ঢাকা ১২:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

মনোনয়ন বঞ্চিত জাহাঙ্গীর বললেন, মানুষ চাইলে নির্বাচন করব

  • আপডেট সময় : ০১:৫৯:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৩
  • ৯৪ বার পড়া হয়েছে

গাজীপুর প্রতিনিধি : আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেলেও জনগণ যদি চায় তাহলে তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে ভোটের লড়াইয়ে থাকবেন বলে জানিয়েছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।
গতকাল শনিবার আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভা যখন বসেছিল তখন গাজীপুরের ছয়দানা এলাকার বাসভবনেই দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে অবস্থান করছিলেন দলের মহানগর কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। দুপুরে মহানগর কমিটির সভাপতি আজমত উল্লাহ খানকে আবার নৌকার কা-ারি হিসেবে বেছে নেওয়ার খবর চাউর হতেই ভিড় কমতে থাকে জাহাঙ্গীরের বাসভবনে। দুপুরে জাহাঙ্গীর আলমের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, তেমন কোনো নেতা-কর্মীর ভিড় নেই। অন্য সময়ের মত দোতলায় ওয়েটিং রুমে কয়েকজন সমর্থক তার সঙ্গে কথা বলার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। সবাইকে নিশ্চুপ ও মনমরা হয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে।
ভিতরে গিয়ে মনোনয়ন না পাওয়ার ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিমর্ষ জাহাঙ্গীর বলেন, “আমি যেহেতু রাজনীতি করি, তাই জনগণ যা চায়, তা-ই করব। এলাকার নাগরিক ও ভোটার যদি চায়, তবে আমি তাদের নিরাশ করব না। তারা চাইলে আমি নির্বাচন করব।“
তিনি বলেন, “আমি সারাজীবন রাজনীতি করেছি। তাদের (ভোটার) আমি ভোট নিয়েছি, তাদের পরিকল্পিত একটি শহর করে দেওয়ার জন্য। তাই তারা চাইলে আমি জীবন দিতেও প্রস্তুত। আমার নাগরিকদের আমি কষ্ট দেব না। এতে আমি ফাঁসিতেও যেতে পারি, জেল হতে পারে, মৃত্যুবরণও করতে পারি।
“আমার নাগরিকরা যেহেতু আমাকে ভালোবেসেছে, তাদের চোখের পানি আমি দেখেছি। সে হিসেবে আমি তাদের নিরাশ করব না।” মহানগরীর ভোগড়া এলাকা থেকে ‘নেতার’ সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন দলের কর্মী মোহাম্মদ রাশেদ। জাহাঙ্গীর মনোনয়ন না পাওয়ায় তার মুখ ছিল ভার। রাশেদ বলেন, “আমরা শতভাগ নিশ্চিত ছিলাম, এবারও মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন জাহাঙ্গীর ভাই-ই পাবেন। দল অন্য একজনকে মনোনয়ন দিয়েছে। আমরা হতাশ। গাজীপুরের তৃণমূলের নাগরিকরা এমনটা আশা করেনি।“
গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে নৌকার কা-ারি হতে আওয়ামী লীগের ১৭ নেতা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনা থাকাদের মধ্যে আজমত উল্লাহ খান ও জাহাঙ্গীর আলম ছিলেন অন্যতম। দুজনই মনোনয়নের ব্যাপারে ‘শতভাগ’ আশাবাদী ব্যক্ত করেছিলেন। ফলে ঢাকার পাশের এই বৃহৎ সিটি করপোরেশনে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই তুমুল আলোচনা ও উত্তেজনা ছিল দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে। তার মধ্যে দল টঙ্গী পৌরসভার ১৮ বছরের চেয়ারম্যান ও মেয়রের দায়িত্ব পালন করা আজমত উল্লাহ খানকে বেছে নিয়েছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের এটি তৃতীয় নির্বাচন। ২০১৩ সালের প্রথম নির্বাচনে টঙ্গী পৌরসভার তিনবারের চেয়ারম্যান আজমত উল্লাহ খান বিএনপির আব্দুল মান্নানের কাছে পরাজিত হন।
সেবার মনোনয়ন চেয়েও না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন তরুণ নেতা জাহাঙ্গীর। তবে ভোটের আগে হঠাৎ তিনি অদৃশ্য হয়ে যান। তবে তার পক্ষের নেতা-কর্মীদের আজমত উল্লাহর পক্ষে নামতে দেখা যায়নি। ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ জাহাঙ্গীরকেই নৌকার কা-ারি হিসেবে বেছে নেয়। তিনি বিএনপির হাসান উদ্দিন সরকারকে হারিয়ে মেয়র পদে বসেন। কিন্তু তিনি মেয়াদ শেষের আগেই দল ও পদ থেকে বহিষ্কার হন। মনোনয়ন বঞ্চিত জাহাঙ্গীর আলম যদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের লড়াইয়ে নামেন তাহলে নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লাহ খানের তিনিই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় ভোটাররা। বিএনপি এরই মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দিয়েছে। জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ১১ লাখ ৮৪ হাজার ৩৬৩ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৭ এপ্রিল। মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৮ মে। আগামী ২৫ মে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মনোনয়ন বঞ্চিত জাহাঙ্গীর বললেন, মানুষ চাইলে নির্বাচন করব

আপডেট সময় : ০১:৫৯:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৩

গাজীপুর প্রতিনিধি : আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেলেও জনগণ যদি চায় তাহলে তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে ভোটের লড়াইয়ে থাকবেন বলে জানিয়েছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।
গতকাল শনিবার আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভা যখন বসেছিল তখন গাজীপুরের ছয়দানা এলাকার বাসভবনেই দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে অবস্থান করছিলেন দলের মহানগর কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। দুপুরে মহানগর কমিটির সভাপতি আজমত উল্লাহ খানকে আবার নৌকার কা-ারি হিসেবে বেছে নেওয়ার খবর চাউর হতেই ভিড় কমতে থাকে জাহাঙ্গীরের বাসভবনে। দুপুরে জাহাঙ্গীর আলমের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, তেমন কোনো নেতা-কর্মীর ভিড় নেই। অন্য সময়ের মত দোতলায় ওয়েটিং রুমে কয়েকজন সমর্থক তার সঙ্গে কথা বলার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। সবাইকে নিশ্চুপ ও মনমরা হয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে।
ভিতরে গিয়ে মনোনয়ন না পাওয়ার ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিমর্ষ জাহাঙ্গীর বলেন, “আমি যেহেতু রাজনীতি করি, তাই জনগণ যা চায়, তা-ই করব। এলাকার নাগরিক ও ভোটার যদি চায়, তবে আমি তাদের নিরাশ করব না। তারা চাইলে আমি নির্বাচন করব।“
তিনি বলেন, “আমি সারাজীবন রাজনীতি করেছি। তাদের (ভোটার) আমি ভোট নিয়েছি, তাদের পরিকল্পিত একটি শহর করে দেওয়ার জন্য। তাই তারা চাইলে আমি জীবন দিতেও প্রস্তুত। আমার নাগরিকদের আমি কষ্ট দেব না। এতে আমি ফাঁসিতেও যেতে পারি, জেল হতে পারে, মৃত্যুবরণও করতে পারি।
“আমার নাগরিকরা যেহেতু আমাকে ভালোবেসেছে, তাদের চোখের পানি আমি দেখেছি। সে হিসেবে আমি তাদের নিরাশ করব না।” মহানগরীর ভোগড়া এলাকা থেকে ‘নেতার’ সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন দলের কর্মী মোহাম্মদ রাশেদ। জাহাঙ্গীর মনোনয়ন না পাওয়ায় তার মুখ ছিল ভার। রাশেদ বলেন, “আমরা শতভাগ নিশ্চিত ছিলাম, এবারও মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন জাহাঙ্গীর ভাই-ই পাবেন। দল অন্য একজনকে মনোনয়ন দিয়েছে। আমরা হতাশ। গাজীপুরের তৃণমূলের নাগরিকরা এমনটা আশা করেনি।“
গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে নৌকার কা-ারি হতে আওয়ামী লীগের ১৭ নেতা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনা থাকাদের মধ্যে আজমত উল্লাহ খান ও জাহাঙ্গীর আলম ছিলেন অন্যতম। দুজনই মনোনয়নের ব্যাপারে ‘শতভাগ’ আশাবাদী ব্যক্ত করেছিলেন। ফলে ঢাকার পাশের এই বৃহৎ সিটি করপোরেশনে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই তুমুল আলোচনা ও উত্তেজনা ছিল দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে। তার মধ্যে দল টঙ্গী পৌরসভার ১৮ বছরের চেয়ারম্যান ও মেয়রের দায়িত্ব পালন করা আজমত উল্লাহ খানকে বেছে নিয়েছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের এটি তৃতীয় নির্বাচন। ২০১৩ সালের প্রথম নির্বাচনে টঙ্গী পৌরসভার তিনবারের চেয়ারম্যান আজমত উল্লাহ খান বিএনপির আব্দুল মান্নানের কাছে পরাজিত হন।
সেবার মনোনয়ন চেয়েও না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন তরুণ নেতা জাহাঙ্গীর। তবে ভোটের আগে হঠাৎ তিনি অদৃশ্য হয়ে যান। তবে তার পক্ষের নেতা-কর্মীদের আজমত উল্লাহর পক্ষে নামতে দেখা যায়নি। ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ জাহাঙ্গীরকেই নৌকার কা-ারি হিসেবে বেছে নেয়। তিনি বিএনপির হাসান উদ্দিন সরকারকে হারিয়ে মেয়র পদে বসেন। কিন্তু তিনি মেয়াদ শেষের আগেই দল ও পদ থেকে বহিষ্কার হন। মনোনয়ন বঞ্চিত জাহাঙ্গীর আলম যদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের লড়াইয়ে নামেন তাহলে নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লাহ খানের তিনিই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় ভোটাররা। বিএনপি এরই মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দিয়েছে। জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ১১ লাখ ৮৪ হাজার ৩৬৩ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৭ এপ্রিল। মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৮ মে। আগামী ২৫ মে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।