোনও ক্ষতিকর ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।’

অনুচ্ছেদ ৩৫ (৩)-দণ্ডবিধান ও শাস্তির বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘ফৌজদারি অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তি আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালত বা ট্রাইব্যুনালে দ্রুত বা প্রকাশ্যে বিচার পাওয়ার অধিকারী হবেন।’ এর মাধ্যমে প্রতীয়মান হয়, কাউকে বিচারবহির্ভূত শাস্তি দেওয়ার সুযোগ নেই।

৫ আগস্টের পর আলোচিত যেসব ঘটনা

২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে মবের শিকার হন দেড় শতাধিক ব্যক্তি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ঘটনায় দেশব্যাপী দলমত নির্বিশেষে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এসব ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক ভবঘুরেকে পিটিয়ে হত্যা করেন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। একইদিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামিম আহমেদ মোল্লাকে পিটিয়ে হত্যা করেন একদল শিক্ষার্থী।

একই বছরের ২২ ডিসেম্বর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ৭৮ বছর বয়সী মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে মারধর করা হয়। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন একদল ব্যক্তি। এ ঘটনায় সমালোচনার মুখে অভিযুক্ত কয়েকজন জামায়াত সমর্থককে গ্রেফতার করে পুলিশ।

চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল ঢাকায় অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে রমনা থানা পুলিশের হাতে তুলে দেন যুবদলের কতিপয় কর্মী। এ সময় সিদ্দিকের পরা পোশাক ছিঁড়ে ফেলা হয়। পরবর্তী সময়ে তার নামে দেওয়া হয় হত্যা মামলা।

গত ২২ জুন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নুরুল হুদাকে মারধর করেন কতিপয় ব্যক্তি। এ সময় তার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেন হামলাকারীরা। তার নামেও মামলা দায়ের করা হয়।

এছাড়া ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় গত বছর সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। শুধু তাই নয়, পুলিশ হেফাজতেও হামলার শিকার হন একাধিক ভিআইপি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, ডা. দীপু মনি, ড. আবদুর রাজ্জাক, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, শাহজাহান খান, কামরুল ইসলাম, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু ও শাকিল আহমেদ-ফারজানা রূপা দম্পতিসহ অসংখ্য জাতীয় ব্যক্তিত্ব। এর বাইরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে স্কুল-কলেজের শিক্ষকরাও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন।

চলতি বছরের ৯ আগস্ট রংপুরের তারাগঞ্জ বাজারে চোর সন্দেহে রুপলাল দাস ও প্রদীপ লাল দাস নামে দুজনকে পিটিয়ে হত্যা করে জনতা। ১০ আগস্ট মাদারীপুরে চোর সন্দেহে চারজনকে গণিপিটুনিতে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে একজনের চোখ উপড়ে ফেলা হয়। ১১ আগস্ট গাজীপুরের টঙ্গিতে মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয় এক যুবককে।

দুটি ঘটনায় নতুন আলোচনা

গত এক বছরে বিভিন্ন স্থানে প্রতিপক্ষ বা সন্দেহজনক ব্যক্তির ওপর বিচারবহির্ভূত হামলা বা মারধরের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। তবে চলতি বছরের আগস্টে দুটি ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে ফুল নিয়ে গিয়েছিলেন রিকশাচালক আজিজুর রহমান। কিন্তু তাকে সেখানে ঢুকতে না দিয়ে মারধর করেন একদল যুবক। এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ধানমন্ডি থানায় নিয়ে যায়। পরদিন ১৬ আগস্ট তার নামে জুলাই আন্দোলনের সময় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়। এ নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে পর্যন্ত বিবৃতি দিতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ১৭ আগস্ট জামিন পান ভুক্তভোগী রিকশাচালক আজিজুর রহমান।

সাম্প্রতিক আরেকটি ঘটনায়ও ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। গত ২৯ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘মঞ্চ-৭১’ নামের একটি সংগঠনের গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বেশ কয়েকজন ব্যক্তি।

অনুষ্ঠান শুরুর পরপরই সেখানে গিয়ে হাজির হন ‘জুলাইযোদ্ধা’ নামে একটি সংগঠনের কয়েকজন সদস্য। আয়োজকরা কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেখানে গিয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করতে থাকেন। তারা অতিথিদের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনেন। এ সময় সেখানে থাকা সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনকে লাঞ্ছিত করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে এই দুইজনসহ ১৬ জনকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। পরবর্তী সময়ে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়। এ বিষয়টিও ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।

অতীতকে টেনে আনার প্রবণতা

সাম্প্রতিক সময়ে আরেকটি প্রবণতা বেশ জোরালেভাবে দেখা যাচ্ছে— কোনো একটি বিচারবহির্ভূত ঘটনা ঘটলেই পক্ষে-বিপক্ষে বাহাস শুরু হয়। অনেকে অতীতকে টেনে এনে বর্তমান ঘটনাকে জায়েজ করার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে বিগত সরকারের সময়ে কুষ্টিয়ার আদালত প্রাঙ্গণে দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বিএনপি নেতা জয়নুল আবেদীন ফারুক ও দৈনিক সংগ্রাম কার্যালয়ে সম্পাদক আবুল আসাদের ওপর হামলার ছবি সামনে আনা হচ্ছে। এ নিয়েও তর্কে-বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছেন কেউ কেউ।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের (মার্কসাবাদী) নির্বাহী ফোরামের সদস্য সীমা দত্ত সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘অন্যায় সবসময়ই অন্যায়। একটি ঘটনার বিপক্ষে দাঁড় করিয়ে আরেকটির পক্ষে সাফাই গাওয়ার সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘অন্যায়কারীর জন্য আইন আছে। তবে আইনে সুষ্ঠু প্রয়োগ দরকার। আমরা তো এজন্য আন্দোলন করিনি। সবাইকে সহনশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।’ তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা আরো কার্যকর দেখতে চান।

মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, ‘মব সন্ত্রাসের মাধ্যমে অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিকেও হেয়প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। সরকার কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এতে বুঝা যায়, দেশে আইনের শাসন সুদূরপরাহত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপরাধীর বিচারের পরিবর্তে ভুক্তভোগীকেই গ্রেফতার করছে। এ থেকে উত্তরণের জন্য সরকারকে কঠোর হতে হবে।’

বিশ্লেষক ও রাজনীতিবিদদের প্রতিক্রিয়া

মাঝখানে কিছু দিন মব সন্ত্রাস কিছুটা কমলেও সাম্প্রতিক সময়ে এটি আবারো ফিরে আসা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা। তারা মনে করেন, এমনটি চলতে থাকা দেশের জন্য অশনিসংকেত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা নিত্রা বলেন, ‘বিচারবহির্ভূতকাণ্ড দুটি কারণে হয়। একটি হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, আরেকটি হচ্ছে বিচার না হওয়ার কারণে। অস্বীকার করার সুযোগ নেই যে ৫ আগস্টের পর এ ধরনের কর্মকাণ্ড বেড়েছে।’

তিনি মনে করেন, আইনের যথাযথ প্রয়োগ, অপরাধীকে আইনের হাতে সোপর্দ ও সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমে এমন প্রবণতার প্রতিকার করা সম্ভব।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিবাদ করার অধিকার সবারই রয়েছে। তবে কোনও সংগঠিত শক্তি যদি আইন হাতে তুলে নেয়, তাতে এর কার্যকারিতা আর থাকে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। কারণ আমরা তো আইন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই লড়াই করেছি। তাই বিষয়টি সরকারকেই দেখতে হবে।’

আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘বিচারবহির্ভূতআচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। এক্ষেত্রে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকেই নিজেদের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।’

অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করার তাগিদ দেন তিনি।

এসি/আপ্র/০৫/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মব সন্ত্রাস থামছে না, আক্রান্ত ব্যক্তিই হচ্ছেন আসামি

আপডেট সময় : ০৮:৩১:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচারবহির্ভূত হামলা বা মারধরের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে জনমনে। বিশেষ করে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে কিছু দিন পরপরই এমন ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। হেনস্তার শিকার হয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, সাধারণ মানুষসহ অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি। অনেক সময় নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করেই নির্দিষ্ট ব্যক্তির ওপর অতর্কিত হামলা চালাচ্ছে একটি চক্র। কিন্তু এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা যেন নির্বিকার।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো আক্রান্ত ব্যক্তিদেরই আটক করছে পুলিশ। আটকের এক-দুদিন পর তাদের নামে দেওয়া হচ্ছে হত্যা বা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলা। শুধু তাই নয়— সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অপছন্দের ব্যক্তির ওপর হামলে পড়ছেন একদল মানুষ। কোনও একটি ঘটনাকে বৈধতা দিতে গিয়ে বিগত সরকারের সময়ের কিছু ঘটনার চিত্র সামনে এনে পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছেন কেউ কেউ।

তবে বিচারবহির্ভূত আচরণকে এখনই থামানো প্রয়োজন বলে মনে করেন রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা। তারা বলেছেন, এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। এই মব সন্ত্রাসে কারা জড়িত? তাদের এত শক্তির উৎস কোথায়? এমন নানা প্রশ্ন ওঠার পাশাপাশি শঙ্কা ও ভীতিকর পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে।

মব সন্ত্রাসের ধরন

দেশে মব ভায়োলেন্স যেন মারাত্মক সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। গত কয়েক মাসে দেখা গেছে, দাবি আদায়ে কিছু ব্যক্তি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভুল-সঠিক বিবেচনা না করেই প্রশাসন বা প্রতিষ্ঠান-প্রধানের ওপর হামলা করছেন। জোর করে পদত্যাগপত্র নেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ আখ্যা দিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মারধর বা হেনস্তা করা নিয়মে পরিণত হয়েছে।

মূলত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপরই এ ধরনের মবের সূচনা হয়েছে বিভিন্ন জেলা থেকে উপজেলা পর্যায়ে। দেখা গেছে, স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা কলেজ অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করছেন তারই শিক্ষার্থীরা। এরপর ধীরে ধীরে রাজধানীতেও এর রেশ ছড়িয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, আদালতে নেওয়ার পরও পুলিশের সামনেই সাবেক একাধিক মন্ত্রী-এমপিসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ওপর হামলা ও ডিম নিক্ষেপের মতো ঘটনা ঘটেছে।

কারা জড়িত, আইনের ধারায় কী আছে 

প্রতিটি ঘটনার পরপরই দেখা গেছে, এসব হামলার ঘটনায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের প্রচেষ্টা জড়িত। অনেকে আবার আইনি প্রতিকার না পাওয়ার আশঙ্কায় এমনটি করছেন। জুলাই আন্দোলনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেও এমনটি ঘটাচ্ছেন অনেকে। তবে বাংলাদেশের আইন অনুসারে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বৈধতা দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই।

সংবিধানের অনুচ্ছেদ-৩১-এ উল্লেখ করা হয়েছে, ‘প্রত্যেক নাগরিকেরই রাষ্ট্রীয় আইনের মাধ্যমে সুরক্ষিত থাকার অধিকার রয়েছে। আইনবহির্ভূতভাবে কারো জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির প্রতি কোনও ক্ষতিকর ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।’

অনুচ্ছেদ ৩৫ (৩)-দণ্ডবিধান ও শাস্তির বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘ফৌজদারি অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তি আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালত বা ট্রাইব্যুনালে দ্রুত বা প্রকাশ্যে বিচার পাওয়ার অধিকারী হবেন।’ এর মাধ্যমে প্রতীয়মান হয়, কাউকে বিচারবহির্ভূত শাস্তি দেওয়ার সুযোগ নেই।

৫ আগস্টের পর আলোচিত যেসব ঘটনা

২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে মবের শিকার হন দেড় শতাধিক ব্যক্তি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ঘটনায় দেশব্যাপী দলমত নির্বিশেষে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এসব ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক ভবঘুরেকে পিটিয়ে হত্যা করেন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। একইদিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামিম আহমেদ মোল্লাকে পিটিয়ে হত্যা করেন একদল শিক্ষার্থী।

একই বছরের ২২ ডিসেম্বর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ৭৮ বছর বয়সী মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে মারধর করা হয়। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন একদল ব্যক্তি। এ ঘটনায় সমালোচনার মুখে অভিযুক্ত কয়েকজন জামায়াত সমর্থককে গ্রেফতার করে পুলিশ।

চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল ঢাকায় অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে রমনা থানা পুলিশের হাতে তুলে দেন যুবদলের কতিপয় কর্মী। এ সময় সিদ্দিকের পরা পোশাক ছিঁড়ে ফেলা হয়। পরবর্তী সময়ে তার নামে দেওয়া হয় হত্যা মামলা।

গত ২২ জুন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নুরুল হুদাকে মারধর করেন কতিপয় ব্যক্তি। এ সময় তার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেন হামলাকারীরা। তার নামেও মামলা দায়ের করা হয়।

এছাড়া ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় গত বছর সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। শুধু তাই নয়, পুলিশ হেফাজতেও হামলার শিকার হন একাধিক ভিআইপি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, ডা. দীপু মনি, ড. আবদুর রাজ্জাক, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, শাহজাহান খান, কামরুল ইসলাম, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু ও শাকিল আহমেদ-ফারজানা রূপা দম্পতিসহ অসংখ্য জাতীয় ব্যক্তিত্ব। এর বাইরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে স্কুল-কলেজের শিক্ষকরাও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন।

চলতি বছরের ৯ আগস্ট রংপুরের তারাগঞ্জ বাজারে চোর সন্দেহে রুপলাল দাস ও প্রদীপ লাল দাস নামে দুজনকে পিটিয়ে হত্যা করে জনতা। ১০ আগস্ট মাদারীপুরে চোর সন্দেহে চারজনকে গণিপিটুনিতে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে একজনের চোখ উপড়ে ফেলা হয়। ১১ আগস্ট গাজীপুরের টঙ্গিতে মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয় এক যুবককে।

দুটি ঘটনায় নতুন আলোচনা

গত এক বছরে বিভিন্ন স্থানে প্রতিপক্ষ বা সন্দেহজনক ব্যক্তির ওপর বিচারবহির্ভূত হামলা বা মারধরের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। তবে চলতি বছরের আগস্টে দুটি ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে ফুল নিয়ে গিয়েছিলেন রিকশাচালক আজিজুর রহমান। কিন্তু তাকে সেখানে ঢুকতে না দিয়ে মারধর করেন একদল যুবক। এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ধানমন্ডি থানায় নিয়ে যায়। পরদিন ১৬ আগস্ট তার নামে জুলাই আন্দোলনের সময় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়। এ নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে পর্যন্ত বিবৃতি দিতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ১৭ আগস্ট জামিন পান ভুক্তভোগী রিকশাচালক আজিজুর রহমান।

সাম্প্রতিক আরেকটি ঘটনায়ও ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। গত ২৯ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘মঞ্চ-৭১’ নামের একটি সংগঠনের গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বেশ কয়েকজন ব্যক্তি।

অনুষ্ঠান শুরুর পরপরই সেখানে গিয়ে হাজির হন ‘জুলাইযোদ্ধা’ নামে একটি সংগঠনের কয়েকজন সদস্য। আয়োজকরা কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেখানে গিয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করতে থাকেন। তারা অতিথিদের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনেন। এ সময় সেখানে থাকা সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনকে লাঞ্ছিত করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে এই দুইজনসহ ১৬ জনকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। পরবর্তী সময়ে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়। এ বিষয়টিও ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।

অতীতকে টেনে আনার প্রবণতা

সাম্প্রতিক সময়ে আরেকটি প্রবণতা বেশ জোরালেভাবে দেখা যাচ্ছে— কোনো একটি বিচারবহির্ভূত ঘটনা ঘটলেই পক্ষে-বিপক্ষে বাহাস শুরু হয়। অনেকে অতীতকে টেনে এনে বর্তমান ঘটনাকে জায়েজ করার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে বিগত সরকারের সময়ে কুষ্টিয়ার আদালত প্রাঙ্গণে দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বিএনপি নেতা জয়নুল আবেদীন ফারুক ও দৈনিক সংগ্রাম কার্যালয়ে সম্পাদক আবুল আসাদের ওপর হামলার ছবি সামনে আনা হচ্ছে। এ নিয়েও তর্কে-বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছেন কেউ কেউ।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের (মার্কসাবাদী) নির্বাহী ফোরামের সদস্য সীমা দত্ত সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘অন্যায় সবসময়ই অন্যায়। একটি ঘটনার বিপক্ষে দাঁড় করিয়ে আরেকটির পক্ষে সাফাই গাওয়ার সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘অন্যায়কারীর জন্য আইন আছে। তবে আইনে সুষ্ঠু প্রয়োগ দরকার। আমরা তো এজন্য আন্দোলন করিনি। সবাইকে সহনশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।’ তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা আরো কার্যকর দেখতে চান।

মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, ‘মব সন্ত্রাসের মাধ্যমে অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিকেও হেয়প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। সরকার কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এতে বুঝা যায়, দেশে আইনের শাসন সুদূরপরাহত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপরাধীর বিচারের পরিবর্তে ভুক্তভোগীকেই গ্রেফতার করছে। এ থেকে উত্তরণের জন্য সরকারকে কঠোর হতে হবে।’

বিশ্লেষক ও রাজনীতিবিদদের প্রতিক্রিয়া

মাঝখানে কিছু দিন মব সন্ত্রাস কিছুটা কমলেও সাম্প্রতিক সময়ে এটি আবারো ফিরে আসা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা। তারা মনে করেন, এমনটি চলতে থাকা দেশের জন্য অশনিসংকেত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা নিত্রা বলেন, ‘বিচারবহির্ভূতকাণ্ড দুটি কারণে হয়। একটি হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, আরেকটি হচ্ছে বিচার না হওয়ার কারণে। অস্বীকার করার সুযোগ নেই যে ৫ আগস্টের পর এ ধরনের কর্মকাণ্ড বেড়েছে।’

তিনি মনে করেন, আইনের যথাযথ প্রয়োগ, অপরাধীকে আইনের হাতে সোপর্দ ও সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমে এমন প্রবণতার প্রতিকার করা সম্ভব।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিবাদ করার অধিকার সবারই রয়েছে। তবে কোনও সংগঠিত শক্তি যদি আইন হাতে তুলে নেয়, তাতে এর কার্যকারিতা আর থাকে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। কারণ আমরা তো আইন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই লড়াই করেছি। তাই বিষয়টি সরকারকেই দেখতে হবে।’

আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘বিচারবহির্ভূতআচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। এক্ষেত্রে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকেই নিজেদের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।’

অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করার তাগিদ দেন তিনি।

এসি/আপ্র/০৫/০৯/২০২৫