ঢাকা ০১:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
সাবেক সিইসিকে লাঞ্ছনার ঘটনায় আসকের নিন্দা ও প্রতিবাদ

‘মব জাস্টিস’ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথকে আরো বিপন্ন করবে

  • আপডেট সময় : ০৬:৫৩:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

আইন ও সালিশ কেন্দ্র’র লোগো

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কে এম নূরুল হুদাকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছনার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। এই ঘটনাকে দেশের সংবিধান, মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের ওপর সরাসরি আঘাত হিসেবে অভিহিত করেছে সংস্থাটি।

সোমবার (২৩ জুন) আসকের সিনিয়র সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবিরের সই করা সংবাদ বিবৃতিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর সাথে সাথে ‘মব জাস্টিস’ ভবিষ্যতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথকে আরো বিপন্ন করবে বলে মত দিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাটি।

আসকের মতে, এই ধরনের ‘মব জাস্টিস’ বা গোষ্ঠীগত সহিংসতা যদি বিচারহীনতার সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে নিয়মিত ঘটে, তাহলে তা ভবিষ্যতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথকে আরো বিপন্ন করবে এবং আইনের শাসনের বদলে সহিংস সংস্কৃতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার ইঙ্গিত বহন করে। আসক আরো উল্লেখ করে, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও অতীতে এ ধরনের অনেক ঘটনায় দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

আসকের বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২২ জুন রাজধানীর উত্তরা এলাকায় কে এম নূরুল হুদার ওপর কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি বেআইনি সমবেত হয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে তাকে মারধর করে এবং পরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে ঘটনাটি স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। বিবৃতিতে আসক জানায়, কারও বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ থাকলেও তার নিষ্পত্তির একমাত্র পথ হলো সংবিধান ও প্রচলিত আইনের নির্ধারিত প্রক্রিয়া। বিচারব্যবস্থার বাইরে গিয়ে কাউকে অপমান বা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা কেবল ব্যক্তি অধিকার লঙ্ঘনই নয়, বরং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

৮৩ জন নিহত, দায় এড়াতে পারে না সরকার: আসক জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত উচ্ছৃঙ্খল জনতার হাতে অন্তত ৮৩ জন নিহত হয়েছেন। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মাঝে-মধ্যে সতর্কতা উচ্চারণ করা হলেও সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয়। বরং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরবতা এসব সহিংস গোষ্ঠীর অপকর্মে পরোক্ষ সহায়তা দিচ্ছে বলেই মনে করছে আসক।

বিবৃতিতে বলা হয়, কে এম নূরুল হুদা রাষ্ট্রের একজন নাগরিক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাকে এভাবে লাঞ্ছিত করা কেবল ব্যক্তিগত অপমান নয়, বরং এটি রাষ্ট্রীয় মর্যাদা এবং আইনের শাসনেরও লঙ্ঘন। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধ করতে না পারলে তা গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের ওপর গভীর আঘাত হানবে। রাষ্ট্রকে অবশ্যই কঠোর নজরদারি ও কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে এ ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধ করতে হবে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সাবেক সিইসিকে লাঞ্ছনার ঘটনায় আসকের নিন্দা ও প্রতিবাদ

‘মব জাস্টিস’ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথকে আরো বিপন্ন করবে

আপডেট সময় : ০৬:৫৩:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কে এম নূরুল হুদাকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছনার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। এই ঘটনাকে দেশের সংবিধান, মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের ওপর সরাসরি আঘাত হিসেবে অভিহিত করেছে সংস্থাটি।

সোমবার (২৩ জুন) আসকের সিনিয়র সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবিরের সই করা সংবাদ বিবৃতিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর সাথে সাথে ‘মব জাস্টিস’ ভবিষ্যতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথকে আরো বিপন্ন করবে বলে মত দিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাটি।

আসকের মতে, এই ধরনের ‘মব জাস্টিস’ বা গোষ্ঠীগত সহিংসতা যদি বিচারহীনতার সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে নিয়মিত ঘটে, তাহলে তা ভবিষ্যতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথকে আরো বিপন্ন করবে এবং আইনের শাসনের বদলে সহিংস সংস্কৃতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার ইঙ্গিত বহন করে। আসক আরো উল্লেখ করে, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও অতীতে এ ধরনের অনেক ঘটনায় দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

আসকের বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২২ জুন রাজধানীর উত্তরা এলাকায় কে এম নূরুল হুদার ওপর কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি বেআইনি সমবেত হয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে তাকে মারধর করে এবং পরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে ঘটনাটি স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। বিবৃতিতে আসক জানায়, কারও বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ থাকলেও তার নিষ্পত্তির একমাত্র পথ হলো সংবিধান ও প্রচলিত আইনের নির্ধারিত প্রক্রিয়া। বিচারব্যবস্থার বাইরে গিয়ে কাউকে অপমান বা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা কেবল ব্যক্তি অধিকার লঙ্ঘনই নয়, বরং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

৮৩ জন নিহত, দায় এড়াতে পারে না সরকার: আসক জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত উচ্ছৃঙ্খল জনতার হাতে অন্তত ৮৩ জন নিহত হয়েছেন। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মাঝে-মধ্যে সতর্কতা উচ্চারণ করা হলেও সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয়। বরং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরবতা এসব সহিংস গোষ্ঠীর অপকর্মে পরোক্ষ সহায়তা দিচ্ছে বলেই মনে করছে আসক।

বিবৃতিতে বলা হয়, কে এম নূরুল হুদা রাষ্ট্রের একজন নাগরিক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাকে এভাবে লাঞ্ছিত করা কেবল ব্যক্তিগত অপমান নয়, বরং এটি রাষ্ট্রীয় মর্যাদা এবং আইনের শাসনেরও লঙ্ঘন। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধ করতে না পারলে তা গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের ওপর গভীর আঘাত হানবে। রাষ্ট্রকে অবশ্যই কঠোর নজরদারি ও কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে এ ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধ করতে হবে।